বিনোদন ডেস্ক : একটা সময় বাংলা বাণিজ্যিক ঘরানার ছবি আর পরিচালক রাজীব বিশ্বাসের নাম এক সঙ্গে উচ্চারিত হত। ঝুলিতে তাঁর ১৮টি ছবি। তার মধ্যে দুটো বাংলাদেশের। বাকি ১৬টা ছবি সেই আমলে হিট। প্রায় প্রত্যেকটি ছবি ভাল বাণিজ্য করেছিল। শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় তখন তাঁর ছবির একচেটিয়া নায়িকা। সেই পরিচালক ২০২২ সালের পর কলকাতাতেই নেই! নেই টলিউডেও।
কোথায় গেলেন তিনি? কেনই বা গেলেন? সম্প্রতি সায়ন্তন ঘোষালের ছবি ‘রবীন্দ্র কাব্য রহস্য’র বিশেষ প্রদর্শনে এসেছিলেন রাজীব।
কথা বলেছিলেন আনন্দবাজার ডট কমের সঙ্গে। কথায় কথায় বললেন, “পর পর দুটো বড় বাজেটের ছবিতে ব্যস্ত ছিলাম। ‘অপারেশন জ্যাকপট’ আর ‘চিতা’। দুটো কাজই বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য মাঝপথে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কবে শুরু হবে জানি না। আপাতত নিজের শহরেই ফিরে এলাম।”
তখন করোনা কাল। বাংলা ছবি প্রায় তৈরিই হচ্ছে না। হলেও তার ব্যবসায়িক সাফল্য তলানিতে। বাণিজ্যিক ঘরানার ছবির প্রথম সারির নায়ক দেব পর্যন্ত অন্য ধারার ছবিতে মন দিয়েছেন। তাঁর এই বদল চোখ খুলে দিয়েছিল রাজীবের। “দেখলাম, এত দিন যে বাজেটের ছবি বানিয়ে এসেছি সেই মাপের ছবি বানানোর প্রযোজক নেই। সিনেমার পিছনে পয়সা ঢালতে ভয় পাচ্ছেন সকলে।” বাংলার এই পরিবর্তন দেখেই বাংলাদেশে পা রাখেন তিনি। ২০১৮ সালে ওপার বাংলায় বড় হিট ছবি উপহার দিয়েছিলেন। ‘নাকাব’ ছবিতে তাঁর নায়ক ছিলেন শাকিব খান। সেই সাফল্যের উপরে ভর করেই তিনি দুটো বড় ছবি তৈরির কাজ পেয়েছিলেন।
‘অপারেশন জ্যাকপট’-এ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কথা বলা হবে। তৎকালীন বাংলাদেশ সরকার ছিল ছবির প্রযোজক। ছবিতে আট জন নায়ক। টেকনিশিয়ান কলকাতার হলেও সমস্ত অভিনেতা বাংলার। ফ্রান্স, মুম্বাই আর বাংলাদেশ মিলিয়ে মোট ৭০ দিনের কাজ। রাজীব বাংলাদেশের শুটিং শেষ করার পরেই বদলাতে থেকে ওপার বাংলার পরিস্থিতি। ফলে ফ্রান্স আর মুম্বাইয়ের শুটিং এখনও বাকি। একইভাবে ‘চিতা’ ছবির কাজও মাঝ পথে বন্ধ হয়ে যায়। এই ছবির নায়ক অনন্ত জলিল, নায়িকা তাঁর স্ত্রী বর্ষা।
এখন কি তা হলে বাংলাদেশে ছবি, নাটক তৈরি হচ্ছে না? “হচ্ছে। কম হচ্ছে। একমাত্র শাকিব খান বাংলাদেশ বিনোদন দুনিয়াকে ধরে রেখেছেন। বাকিরা ওঁর মতো করে সফল হতে পারছেন কই?”, বুঝিয়ে বললেন রাজীব। আরও যোগ করলেন, ওপার বাংলায় সরকার পতনের ফলে ব্যবসায় প্রভাব ফেলেছে। অর্থনৈতিক কাঠামোয় প্রভাব পড়েছে। বিনোদন দুনিয়ায় সে ভাবে লগ্নি হচ্ছে না। ভিসা সমস্যার কারণে ওপার বাংলার শিল্পীরাও ভারতে কাজ করতে আসতে পারছেন না।
রাজীব অবশ্য হাল ছাড়েননি। কলকাতায় তাঁর দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে চলেছেন। ছোট পর্দা, বড় পর্দা নিয়ে ছুতমার্গ নেই। তবে ছবির দিকেই মনোযোগ বেশি। “দেবের ‘খাদান’ হিট করায় ভরসা বেড়েছে। বাণিজ্যিক ঘরানার ছবির বাজার আবারও ফিরছে। অর্থাৎ, আবার আগের মতো ছবি বানাতে পারব”, রাজীবের দু’চোখ নতুন স্বপ্নে বিভোর। সূত্র-আনন্দবাজার।
আরও পড়ুন: