জোর করে বৃদ্ধের চুল-দাঁড়ি কেটে দেওয়ার ঘটনায় মামলা

Posted on September 28, 2025

ময়মনসিংহ ব্যুরো: ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলায় বৃদ্ধ ফকিরকে ধরে জোর করে চুল-দাঁড়ি কেটে দেওয়ার আলোচিত ভাইরাল হওয়া ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।

শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী সত্তরোর্ধ্ব হালিম উদ্দিন আকন্দের ছেলে মোঃ শহীদ আকন্দ মামলাটি করেন বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আব্দুল্লাহ আল মামুন নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ভুক্তভোগী হালিম আকন্দের ছেলে শহীদ আকন্দ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ঘটনার তারিখ দেখানো হয়েছে চলতি বছরের ৫ জুন।

তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ টিপু সুলতান জানান, ভুক্তভোগী ও তার পরিবারের সদস্যরা শনিবার দুপুরে তারাকান্দা থানায় এসে মামলার আবেদন করেন। যাচাই-বাছাই শেষে মামলা রজু করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্তদের নাম পরিচয় প্রকাশ করা যাচ্ছে না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাযায়,কোরবানির ঈদের আগে তারাকান্দা উপজেলার কাশিগঞ্জ বাজারে ফকির হালিম উদ্দিনকে কিছু লোক ধরে জোর করে চুল-দাড়ি কেটে দেন। তিনি নিজের শক্তি দিয়ে ওই লোকগুলোর কাছ থেকে ছুটার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। শেষ পর্যন্ত অসহায়ের মত বলছিলেন, ‘আল্লাহ, তুই দেহিস।’

এরপর থেকে ফকির হালিম উদ্দিন নিজেকে প্রায় ‘ঘরবন্দি’ করে রাখেন। সম্প্রতি এর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। তখন বিষয়টি সারাদেশে আলোচনার জন্ম দেয়।

ভুক্তভোগী হালিম উদ্দিন বলেন, চা-নাশতা খাওয়ার জন্য জোরাজুরি করার পর তিনি রাজি না হওয়ায় কয়েকজন মিলে তাকে বাইরে এনে এই কাজ করে। তিনি অত্যন্ত মর্মাহত এবং সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছেন। এই ঘটনার পর তিনি হাত-পা সহ বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ব্যথা এবং নানা জটিলতায় ভুগছেন বলেও জানান।

জোর করে চুল কেটে দেওয়ার এই বেআইনি ও অমানবিক ঘটনাকে দেশের শীর্ষ মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) গভীর উদ্বেগের সঙ্গে দেখছে। আসক এই ঘটনাকে ব্যক্তির শারীরিক অখণ্ডতা ও মৌলিক মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করেছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, প্রকাশ্যে একজন বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষের প্রতি এমন অমানবিক আচরণ অত্যন্ত নিন্দনীয় ও বেআইনি। ভুক্তভোগী হালিম উদ্দিন আকন্দের ছেলে বাদী হয়ে তারাকান্দা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। আমরা মামলাটি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। আসামিদের চিহ্নিত করে এবং আইনের আওতায় এনে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোনো সভ্য সমাজে এ ধরনের জোর-জুলুম মেনে নেয়া যায় না। এ ঘটনায় দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।