কলাপাড়ায় মসজিদের বরাদ্দেও 'ম্যানেজমেন্ট খরচ', ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

Posted on July 10, 2025

বাদল হোসেন, পটুয়াখালী প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কর্তৃক বরাদ্দকৃত মসজিদ ও মন্দির উন্নয়ন তহবিলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে এই অর্থ লোপাট করা হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে এলজিইডির অধীনে কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের পূর্ব আলিপুর গ্রামের ‘বায়তুল বিলকিস জামে মসজিদে’ উন্নয়নের জন্য তিন লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কার্যাদেশ পান স্থানীয় ঠিকাদার কবির মৃধা। কিন্তু বাস্তবে মসজিদ কমিটিই নিজ উদ্যোগে উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করে।

মসজিদ কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান বলেন, “আমরা এলজিইডি অফিস ও ঠিকাদারের সাথে কথা বলে নিজেরা কাজটি সম্পন্ন করেছি। তবে এখনও কিছু কাজ বাকি। অথচ ঠিকাদার মাত্র এক লাখ টাকা দিতে চাচ্ছেন। বলছেন, আর কিছু দেওয়া সম্ভব নয়।”

অভিযোগের জবাবে ঠিকাদার কবির মৃধা বলেন, “আমি অফিস থেকে ভ্যাটসহ অন্যান্য কর্তন বাদ দিয়ে ২ লাখ ২৫ হাজার ৫০০ টাকার চেক পেয়েছি। এখান থেকে উপজেলা প্রকৌশলীসহ জেলার কিছু অফিসে খরচ করতে হয়েছে।” এমন বক্তব্য থেকেই দুর্নীতির গন্ধ পাচ্ছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয়দের একাংশ মনে করেন, কোনো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় এবং প্রশাসনিক তদারকি শিথিল থাকায় এই বরাদ্দগুলোর অর্থ আত্মসাতের ঝুঁকি বেড়েছে। এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এই অবস্থায় যদি বরাদ্দ লোপাট হয়, তবে ভবিষ্যতে আরও বড় দুর্নীতি ঘটতে পারে।”

শুধু পূর্ব আলিপুর নয়—কলাপাড়ার আরও কয়েকটি মসজিদ ও মন্দির উন্নয়ন প্রকল্পেও একই ধরনের অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে—প্রকৃত কাজে খরচ না করে বরাদ্দের বড় অংশ বিভিন্ন অজুহাতে আত্মসাৎ করা হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে পটুয়াখালী এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ হোসেন আলী মীর বলেন, “আমার অফিসে কোনো ঘুষ দেয়ার প্রয়োজন নেই। যদি কেউ এমন দাবি করে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। বরাদ্দের অর্থ থেকে শুধুমাত্র ভ্যাট বাদ দিয়ে বাকি পুরো টাকাই মসজিদ কমিটিকে বুঝিয়ে দিতে হবে।”

এদিকে এলাকায় ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ মুসল্লিদের পাশাপাশি স্থানীয় সচেতন মহল দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।