মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেলেন আরও ৬ বীরাঙ্গনা

Posted on November 19, 2023

আল আমিন, শেরপুর জেলা প্রতিনিধি: শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সোহাগপুর বিধবাপল্লীর আরো ৬ বিধবা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে (বীরাঙ্গনা) স্বীকৃতি পেয়েছেন।

স্বীকৃতি প্রাপ্তরা হচ্ছেন- সোহাগপুরের ঝর্ণা দিও, সমিলা রাকসাম, মালতি রাকসাম, মোছাঃ হাজেরা, মোছাঃ লাকজান ও কেরেঙ্গা পাড়ার মোছাঃ ছাহেরা খাতুন।

জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের ৮৬তম সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক এ ৬ জনকে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। গত ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত ভিন্ন ভিন্ন গেজেটে এ স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। ইতোমধ্যে তাদের নামে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। এ নিয়ে ওই বিধবাপল্লীর ২০ জন নারী মুক্তিযোদ্ধা (বীরাঙ্গনা) স্বীকৃতি পেলেন।

এর আগে ১৪ জন নারী মুক্তিযুদ্ধার স্বীকৃতি পেয়েছিলেন।মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাওয়া ২০ জনের মধ্যে ৭ জন ইতোমধ্যেই মৃত্যুবরণ করেছেন।

উল্লেখ্য, স্থানীয় রাজাকারদের সহযোগিতায় পাক হানাদার বাহিনী নরপিশাচরা ১৯৭১ সালের ২৫ জুলাই সকালে নালিতাবাড়ী উপজেলার কাকরকান্দি ইউনিয়নের সোহাগপুর গ্রামে নৃশংস গণহত্যা চালায়। সেদিন তাদের দুইঘণ্টার তাণ্ডবে ১৮৭ জন পুরুষকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে। খুঁজে খুঁজে গ্রামের সকল পুরুষদেরকে হত্যা করা হয়। সেই থেকে গ্রামটি বিধবাপল্লী নামে পরিচিত লাভ করে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের জঘন্যতম এবং নৃশংসতম ওই গণহত্যায় গ্রামের ৬২ জন মহিলা বিধবা হন এবং তাঁদের অনেককেই শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়।

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়েও ওই গ্রামের ৫৬ জন বিধবা বেঁচেছিলেন। বর্তমানে তাঁদের মধ্যে বেঁচে আছেন ২২ জন বিধবা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যেই ২৯ জন বিধবার প্রত্যেকের জন্য ১১ লাখ টাকা করে মোট ৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যায়ে ২৯ টি পাকা বাড়ি করে দিয়েছেন। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় সোহাগপুরে “বীর কন্যা প্রাথমিক বিদ্যালয়” প্রতিষ্ঠা করা হয়।

শহীদদের স্মরণে গ্রামটিতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে “শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কলেজ”। বিধবাপল্লীর রাস্তাটিও পাকা করা হয়েছে। শহীদদের স্মরণে স্মৃতিসৌধ “সৌরজায়া” স্থাপন করা হয়েছে। জেলার পুলিশ সদস্যরা তাঁদের বেতনের টাকায় বিধবাদের কিনে দিয়েছেন জমি।