শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে ঘুরে দাঁড়াতে চায় বাংলাদেশ

Posted on July 13, 2025

স্পোর্টস ডেস্ক: তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে টিকে থাকার লক্ষ্য নিয়ে আজ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলংকার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। রোববার (১৩ জুলাই) ডাম্বুলা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে।

এর আগে সিরিজের প্রথম ম্যাচে শ্রীলংকার কাছে ৭ উইকেটে পরাজিত হয় বাংলাদেশ। সিরিজে টিকে থাকতে হলে দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই টাইগারদের। শ্রীলংকার কাছে প্রথম ম্যাচ হারে নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে টানা ছয় ম্যাচ হারল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে জিতলে হারের বৃত্তও ভাঙ্গতে পারবে টাইগাররা।

এর মধ্যে সিরিজ খোয়াতে হয়েছে দুর্বল আরব আমিরাতের কাছেও। তবে নিকট অতীতের এসব দুঃসহ স্মৃতি ভুলিয়ে দলে আত্মবিশ্বাস ফেরাতে চান অধিনায়ক লিটন দাস।

লিটন বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটটা তো অনেকদিন ধরেই খেলছি এবং কিছুদিন আগে আমাদের কয়েকটা সিরিজও গেছে। আশা করছি, দল হিসেবে আমরা এ সিরিজে ঘুরে দাঁড়াতে পারবো।’

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে মোট ১৭বার মুখোমুখি হয়েছে টাইগাররা। এর মধ্যে লঙ্কানদের জয় ১১ ম্যাচে, বাংলাদেশের জয় ৬টিতে। শ্রীলঙ্কার মাটিতে দু’দল মুখোমুখি হয়েছে ২ বার, তাতে শতভাগ জয় স্বাগতিকদের। তবে এবার চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত বাংলাদেশ অধিনায়ক।

বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা অবশ্যই চেষ্টা করবো। ব্যাপারটা সহজ হবে না, কারণ তারা তাদের হোম কন্ডিশনে বেটার সাইড। আমরা আমাদের সর্বোচ্চটা দেয়ার চেষ্টা করবো।’

লঙ্কানদের বিপক্ষে টাইগার স্কোয়াডে দীর্ঘদিন পর ফিরেছেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিন ও ব্যাটার মোহাম্মদ নাঈম। সর্বশেষ পাকিস্তান স্কোয়াড থেকে বাদ পড়েছেন নাজমুল শান্ত, নাহিদ রানা, খালেদ আহমেদ, তানভির ইসলাম ও সৌম্য সরকার। দলে নাসুম-সাইফুদ্দিনের অন্তর্ভুক্তিকে বাড়তি পাওয়া হিসেবে দেখছেন ক্যাপ্টেন লিটন।

লিটন বলেন, ‘নাসুমের ফেরাটা খুবই যৌক্তিক, যেহেতু সে অনেকদিন যাবৎ এ ফরম্যাটটা খেলে এবং আমার কাছে মনে হয়, তার কাছে বোলিং ও ব্যাটিং দুইটা সাইডই পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। সাইফুদ্দিনও ওই ধরনেরই খেলোয়াড়। যেহেতু টি-টোয়েন্টিতে উভয় সাইডই লাগে, তাই সিলেকশন প্যানেল এবং আমাদের দল থেকে চেষ্টা করা হয়েছে তাকে সুযোগ দিতে।’

বাংলাদেশের বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদ জানান, ব্যাটারদের দায়িত্ব নিয়ে বড় ইনিংস খেলতে হবে। তিনি বলেন, ‘যখন একজন ব্যাটার ফর্মে থাকে এবং ৩০-৪০ রান করে তখন তার পরের লক্ষ্য হওয়া উচিত ৭০-৮০ রানে ইনিংস খেলা।

তিনি আরও বলেন, ‘শ্রীলংকার হয়ে ব্যাট হাতে ভাল করেছেন কুশল মেন্ডিস। ধারাবাহিকতা ধরে রেখে বড় ইনিংস খেলছেন তিনি। আমাদের বোলাররা তার কারনে সমস্যায় পড়েছে। আমাদের দলের জন্য একজন ব্যাটারের একই কাজ করা উচিত।’

প্রথম টি-টোয়েন্টি শুরুটা ভাল ছিল বাংলাদেশের। ইনফর্ম পারভেজ হোসেন ইমনের মারুমুখী ব্যাটিংয়ে ৫ ওভারেই ৪৬ রান পেয়েছিল টাইগাররা। বড় ইনিংস খেলার আভাস দিয়ে ২২ বলে ৩৮ রান করে আউট হন তিনি।

ইমন ফেরার পর দলের পরের দিকের ব্যাটাররা টি-টোয়েন্টি মেজাজে রান তুলতে পারেনি। এতে ১৮ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ১৩০।

শেষ দিকে শামীম হোসেনের ৫ বলে ১৪ রানের ইনিংসে দেড়শ পার করে বাংলাদেশ। ৫ উইকেটে ১৫৪ রানের সংগ্রহ পায় টাইগাররা।

জবাবে দুই ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিসের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ২৮ বলে ৭৮ রানের সূচনা পায় শ্রীলংকা। শেষ পর্যন্ত মেন্ডিসের ৫ চার ও ১ ছক্কায় সাজানো ৫১ বলে ৭৩ রানের সুবাদে ১ ওভার বাকী থাকতে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে শ্রীলংকা। ১৬ বলে ৪২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন নিশাঙ্কা।

মুশতাক আরও বলেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে পারছেন না, ‘যখন পরিকল্পনা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তখন সেটি কাজে লাগাতে পারেনি ব্যাটাররা। ক্রিজে এসে রিভার্স-সুইপ ছক্কা মেরে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছিলেন শামীম।

তিনি আরও বলেন, ‘চ্যালেঞ্জিং উইকেটে জয়ের জন্য লড়াকু স্কোর দরকার পড়ে। এজন্য ব্যাটারদের দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হয় এবং ভাল শুরুর পর ইনিংস বড় করতে হয়।’

দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে একাদশে পরিবর্তন আনতে পারে বাংলাদেশ। ঊরুর ইনজুরিতে প্রথম ম্যাচে খেলেননি জাকের আলি। যদি দ্বিতীয় ম্যাচের আগে ফিট হয়ে যান তাহলে একাদশে ফিরবেন জাকের। এছাড়াও একাদশে ফিরতে পারেন প্রথম ম্যাচে বাদ পড়া পেসার মুস্তাফিজুর রহমান।

বাংলাদেশ দল : লিটস দাস (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ হোসেন ইমন, নাইম শেখ, তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলি অনিক, শামিম পাটোয়ারি, মেহেদি হাসান মিরাজ, রিশাদ হোসেন, মাহেদি হাসান, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।

শ্রীলংকা দল : চারিথ আসালাঙ্কা (অধিনায়ক), পাথুম নিশাঙ্কা, কুশল মেন্ডিস, দিনেশ চান্ডিমাল, কুশল পেরেরা, কামিন্দু মেন্ডিস, আভিষ্কা ফার্নান্দো, দাসুন শানাকা, দিনুথ ওয়েলালাগে, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, মাহেশ থিকশানা, জেফরি ভান্ডারসি, চামিকা করুনারত্নে, মাথিশা পাথিরানা, নুয়ান থুশারা, বিনুরা ফার্নান্দো, এহসান মালিঙ্গা।