রিজার্ভ নামল ১৯ বিলিয়ন ডলারের ঘরে

Posted on November 8, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক : এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি বিল শোধের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চিতি (রিজার্ভ) ১৯ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে এসেছে।

সদস্য রাষ্ট্রগুলোর আমদানি দায় মেটাতে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সময়ে বাংলাদেশ আকুর কাছে পরিশোধ করেছে ১.২১ বিলিয়ন ডলার।

নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে মঙ্গলবার আকুর এই দায় সমন্বয় করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, এর আগে সর্বশেষ গত জুলাই-অগাস্ট মাসে আকুর দায় বাবদ ১.৩১ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছিল বাংলাদেশ। আমদানি নিয়ন্ত্রণ থাকায় এবার আকু দায় আগের চেয়ে একটু কমেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ১ নভেম্বর আইএমএফ স্বীকৃত বিপিএম৬ পদ্ধতি অনুযায়ী গ্রস রিজার্ভের স্থিতি ছিল ২০.৬৬ বিলিয়ন ডলার। আকুর দায় শোধের পর তা ১৯.৪৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, এটিও প্রকৃত রিজার্ভ নয়। গ্রস রিজার্ভ থেকে আইএমএফ এর পাওনাসহ সব দায় বাদ দিলে নিট রিজার্ভের পরিমাণ ১৭ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে যাবে।

এর আগে গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ যখন ২১.১৫ বিলিয়ন ডলার ছিল, তখনই বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক লিড ইকোনোমিস্ট জাহিদ হোসেন বলেছিলেন, নিট রিজার্ভের পরিমাণ ১৮ বিলিয়ন বা তার নিচে নেমে গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ১ নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব হিসাবে গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৬.৪২ বিলিয়ন ডলার। এখান থেকে আকু দায় বাদ দিলে গ্রস রিজার্ভের স্থিতি দাঁড়ায় ২৫.২১ বিলিয়ন ডলার।

এর আগে গত জুলাই-অগাস্ট মেয়াদের আকুর দায় পরিশোধের পর ৭ বছর পর রিজার্ভ ৩০ বিলিয়নের নিচে নেমে ২৯.৯৭ বিলিয়ন ডলার হয়।

জাতিসংঘের এশিয়া অঞ্চলের অর্থনীতি ও সামাজিক কমিশনের উদ্যোগে ১৯৭৪ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয় আকু। জাতিসংঘের এশিয়া অঞ্চলের অর্থনীতি ও সামাজিক কমিশনের ভৌগোলিক সীমারেখায় অবস্থিত সকল দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জন্য আকুর সদস্যপদ উন্মুক্ত। এর সদর দপ্তর ইরানের রাজধানী তেহরানে।

বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ-এই ৯টি দেশ এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) সদস্য ছিল। তবে রিজার্ভ সঙ্কটে পড়ে ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে আকু থেকে বেরিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা।

আকুর সদস্য দেশগুলো নিজেদের মধ্যে যে আমদানি-রপ্তানি করে, তার দায় ২ মাস পর পর সমন্বয় করে। প্রতি ২ মাস অন্তর গড়ে সোয়া এক বিলিয়ন ডলারের মত দায় শোধ করে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আমদানি দায় পরিশোধ করতে গিয়ে বাংলাদেশের ব্যালেন্স অব পেমেন্টে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। সেই ঘাটতি সামাল দিতে গত জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল- আইএমএফ এর সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ চুক্তি করে বাংলাদেশ। আগামী ডিসেম্বরে সেই ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি বাংলাদেশ হাতে পাবে।