৭ দিনের রিমান্ডে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক

Posted on July 30, 2025

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে ৭ দিনের রিমান্ডে দিয়েছেন আদালত। বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (সিএমএম) তার রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে একই দিন সাবেক এই প্রধান বিচারপতিকে সিএমএম আদালতে হাজির করা হয়। পরে তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে পুলিশ। একপর্যায়ে শুনানি শেষে আদালত এ বি এম খায়রুল হকের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

তার বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ থানার সরকারি কর্মচারী কর্তৃক দুর্নীতিমূলক উপায়ে আদেশ, রিপোর্ট, রায় বা সিদ্ধান্ত প্রণয়ন বা ঘোষণা করা ও আদালতের নথিপত্র বা সরকারি রেজিস্টার ইত্যাদি জালকরণের অভিযোগে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে।

গত ২৪ জুলাই সকালে ধানমন্ডির বাসা থেকে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পরে যাত্রাবাড়ী থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হলে শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। এর মধ্যদিয়ে প্রথমবারের মতো কোনো সাবেক প্রধান বিচারপতিকে খুনের মামলায় গ্রেপ্তার ও জেলহাজতে পাঠানোর ঘটনা ঘটে।

গত বছরের ২৭ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুহা. মুজাহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় এবিএম খায়রুল হকের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। মামলায় দণ্ডবিধির ২১৯ ও ৪৬৬ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বিচারপতি খায়রুল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথায় প্রভাবিত হয়ে এবং তার অবসর পরবর্তী ভালো পদায়নের লোভের বশবর্তী হয়ে দুর্নীতিমূলকভাবে শেখ হাসিনাকে খুশি করার অভিপ্রায়ে ২০১১ সালের ১০ মে সংক্ষিপ্ত আদেশটি পরিবর্তন করে বেআইনিভাবে ২০১২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন খায়রুল হক। ২০১১ সালে ১৭ মে ৬৭ বছর পূর্ণ হওয়ায় অবসর গ্রহণ করেন তিনি। আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময় খায়রুল হক ছিলেন আইন কমিশনের চেয়ারম্যান।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর ১৩ আগস্ট তিনি আইন কমিশন থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর থেকেই তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, জালিয়াতি, দুর্নীতি ও রাজনৈতিক সুবিধা গ্রহণের অভিযোগে একাধিক মামলা হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল মামলার মূল রায়দানকারী হিসেবে রাজনৈতিকভাবে সমালোচিত খায়রুল হক। এছাড়া বহুদিন ধরেই তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পক্ষপাত, বিতর্কিত রায় এবং সাংবিধানিক সংশোধনীর মাধ্যমে বিচার বিভাগকে রাজনৈতিক উদ্দেশে ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে।