কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : মালয়েশিয়ায় আইএস সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আটক ৩৬ জন বাংলাদেশির মধ্যে ইতিমধ্যে তিনজন দেশে ফিরেছেন বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রবাসীকল্যাণ উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি জানান, দেশে ফেরত আসা ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং ভবিষ্যতে যারা ফিরবেন, তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিললে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শুক্রবার (৪ জুলাই) রাতে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ সরকার বিষয়টি খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে উল্লেখ করে আসিফ নজরুল বলেন, মালয়েশিয়া আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র। কয়েক লক্ষ বাঙালি ওখানে কাজ করছে। এই ধরনের ঘটনা যখন ঘটে, কয়েকজনের বিরুদ্ধে এ রকম অভিযোগ আসে জঙ্গিবাদে জড়ানোর, এটা আমাদের জন্য খুবই বিব্রতকর। আমাদের এবং মালয়েশিয়ার দুই দেশের জন্যই এটা উদ্বিগ্ন হওয়ার বিষয়।
প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা আরও বলেন, তারা যখনই বাংলাদেশে ফেরত আসবে, সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তারা জড়িত থাকলে, উপযুক্ত প্রমাণ নিজেরা পেলে বা মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ থেকে পেলে আমরা অবশ্যই তাদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাব। আর আমরা বদ্ধপরিকর, এই ব্যাপারটা নিয়ে আমরা মালয়েশিয়ার উচ্চপর্যায়ে যোগাযোগ করছি, একসাথে কাজ করব। মালয়েশিয়ার মাটিতে হোক, বাংলাদেশের মাটিতে হোক, কোনো রকম জঙ্গিবাদ আমরা প্রশ্রয় দেব না। এই ব্যাপারে আমরা কঠোর অবস্থান নিব।
এর আগে শুক্রবার মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দেশটির পুলিশপ্রধান খালিদ ইসমাইল জানান, বাংলাদেশি শ্রমিকদের একটি চক্র আইএস মতাদর্শ ছড়ানো ও তহবিল সংগ্রহে জড়িত ছিল। এই চক্রটি সিরিয়া ও বাংলাদেশে আইএসের জন্য অর্থ পাঠাতো।
খালিদ ইসমাইল বলেন, “এই চক্রটি ১০০ থেকে ১৫০ জন বাংলাদেশিকে জঙ্গি কর্মকাণ্ডে যুক্ত করেছে বলে আমরা ধারণা করছি। যাঁদের সংশ্লিষ্টতা কম, তাঁদের ফেরত পাঠানো হবে। যাঁরা গভীরভাবে জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মালয়েশিয়ার পুলিশপ্রধানের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, আটককৃতদের মধ্যে ৫ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্য হওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে। আরও ১৫ জনকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে এবং বাকি ১৬ জন এখনও পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার পুলিশপ্রধান বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে শ্রমিকদের মধ্যে ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিগোষ্ঠীর মতাদর্শ প্রচার এবং তহবিল সংগ্রহ করে, বাংলাদেশি শ্রমিকদের এমন একটি চক্র ভেঙে দিয়েছে মালয়েশীয় কর্তৃপক্ষ। আটক বাংলাদেশি শ্রমিকেরা সিরিয়া ও বাংলাদেশে ইসলামিক স্টেট (আইএস) গোষ্ঠীর কাছে অর্থ পাঠাতেন।
এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর। আমরা কঠোরভাবে তদন্ত করছি। মালয়েশিয়া আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র। তাই দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করবে। জঙ্গিবাদে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’