যুদ্ধ নয়, আলোচনার মাধ্যমেই সব সমস্যার সমাধান: রাষ্ট্রপতি

Posted on December 10, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাষ্ট্রপতি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, যুদ্ধ নয়, আলোচনার মাধ্যমেই সব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব । সব ধরনের সংঘাতের স্থায়ী সমাধান নিশ্চিতকরণ ও নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়াতে আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।

রোববার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ডিসেম্বর আমাদের বিজয়ের মাস। বহু আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আমরা এই মাসের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা পেয়েছিলাম। এজন্য এই মাসটি আমাদের কাছে অত্যন্ত মূল্যবান। এই মাসে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের দোসরদের দ্বারা সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছিল।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ ২০০৯ সাল থেকে মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, দরিদ্র হ্রাস, শিক্ষা ও চিকিৎসার সুযোগ বিস্তার, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস ও নারীর ক্ষমতায়নসহ আর্থসামাজিক নানান সূচকে তাৎপর্যপূর্ণ সফলতা অর্জন করেছে। যেখানে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার মানবতা লঙ্ঘিত ও লুণ্ঠিত হয়েছিল। তিনিই মানবাধিকারের প্রতি দৃঢ় আস্থা ও অঙ্গীকার থেকে ২০০৯ সালে মানবাধিকার কমিশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেছিলেন, ‘আমি ভুক্তভোগী, কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ যেন ভুক্তভোগী না হয়।’ এতবড় মহান ব্যক্তিকে আমি শুভেচ্ছা জানাই।

মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার পাশাপাশি সংকট মোকাবিলায় দূরদর্শী নেতৃত্ব ও মানবিকতার জন্য বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে প্রশংসিত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, করোনা মহামারিতে বাংলাদেশ মানবাধিকার সুরক্ষায় বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে পৃথিবীতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। শুধু জাতীয় পর্যায়ে নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও বাংলাদেশ মানবাধিকার সুরক্ষায় তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে মানবতার চরম বিপর্যয় ঘটেছে। নির্বিচারে নারী-শিশু হত্যা ও ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে। এসব ঘটনায় আমি বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে অত্যন্ত দুঃখ ও চরম উদ্বেগ প্রকাশ করছি। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনে ইসরায়েল বাহিনীর বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানাই।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন আরও বলেন, প্রশ্ন হলো যারা মানবাধিকারের ফেরিওয়ালা, যারা মানবাধিকার শিখিয়ে বেরায় তারা কী করল? গাজায় প্রতিদিন পাঁচ শ’র অধিক ছোটো ছোটো শিশু ও নির্বোধ মানুষকে অকাতরে হত্যা করছে। আত্মসমর্পণ করার পর হত্যা করা জেনেভা কনভেনশন দ্বারা নিষিদ্ধ। দুজন ফিলিস্তিনি আত্মসমর্পণ করার পরও তাদের বর্বরোচিতভাবে গুলি করে হত্যা করা হলো। সেই প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘে যখন যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব এলো, তখন মানবাধিকারের ফেরিওয়ালারা সেখানে ভেটো দিলো।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, আজকে বিশ্ব বিবেক কোথায়? চোখের সামনে গাজায় নির্বিচারে কত মানুষ, মুসলমানদের হত্যা করা হচ্ছে। অথচ সারাবিশ্ব নীরব ভূমিকা পালন করছে। এই বর্বর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে সারাবিশ্বকে একজোট হয়ে এগিয়ে আসতে হবে।