![]() |

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ হোসাইন খুনের ঘটনায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত ছাত্রী বার্জিস শাবনাম বর্ষা জানিয়েছেন, বর্ষা ও তার বয়ফ্রেন্ড মাহির রহমানের প্রেমের জেরে খুন হয়েছেন জুবায়েদ হোসাইন। তবে এ খুনের বিষয়ে ছাত্রী বর্ষা কিছু জানতেন না বলে জানিয়েছে পুলিশকে।
সোমবার (২০ অক্টোবর) সকালে বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বর্ষাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এসব তথ্য জানান।
এ সময় ওসি আরও জানান, ছাত্রী বর্ষার সঙ্গে মাহির রহমানের ৯ বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মাহির রহমান বোরহান উদ্দীন কলেজে পড়ে আর বর্ষা পড়তো ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজে। ছোট থেকে পাশাপাশি বাড়িতে তাদের বেড়ে উঠা। তাদের মধ্যে ছিল দীর্ঘ প্রেমের সম্পর্ক। চতুর্থ শ্রেণি থেকে একে অপরকে পছন্দ করতো। কিন্তু সম্প্রতি তাদের সম্পর্কে টানা পোড়ান ঘটে। কিছুদিন আগে তাদের সম্পর্কের ভাঙন হয় এবং বর্ষা তার বয়ফ্রেন্ড মাহির রহমানকে জানায় তিনি জুবায়েদকে পছন্দ করে। এটা জানার পর রাগে ক্ষোভে মাহির রহমান ও তার বন্ধুকে নিয়ে জুবায়েদকে হত্যা করেছে।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম আরও জানান, সম্প্রতি বর্ষা মাহিরকে জানায় যে সে জুবায়েদকে পছন্দ করে। কিন্তু জুবায়েদকে সে তার পছন্দের কথা এখনও জানায়নি। জুবায়েদের সঙ্গে বর্ষার কোন প্রেমের সম্পর্ক নেই। তাদের মধ্যে এ ধরনের কোন মেসেজও পাওয়া যায়নি। কিন্তু বর্ষার কথার উপর ভিত্তি করে রাগে ক্ষোভে বর্ষার বয়ফ্রেন্ড তার বন্ধুকে সঙ্গে করে জুবায়েদকে খুন করে।
এ সময় জুবায়েদের বন্ধুর সঙ্গে ছাত্রী বর্ষার পরিচয় কিভাবে সে বিষয়ে ওসি জানান, জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে যে, বর্ষার সঙ্গে জুবায়েদের বন্ধু সৈকতের পরিচয় হয় ফেসবুকে। এছাড়া অন্য কোন মাধ্যমে তাদের কথা হতো না বা অন্য কোন সম্পর্কও ছিল না। যেহেতু সৈকত জোবায়েদের বন্ধু ছিলো এজন্য জোবায়েদের মৃত্যুর খবর দিয়ে সৈকতকে মেসেজ করে বর্ষা।
ওসি আরও জানান, বর্ষার মধ্যে কোন হতাশা বা কান্নার কোন ছাপ পাওয়া যায়নি। এছাড়া, জিজ্ঞাসাবাদে কোন নার্ভাসনেসও পাওয়া যায়নি। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বর্ষাকে চিন্তামুক্ত দেখা গেছে। এ বিষয়ে আমরা আরও তদন্ত করছি। পরবর্তীতে আরও বিস্তারিত জানানো হবে।
প্রসঙ্গত, জুবায়েদ হোসাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯- ২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। একই সাথে তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্র কল্যাণের সভাপতি ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য ছিলেন। গত এক বছর ধরে জুবায়েদ হোসাইন পুরান ঢাকার আরমানীটোলায় ১৫, নুরবক্স লেনে রৌশান ভিলা নামের বাসায় ওই ছাত্রীকে ফিজিক্স ক্যামেস্ট্রী ও বায়োলজি পড়াতেন। ওই ছাত্রী বর্ষার বাবার নাম গিয়াসউদ্দিন। রোববার (১৯ অক্টোবর) আনুমানিক বিকাল ৪ টার ৪৫ মিনিটের দিকে ছাত্রীর বাসার তিন তলায় তিনি খুন হন। বাসার নিচ তলার সিড়ি থেকে তিন তলা পর্যন্ত সিড়িতে রক্ত পড়েছিলো। তিন তলার সিড়িতে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
পরবর্তীতে আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে বংশাল থানার সামনে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি তারা তাতীবাজার মোড় অবরোধ করে রাখে। রোববার রাত ১১ টার দিকে ওই ছাত্রী বর্ষাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ ওই ছাত্রীকে হেফাজতে নেয়। এদিন রাত ১১টার সময় আরমানিটোলার নূরবক্স রোড়ের নিজ বাসা থেকে তাকে পুলিশ প্রটোকলে পুলিশের গাড়িতে তোলা হয়। এর আগে রাত ১০ টা ৫০ এর সময় খুনের শিকার জোবাইদ হোসাইনের লাশ ময়না তদন্তের জন্য মিডফোর্ড হাসপাতালে নেয় পুলিশ।
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | কর্পোরেট সংবাদ সম্পাদক - মোঃ মিজানুর রহমান । উপদেষ্টা সম্পাদক- জেসমিন আক্তার, এফসিএস ই-মেইলঃ corporatesangbad@gmail.com । ফোনঃ ০২২২-৩৩৫৪১২৫ । মোবাইলঃ ০১৭১১০৭৬৮১৫ অফিসঃ ৫৫/বি, নোয়াখালী টাওয়ার, ১১ তলা, সুইট ১১-এফ, পুরানা পল্টন, ঢাকা ১০০০ |
| ‘প্রেমঘটিত কারণে’ জোবায়েদ খুন, জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য https://corporatesangbad.com/524424/ |