নির্বাচনের প্রতিশ্রুতির ব্যত্যয় ঘটলে তার দায় ড. ইউনূসকেই নিতে হবে: মির্জা ফখরুল

Posted on October 29, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের যে প্রতিশ্রুতি প্রধান উপদেষ্টা জনগনকে দিয়েছে তার ব্যত্যয় ঘটলে এর দায়ভার ড. ইউনূসকেই নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার (২৯ অক্টােবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে আদর্শ প্রকাশনী আয়োজিত বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ড. ইউনূস, আপনি জনগণের সামনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, যেটুকু সংস্কার দরকার সেগুলো করে নির্বাচন দেবেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে যে সংসদ হবে সে সংসদ সেসব সংস্কার করবে। এর বাইরে গেলে, ব্যত্যয় হলে তার দায় দায়িত্ব বহন করতে হবে ড. ইউনূসের সরকারকে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এত বড় অভ্যুত্থানকে আমরা জনগণের কল্যাণে কাজে লাগাতে পারছি না। যতই দিন যাচ্ছে আমরা ততই বিভক্ত হয়ে পড়ছি। কারা এই বিভক্তি তৈরি করছেন, সে বিষয়টি আমাদের উপলব্ধি করতে হবে। অথচ এই সময়টি হলো ঐক্যের সময়।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা দীর্ঘকাল ধরে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন করেছি, এ দেশের মানুষও করেছে। একটা সময় প্রচার করা হলো যে, বিএনপি সংস্কারবিরোধী। অথচ সংস্কারের মাধ্যমেই বিএনপির জন্ম হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের পরে যে একদলীয় শাসন কায়েম হয়েছিল, ৭৫ পরবর্তীতে সেই চিত্রের পরিবর্তন নিয়ে আসে বিএনপি।

জুলাই সনদ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সংস্কার প্রক্রিয়ার যেসব বিষয়ে আমরা ঐক্যমত ছিলাম না, সেসব বিষয় আমরা নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছিলাম। সেই নোট অফ ডিসেন্টগুলো লিপিবদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ঐক্যমত কমিশন। অথচ অবাক হয়ে দেখতে পেলাম গতকাল কমিশন যে ড্রাফট প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছে, তাতে সেসব নেই। এটা জনগণ এবং রাজনৈতিক দলের সঙ্গে একটি প্রতারণা। এগুলো দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন।

বিএনপির এই নেতা বলেন, সমস্ত সংকটের মূলে রয়েছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের যে পার্লামেন্ট তৈরি হবে, সেই পার্লামেন্টের এসব সংস্কার সংবিধানে নিয়ে আসবে। সেই কারণেই আমরা পাঁচ আগস্ট এর পর নির্বাচন চেয়েছিলাম। যদিও অনেকে বলেছে, বিএনপি ক্ষমতা চায় বলে নির্বাচন চাইছে। অথচ এই নির্বাচন যত বিলম্ব হচ্ছে তত বেশি ফ্যাসিবাদী শক্তি সম্মিলিত হচ্ছে।

প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনি জনগণের নিকট প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন তা সম্পাদন করে একটি নির্বাচন উপহার দেবেন। নির্বাচনের মাধ্যমে যে পার্লামেন্ট ক্ষমতায় আসবে সে পার্লামেন্ট দেশের সংকটগুলো সমাধান করবে। এর যদি কোনো ব্যত্যয় ঘটে, তার দায় কিন্তু আপনাকেই বহন করতে হবে।

অনুষ্ঠানে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, ‘চর্চা ডটকম’র সম্পাদক সোহরাব হাসানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও বুদ্ধিজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।