![]() |

নিজস্ব প্রতিবেদক : আসন্ন নির্বাচন সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য করাকে জীবনের শেষ সুযোগ হিসেবে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দীন।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সম্মেলনকক্ষে নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভার সূচনা বক্তব্য তিনি একথা বলেন।
সিইসি বলেন, আমার বয়স ৭৩ বছর। আমার আর চাওয়ার কিছু নেই। আমার জীবনে এটা শেষ সুযোগ হিসেবে নিয়েছি। শেষ সুযোগ দেশের জন্য কিছু করার। একটা সুন্দর, সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেওয়াই আমার লক্ষ্য।
নাসির উদ্দিন বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে আমাদের সামনে নিত্য-নতুন চ্যালেঞ্জ হাজির হচ্ছে। একদিকে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে, অন্যদিকে একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে একটা বিশেষ ধরণের সরকারের অধীনে আমাদেরকে নির্বাচনে যেতে হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, দেশের এই ক্রন্তিলগ্নে এই নির্বাচনকে আমার জীবনের একটা শেষ সুযোগ হিসেবে নিয়েছি। দেশের জন্য কিছু একটা করতে চাই। আমরা আর চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ইসির একার পক্ষে জাতীকে একটি সুন্দর, গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ নির্বাচন উপহার দেওয়া সম্ভব নয়। এ জন্য সকলের সহযোগিতা লাগেবে। সর্বস্তরের জনগণ, গণমাধ্যম ও রাজনীতিবিদদের সহযোগীতা লাগবে। আমরা সবাইকে সঙ্গে নিয়েই অগ্রসর হতে চাই।
নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও নারী নেত্রীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আজকে আমরা শুনব যারা নির্বাচন নিয়ে সরাসরি কাজ করেছেন তাদের বক্তব্য। আপনারা জানেন নির্বাচনে কোথায় কোথায় কী কী সমস্যা হয়, কোথায় কোথায় কী কী গ্যাপ রয়েছে। আপনাদের সুচিন্তিত মতামতগুলো বিবেচনা করে আমরা সামনে এগিয়ে যেতে চাই। আমরা এবার প্রবাসীদের ভোটের আওতায় আনতে উদ্যোগ নিয়েছি। এছাড়া, সরকারি চাকুরিজীবী ও হাজতিদের জন্যও পোস্টাল ব্যালটে ভোটগ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছি। এজন্য নির্বাচনের কাজে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলে ভোট দেওয়ার আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময়। নারী, পুরুষ ভোটারের পার্থক্য ৩০ লাখ ছিল। সেটা কমিয়ে এনেছি। পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা করেছি। একটা মডেল বের করেছি। পারবো কিনা জানি না, তবে আমরা চেষ্টা করব। আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালট ও একটা হাইব্রিড পদ্ধতি বের করেছি। এতে প্রবাসী, সরকারি চাকরিজীবি, কয়েদিরা ভোট দিতে পারবেন।
তিনি বলেন, সুশীল সমাজের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা তো সভা সেমিনারে কথা বলেন। কোথায় কোথায় গ্যাপ থাকে, যেখান দিয়ে নির্বাচনে কারচুপি হয়— সেটাও আমাদের জানাবেন, যেন ব্যবস্থা নিতে পারি। কীভাবে কীভাবে জালিয়াতি করা যায়, সে অভিজ্ঞতা আপনাদের আছে। ম্যানিপুলেশন ঠেকানোর জন্য কোথায় কোথায় হাত দেওয়া দরকার— সে পরামর্শ দেবেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন— ইসির সাবেক সচিব (ভারপ্রাপ্ত) ড. মোহাম্মদ জকরিয়া, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সাবেক যুগ্মসচিব খন্দকার মিজানুর রহমান, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সাবেক যুগ্মসচিব মো. নূরুজ্জামান তালুকদার, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সাবেক উপসচিব মিহির সরওয়ার মোর্শেদ, সাবেক আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা (ঢাকা) শাহ আলম, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সাবেক যুগ্মসচিব মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী, সাবেক আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মাহফুজা আক্তার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও ফেমার প্রেসিডেন্ট মুনিরা খান, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সাবেক উপসচিব মিছবাহ উদ্দিন, সাবেক আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মীর মো. শাহজাহান।
এর আগে, গত ২৮ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ শুরু করে ইসি। প্রথম দিন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও শিক্ষাবিদরা সংলাপে অংশ নিয়ে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সবার নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান জানান।
গণমাধ্যমের সহযোগিতা নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে তারা বলেন, সুষ্ঠু গণতন্ত্রের জন্য কার্যকর গণমাধ্যম অপরিহার্য। পুরো নির্বাচন ব্যবস্থায় গণমাধ্যম যেন সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে পারে, সংবাদ সংগ্রহ করতে পারে, যাতে কোনো ভ্রান্ত ধারণা তৈরি না হয়, শুরু থেকেই সবার কাছে সমস্ত তথ্য যেন পৌঁছায়।
নির্বাচনের প্রস্তুতি থেকে শুরু করে ভোট গ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশ পর্যন্ত সবক্ষেত্রেই গণমাধ্যমের সঠিক ভূমিকা জরুরি বলে তারা গুরুত্ব আরোপ করেন।
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | কর্পোরেট সংবাদ সম্পাদক - মোঃ মিজানুর রহমান । উপদেষ্টা সম্পাদক- জেসমিন আক্তার, এফসিএস ই-মেইলঃ corporatesangbad@gmail.com । ফোনঃ ০২২২-৩৩৫৪১২৫ । মোবাইলঃ ০১৭১১০৭৬৮১৫ অফিসঃ ৫৫/বি, নোয়াখালী টাওয়ার, ১১ তলা, সুইট ১১-এফ, পুরানা পল্টন, ঢাকা ১০০০ |
| আসন্ন নির্বাচনকে জীবনের শেষ সুযোগ হিসেবে নিয়েছি: সিইসি https://corporatesangbad.com/523252/ |