প্রতীকসহ নিবন্ধন ফিরে পেলো জামায়াত, ইসির প্রজ্ঞাপন জারি

Posted on June 24, 2025

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : দাঁড়িপাল্লা প্রতীকসহ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন পুনর্বহাল করে নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদের সই করা এক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, যেহেতু Representation of the People Order, 1972 এর আওতায় রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য উক্ত আদেশের Article 90B এর শর্তানুযায়ী বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নামীয় দল কর্তৃক নিবন্ধনের আবেদনের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নামীয় দলকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ০৫ নভেম্বর ২০০৮/২১ কার্তিক ১৪১৫ তারিখের নিকস/প্র-৩/রাদ/৫(৪৪) /২০০৮/১১৪১ সংখ্যক প্রজ্ঞাপনমূলে নিবন্ধন প্রদান করা হইয়াছিল (নিবন্ধন নম্বর-০১৪, তারিখ: ০৪ নভেম্বর ২০০৮); এবং

যেহেতু বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে দায়েরকৃত রিট পিটিশন নম্বর- 630 of 2009 এর প্রদত্ত রায়ের সূত্রে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ১৩ কার্তিক ১৪২৫/২৮ অক্টোবর ২০১৮ তারিখের ১৭.০০.০০০০.০২৫.৫০.০৫৮.০৮-৬৮৯ সংখ্যক প্রজ্ঞাপনমূলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এর নিবন্ধন বাতিল করা হয়; এবং

যেহেতু Civil Appeal No. 139 of 2013 with Civil Petition For Leave To Appeal No. 3112 of 2013 এ আপিল বিভাগ কর্তৃক হাইকোর্ট বিভাগে দায়েরকৃত রিট পিটিশন নম্বর- 630 of 2009 এর প্রদত্ত রায় বাতিলপূর্বক দলটির নিবন্ধন পুনর্বহালের আদেশ প্রদান করা হইয়াছে;

সেহেতু সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের Civil Appeal No. 139 of 2013 with Civil Petition For Leave To Appeal No. 3112 of 2013 এর প্রদত্ত রায়ের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নামীয় দলের নিবন্ধন বাতিলের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রকাশিত ২৮ অক্টোবর ২০১৮ তারিখের ১৭.০০.০০০০.০২৫.৫০.০৫৮.০৮-৬৮৯ নম্বর প্রজ্ঞাপনটি এতদ্বারা বাতিলক্রমে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন দলীয় প্রতীকসহ পুনর্বহাল করা হইলো।

এর আগে এক রিট আবেদন নিষ্পত্তি করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। এরপর ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন।

গত ১ জুন রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে এক যুগ আগে হাইকোর্টের দেয়া রায় বাতিল ঘোষণা করেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ এ রায় দেন।

রায়ে বলা হয়, দলটির ক্ষেত্রে পেন্ডিং (অনিষ্পন্ন) রেজিস্ট্রেশন ইস্যু এবং অন্য কোনো ইস্যু যদি থেকে থাকে, তা সাংবিধানিক ম্যান্ডেট (বিচারগত ও আইনগত) পুরোপুরি প্রয়োগ করে নিষ্পত্তি করতে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) নির্দেশ দেয়া হলো।

উল্লেখ্য, ১৯৮৬ সালে তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দলীয় প্রার্থীদের জন্য প্রতীক হিসেবে ‘দাঁড়িপাল্লা’ বরাদ্দের জন্য আবেদন করে নির্বাচন কমিশনে। পরে আবেদনের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তৎকালীন নির্বাচন কমিশন নির্বাচনি প্রতীক হিসেবে ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীকটি বরাদ্দ দেয় জামায়াতকে। ২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশন যখন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন চালু করে তখনও চাহিদা অনুযায়ী দাঁড়িপাল্লা প্রতীক দেওয়া হয় জামায়াত ইসলামীকে।

পরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হাইকোর্টে এক রিটের আদেশের ২০১৩ সালে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করা হয়। পরে তাদের নিবন্ধন বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। ২০১৬ সালে রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীকে প্রতীক হিসেবে দাঁড়িপাল্লা বরাদ্দ না দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) চিঠি দেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। পরে উচ্চ আদালতের চিঠির প্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ৯ই মার্চ ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীক বাদ দিয়ে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০০৮ সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ করে ইসি। ফলে নির্বাচনে দল বা প্রার্থীর প্রতীক হিসেবে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক বাদ হয়ে যায়।