![]() |

নিজস্ব প্রতিনিধি: চলতি বর্ষায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে পদ্মার দুর্গম চরাঞ্চলসহ দুই পাড়ের বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র নদী ভাঙ্গন। এতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বসতবাড়িসহ শতশত একর ফসলি জমি। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার একর ফসলি জমি পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
শনিবার (১৯ জুলাই) সকালে উপজেলার মালুচি গ্রামে পদ্মার ভাঙ্গন রোধের দাবিতে স্থানীয়রা একটি গণ সমাবেশ করেন। গণ সমাবেশে স্থানীয়রা মালচি গ্রামের প্রায় ৭'শ মিটার দৈর্ঘ্য এরিয়ায় জরুরীভাবে জিও ব্যাগ ডাম্পিং এর দাবি করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নদী ভাঙ্গনে এ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৯টিই নদী ভাঙন কবলিত। এর মধ্যে একেবারে হারিয়ে যাওয়া আজিমনগর, সুতালড়ী ও লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নে নব্বই দশকের দিকে চর জাগলে সেখানে জনবসতী গড়ে ওঠে। অপরদিকে কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের ১৩টি মৌজার মধ্যে ১২টি মৌজাই সম্পূর্ণরূপে বিলীন হয়ে অবশিষ্ট রয়েছে মাত্র ১টি মৌজা।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের পশ্চিম কুশিয়ারচর এলাকায় ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬০ মিটার আপদকালীন জিও ব্যাগ ডাম্পিং এর কাজ করা হলেও এই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মালুচি গ্রামে সম্প্রতি দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। এতে নদী পাড়ের কলার বাগানসহ ফসলি জমি বিলীন হয়ে যায়। এ ভাঙ্গনের ফলে নদী তীরবর্তীতে প্রায় ২০টি বসত বাড়ি হুমকির মুখে পড়েছে।
গণ সমাবেশে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ খোরশেদ আলম বলেন, আমাদের ২নং ওয়ার্ডের মালুচি গ্রামে প্রায় ৭ শ মিটার এরিয়ায় এখনো কোনো জিও ব্যাগ পরেনি। ফলে জোয়ারের পানি আসার সাথে সাথেই এই এলাকায় তীব্র ভাঙন দেখা দেয়। এতে করে কৃষি জমিসহ বসতবাড়ি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। তাই এই এলাকার কৃষি জমি এবং বসতবাড়ি রক্ষার্থে জরুরিভাবে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
স্থানীয় বাসিন্দা সুইজারল্যান্ড প্রবাসী আব্দুর রহমান জানান, মালুচি গ্রামের কিছু অংশ এখন পর্যন্ত কোনো জিও ব্যাগ পড়েনি। যার ফলে এ এলাকায় এখন তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। দ্রুত জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে এই এলাকাকে রক্ষার জোর দাবি জানাচ্ছি।
মালুচি গ্রামের বাসিন্দা হাফেজা বেগম জানান, ৩০ বছর আগে আমার স্বামীর বাড়ি নদীতে গেছে। তিন ভাঙা দেয়ার পরে প্রায় ১৫ বছর ধরে বাবার বাড়িতে ভাইয়ের জায়গায় বসবাস করছি। এ বাড়িটিও একবারে নদীর পাড়ে। যেকোনো সময় নদীতে চইলা যাইব। এই জায়গাটুকু নদীতে চইলা গেলে আমার আর যাওয়ার কোনো জায়গা থাকবে না। তাই আমাগো দাবি, যত দ্রুত সম্ভব জিও ব্যাগ ফালানোর জন্য। যাতে আমাগো শেষ সম্বলটুকু রক্ষা পায়।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান জানান, হরিরামপুর উপজেলার পদ্মা নদীর বাম তীরে কালিতলা থেকে মালুচি পর্যন্ত প্রায় ৩০০মিটার দৈর্ঘ্যে এলাকায় আপদকালীন জিওব্যাগ ডাম্পিংয়ের কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এখন কালিতলা থেকে মালুচি পর্যন্ত অবশিষ্ট ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যের কাজ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জরিপ কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং স্থায়ী প্রকল্প গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এছাড়া ভাঙ্গন এলাকায় সার্বক্ষণিক মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে।
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | কর্পোরেট সংবাদ সম্পাদক - মোঃ মিজানুর রহমান । উপদেষ্টা সম্পাদক- জেসমিন আক্তার, এফসিএস ই-মেইলঃ corporatesangbad@gmail.com । ফোনঃ ০২২২-৩৩৫৪১২৫ । মোবাইলঃ ০১৭১১০৭৬৮১৫ অফিসঃ ৫৫/বি, নোয়াখালী টাওয়ার, ১১ তলা, সুইট ১১-এফ, পুরানা পল্টন, ঢাকা ১০০০ |
| হরিরামপুরে পদ্মার ভাঙ্গন রোধের দাবিতে গণসমাবেশ https://corporatesangbad.com/517160/ |