সিরাজগঞ্জের তিন আসনে এনসিপির প্রার্থিতা প্রত্যাহার

Posted on December 30, 2025

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: ১০ দলীয় জোটের সমঝোতার কারণে সিরাজগঞ্জ জেলার চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে তিনটিতে এনসিপির প্রার্থীরা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। এসব আসনে জোটের পক্ষে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তবে একটি আসনে এনসিপির প্রার্থী জোটসমর্থন নিয়ে নির্বাচনে থাকছেন।

সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি ও চৌহালী) আসনে এনসিপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছিলেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর মনজুর কাদের। ১০ ডিসেম্বর ঘোষিত এনসিপির ১২৫ জনের প্রার্থী তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং ২২ ডিসেম্বর তার পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়। তবে জোটগত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই আসনটি জামায়াতে ইসলামীর জন্য ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে এ আসনে জেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও বেলকুচি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আলী আলম নির্বাচন করবেন।

একই সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ) আসনে এনসিপির প্রার্থী দিলশানা পারুল এবং সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া) আসনে এনসিপির প্রার্থী দ্যুতি অরণ্য চৌধুরী প্রীতিও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। এই দুই আসনেও ১০ দলীয় জোটের পক্ষে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

তবে সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসনে ১০ দলীয় জোটের সমর্থনে এনসিপির প্রার্থী এস এম সাইফ মোস্তাফিজ নির্বাচনে থাকছেন। ঢাকায় ১০ দলীয় সমন্বয় কমিটির এক সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলা পর্যায়ে জোটভুক্ত দলগুলো সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে।

এদিকে, ৮ ডিসেম্বর ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে বিএনপির জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য পদ ও দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন সাবেক সংসদ সদস্য মনজুর কাদের। তিনি ১৯৮৬ সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণের পর জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়া) আসন থেকে ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ওই সময় তিনি পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে জাতীয় পার্টি ত্যাগ করে বিএনপিতে যোগ দিয়ে তিনি পাবনা-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে তিনি সিরাজগঞ্জ-৬ (চৌহালী ও শাহজাদপুর) আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নে সংসদ সদস্য হন। সীমানা পুনর্নির্ধারণের পর সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসনে ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে অংশ নিলেও তিনি অল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন।

এবার সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন দলটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগ) আমিরুল ইসলাম খান আলিম। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ মোট আটজন প্রার্থী এ আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে প্রথমদিকে এনসিপির প্রার্থী হিসেবে দলটির যুগ্ম সদস্যসচিব মাহিন সরকার প্রচারণা চালালেও পরে তিনি মনজুর কাদেরকে সমর্থন দেন। সিরাজগঞ্জ জেলায় এনসিপির কোনো সাংগঠনিক কমিটি নেই। জোটগত সমঝোতা অনুযায়ী তিনটি আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী দেওয়ার বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।