ব্যানার-পোস্টারে সয়লাব: পরিবেশ বিপর্যয় পলিব্যাগে মোড়া লাখ লাখ পোস্টার এখন গলার কাঁটা

Posted on January 13, 2024

আতিকুর রহমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: যে দিকে চোখ যায় সেদিকেই ভোটের পোস্টার আর ব্যানার। শহর থেকে গ্রাম, এমনকি পাড়া মহল্লায় মাথার উপর ঝুলছে সদ্য শেষ হওয়া দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীদের পোষ্টার। পোস্টারে পোস্টারে সয়লাব বাজার ঘাট। কিন্তু পলিব্যাগে মোড়া এসব পোস্টার নিয়ে বিপাকে পড়েছে মানুষ। দড়ি ছিড়ে হরহামেশে এ সব পোস্টার মাথার উপর পড়ছে। আটকে যাচ্ছে ড্রেন ও নর্দমা। মানুষের পায়ে পায়ে জড়িয়ে যাচ্ছে পাড়া মহল্লায়। এক কথায় ভোটের এই পোস্টার এখন মানুষের গলার কাঁটা হিসেবে দেখা দিয়েছে। অধিকাংশই পোস্টার পলিথিন দিয়ে লেমোনেটিং করার কারণে পানিতে বা শিশিরে নষ্ট হচ্ছে না। এতে যেমন নষ্ট হয়ে শহরের সৌন্দর্য তেমন ক্ষতি মুখে পরিবেশ ও প্রকৃতি। দ্রুত এসব ব্যানার পোস্টার অপসারণ করে পুড়িয়ে ফেলার পরামর্শ পরিবেশবিদদের।

ঝিনাইদহ শহর ঘুরে দেখা যায় শহরের কেন্দ্রস্থল পায়রা চত্বর, কেপি বসু সড়ক, হামদহ, আরাপপুর, বাজারপাড়া ও চুয়াডাঙ্গা বাসষ্টান্ডের চারপাশে এখনও ঝুলছে শত শত পোস্টার। রশিতে টাঙানো অধিকাংশ পোস্টারগুলো পলিথিন দিয়ে লেমোনেটিং করা। বাতাসে ছিড়তে না বা শিশিরেও ভিজে নষ্ট হচ্ছে না। বকে সপ্তাগ আগে ভোট শেষ হলেও এখনও অপসারণ করা হয়নি পোস্টারগুলো। কেপি বসু সড়কে দেখা গেছে কাপড়ের দোকানগুলোর একেবারেই সামনে ঝুলছে হাজার হাজার পোস্টার। শুধু জেলা শহরই এ দৃশ্য নয়, জেলার ৪ টি সংসদীয় আসনের ৬ উপজেলায় ২৬ জন প্রার্থীর অন্তত ১০ লাখ পোস্টার বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। অথচ নির্বাচন শেষ হওয়ার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে স্ব স্ব প্রার্থী পোস্টার অপসারণ করার নিয়ম রয়েছে।

শহরের ব্যবসায়ী শাহিন বলেন, নির্বাচন শেষ হয়েছে ৭ জানুয়ারি। কিন্তু এখনও ব্যানার-পোস্টার অপসারণ করা হয়নি। শহর জুড়ে হাজার হাজার পোস্টার ঝুলানো রয়েছে। পৌর কর্তৃপক্ষ বা কোন প্রার্থী তাদের পোস্টার অপসারণ করেনি। এতে শহরের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে।

নজরুল ইসলাম নামে এক দোকানদার বলেন, যেভাবে এবার পোস্টার পলিথিন দিয়ে লেমোনেটিং করা হয়েছে তাতে সহজে সেগুলো নষ্ট হচ্ছে না। দ্রুত এসব অপসারণ করে পুড়িয়ে ফেলা উচিত বলে তিনি মনে করেন।

ঝিনাইদহ জীব বৈচিত্র্য ও পরিবেশ সংরক্ষণ কমিটির নেতা মাসুদ আহম্মদ সনজু বলেন, ব্যানার পোস্টারগুলো বেশির ভাগই লেমোনেটিং করা। এগুলো পরিবেশের জন্য চরম ক্ষতিকর। এই ব্যানার পোস্টার নদীতে গেলে নদী ভরাট হবে। আর ড্রেনে পড়লে পানি প্রবাহ বন্ধ হবে। তাই দ্রæত এসব অপসারণ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদী হিজল বলেন, আমরা ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে সকল ব্যানার পোস্টার অপসারণ করে ডাম্পিং স্টেশনে নিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে ফেলব। কারণ এগুলো গ্রীণ ঝিনাইদহ গড়ার অন্যতম অন্তরায়।

ঝিনাইদহ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ মুন্তাছির রহমান বলেন, নির্বাচন শেষ হওয়ার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে স্ব স্ব প্রার্থী তাদের ব্যানার বা পোস্টার সড়িয়ে ফেলবেন এমন একটা নিয়ম রয়েছে। কিন্তু আমরা খেয়াল করছি নির্বাচন শেষ হলেও ব্যানার পোস্টার অপসারণ করা হয়নি। আর যেগুলো লেমোনেটিং করা সেগুলো পরিবেশের জন্যও ক্ষতিকর। তাই আমরা ঝিনাইদহের ৬ টি পৌরসভায় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি দ্রæত এসব ব্যানার পোস্টার অপসারণ করতে।