ধারবাহিকভাবে কমছে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ

Posted on November 7, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক : অধিক মুনাফার আশায় ব্যাংকে আমানতের চেয়ে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে মানুষের একসময় আগ্রহ ছিলো। তবে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে সকল ধরনের সঞ্চয়পত্রে সুদ হার কমানো হয়। এরপর থেকে ধারবাহিকভাবে কমতে থাকে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ। সেপ্টেম্বর মাসেও সঞ্চয়পত্রে সরকারের নিট ঋণ (ঋণাত্মক) দাঁড়িয়েছে ১৪৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এমন তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।

তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসে ৬ হাজার ৭৪৫ কোটি ৭৯ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে আগের মূল ও মুনাফা পরিশোধ করা হয়েছে ৬ হাজার ৮৯৩ কোটি ৬৪ টাকা। এরপর পর সেপ্টেম্বর মাসে এ খাতে সরকারের নিট ঋণ (ঋণাত্মক) দাঁড়িয়েছে ১৪৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।
সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি বলতে বোঝানো হয়, একটি নির্দিষ্ট সময়ে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি ও ভাঙানোর মধ্যকার ব্যবধান। গত অর্থবছরে যে পরিমাণ টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হচ্ছিলো, ভাঙানোর পরিমাণ ছিলো তার চেয়ে বেশি। তবে এই অর্থবছরের প্রথম ৩ মাসে ঠিক উল্টো চিত্র দেখা গিয়েছে। এসময় মূল ও মুনাফা পরিশোধ করেও এই খাতে সরকারের ঋণ রয়েছে।

সুদ ব্যয় কমাতে সঞ্চয়পত্রে বিভিন্ন শর্ত দিয়েছিলো সরকার। এর ফলে খাতটিতে বিনিয়োগ নেতিবাচক হয়ে পড়েছে। এছাড়া চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি পূরণে সরকার সঞ্চয়পত্রের নির্ভরতাও কমিয়ে ফেলেছে।

এদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ২১ হাজার ৬৫৬ কোটি ৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে আগের মূল টাকা ও মুনাফা পরিশোধ করা হয়েছে ২২ হাজার ৯২১ কোটি ২ লাখ টাকা। মূল টাকা ও মুনাফা পরিশোধের পর তিন মাসে সরকারের নিট ঋণ (ঋণাত্মক) দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২৬৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ ছিল ৩৩০ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।

এদিকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে প্রজ্ঞাপন জারি করে সঞ্চয়পত্রের সুদহার কমিয়েছিল সরকার। একই প্রজ্ঞাপনে কয়েকটি স্তর করে দিয়েছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি)। এর পর থেকেই সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ কমতে থাকে।

এদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরের চেয়ে ১৭ হাজার কোটি টাকা বা ৪৮.৫৭ শতাংশ কম। সদ্য সমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছিলো ৩৫ হাজার কোটি টাকা।