![]() |

মনির হেসেন, বেনাপোল প্রতিনিধি: বেনাপোল স্থল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে মাছ আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। কাস্টমসের নতুন নিয়মে খরচ বৃদ্ধির অভিযোগ এনে রোববার ১০আগস্ট থেকে এ মাছ আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। এতে ব্যবসায়ীদের অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি সরকারও বড় অংকের রাজস্ব আহরণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগের বিষয়ে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এখানের চিরাচরিত অনিয়ম ঠেকাতে কিছু নিয়ম করা হয়েছে।
জানা যায়, নানান প্রতিবন্ধকতায় গত অর্থবছরে ভারত থেকে মাছ আমদানি কমেছে ১৮ হাজার ৩৭৫ মেট্রিক টন।
বাণিজ্যিক সংশিষ্টরা জানান, ভারত থেকে যেসব খাদ্য দ্রব্য আমদানি হয় তার মধ্যে বড় একটি অংশ রয়েছে বরফায়িত মিঠা পানির মাছ ও সামুদ্রিক মাছ। রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক সামুদ্রিক মাছে কেজি প্রতি শুল্ক নির্ধারণ করা আছে ৫০ সেন্ট মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি ৩৮ টাকা। কিন্তু বর্তমানে বেনাপোল কাসটমস হাউস নির্ধারিত শুল্ক ৫০ সেন্টের পরিবর্তে ৭৫ সেন্ট আদায় করছে। এতে করে আমদানি কারকদের প্রতি চালানে অতিরিক্ত ২৫ সেন্ট বা বিশ টাকা অতিরিক্ত গুনতে হচ্ছে।
এছাড়াও আমদানিকৃত ট্রাকে বরফাফিত যে ধরনের মাছ থাকুক না কেন ৮০ শতাংশ মিঠা পানি (সুইট ফিশ) ও ২০ শতাংশ সামুদ্রিক মাছ (সি ফিশ) নির্ধারন করে শুল্ককর নেওয়া হচ্ছে। মিঠা পানির মাছ কেজি প্রতি আমদানি শুল্ক ৭৬ টাকা ও সামুদ্রিক মাছ কেজি প্রতি আমদানি শুল্ক ৪৬ টাকা। এখানেও লোকসানে পড়ছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।
এছাড়া পণ্যবাহি ট্রাকের চাকা অনুপাতে করতে হয় শুল্ক পরিশোধ। কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার মির্জা রাফেজা সুলতানা মাছ আমদানির বিষয়ে তদারকি করে থাকেন। বিষয়টি নিয়ে তার সাথে কথা বলা হলেও সুরাহ হয়নি। বাধ্য হয়ে ব্যবসায়ীরা বন্ধ রাখে ভারত থেকে মাছ আমদানি।
তবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছেন, বরফায়িত মাছের ওজন নির্নয় ও সঠিক ভাবে রাজস্ব আয়ে কিছু নিয়ম করা হয়েছে। এসব নিয়ে কারো কোন অভিযোগ থাকলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সাথে ব্যবসায়ীদের কথা বলার সুযোগ রয়েছে।
মাছবাহী ট্রাক চালক রাহুল জানান, মাছ আমদানি বন্ধ থাকায় দু’দিন ধরে তিনি ট্রাক নিয়ে বন্দরে দাড়িয়ে আছে।
বেনাপোল বন্দরের শ্রমিকরা জানান, এমনিতেই বেনাপোল বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানি অর্ধেকের নিচে কমে এসেছে। এরপর আবার মাছ আমদানি বন্ধ থাকায় অনেক শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়েছে।
বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সাধারন সম্পাদক জিয়াউর রহমান জানান, প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানিকৃত মাছে ২ থেকে ৩ কোটি টাকা রাজস্ব আসে সরকারের। বিষয়টি নিয়ে কাস্টমসের সাথে কথা বলা হলেও কোন প্রতিকার মেলেনি। সবমিলিয়ে আমদানি খরচ বাড়ায় বাধ্য হয়ে মাছ আমদানি বন্ধ রেখেছেন আমদানিকারকেরা।
বেনাপোল বন্দর ফিসারিজ কোয়ারেন্টাইন কর্মকর্তা আসওয়াদুল আলম জানান, শনিবার থেকে ভারত থেকে মাছ আমদানি হয়নি। তবে, মাছবাহী ট্রাক ঢুকলে দ্রুত খালাসের সব ব্যবস্থা তাদের রয়েছে।
বেনাপোল কাস্টম হাউসের কমিশনার খালেদ মোহাম্মদ আবু হোসেন জানান, তিনি মাত্র কয়েকদিন হলো বেনাপোল কাস্টমস হাউসে যোগাদান করেছেন। এজন্য, মাছ আমদানিতে শুল্ককর পরিশোধের ক্ষেত্রে নতুন করে কোন নিয়ম চালুর বিষয়টি তার জানা নেই। তবে বরফায়িত মাছের ওজন নির্নয় ও সঠিকভাবে রাজস্ব আদায়ে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে। এসব নিয়ে কোন ব্যবসায়ীরা এখন পর্যন্ত তাদের কাছে অভিযোগ জানাতে আসেনি। তবে কাস্টমসের সাথে তাদের আলোচনা করার সুযোগ রয়েছে বলে জানান কাস্টমস কমিশনার।
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | কর্পোরেট সংবাদ সম্পাদক - মোঃ মিজানুর রহমান । উপদেষ্টা সম্পাদক- জেসমিন আক্তার, এফসিএস ই-মেইলঃ corporatesangbad@gmail.com । ফোনঃ ০২২২-৩৩৫৪১২৫ । মোবাইলঃ ০১৭১১০৭৬৮১৫ অফিসঃ ৫৫/বি, নোয়াখালী টাওয়ার, ১১ তলা, সুইট ১১-এফ, পুরানা পল্টন, ঢাকা ১০০০ |
| আমদানি খরচ বাড়ায় বেনাপোল বন্দর দিয়ে মাছ আমদানি বন্ধ https://corporatesangbad.com/519186/ |