কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হলো গুগলের ডিজিটাল পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম ‘গুগল পে’। গুগল, মাস্টারকার্ড ও ভিসার সহযোগিতায় এই সেবা চালু করেছে সিটি ব্যাংক পিএলসি।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই সেবার উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, গুগলের ডিজিটাল পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম ‘গুগল পে’ চালুর মাধ্যমে ক্যাশলেস সোসাইটির দিকে আরও একধাপ এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মার্কিন দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত (চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স) ট্র্যাসি এন জ্যাকবসন ও সিটি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান হােসেন খালেদ।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মাসরুর আরেফিন, গুগল পেমেন্টসের গ্রুপ প্রোডাক্ট ম্যানেজার শাম্মী কুদ্দুস, মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার মােহাম্মদ কামাল, ভিসা বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সাব্বির আহম্মেদসহ প্রতিষ্ঠানগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

বিদেশি ব্যাসায়ীরা দেশে আসলে টাকা পাচার করবেনা বরং দেশের উপকার হবে জানিয়ে গভর্নর বলেন, আমরা চেষ্টা করছি ক্যাশলেস জগতে প্রবেশ করতে, তবে এরই মধ্যে তা সম্ভব হচ্ছে। দেশে গুগল পে চালুর মাধ্যমে ক্যাশলেস সোসাইটির দিকে আরও একধাপ এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমরা আশা করবো বাংলাদেশে আরও দেশি ও বিদেশি উদ্যোক্তাদের মিলন মেলা হবে। বিদেশিদের কোন কাজ বাংলাদেশে সম্পন্ন করলে দিন শেষে উপকারভোগী হয় দেশ।
এই সেবা চালুর পেছনে প্রধান অংশীদার হিসেবে রয়েছে সিটি ব্যাংক, যা গুগল পে’র সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত হওয়া দেশের প্রথম ব্যাংক হিসেবে ইতিহাস গড়েছে। সহযোগী হিসেবে আছে বিশ্বখ্যাত দুই কার্ড ব্র্যান্ড—মাস্টারকার্ড ও ভিসা। এখন থেকে দেশের অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ উপায়ে লেনদেন করতে পারবেন। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যেকোনো পয়েন্ট অব সেল (POS) মেশিনে ফোন ট্যাপ করেই অর্থ প্রদান সম্ভব হবে—দেশে বা বিদেশে, যেকোনো জায়গায়। আর এই পুরো প্রক্রিয়ায় গুগল কোনো ফি নিচ্ছে না, ফলে গ্রাহকরা এটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ব্যবহার করতে পারবেন।
প্রাথমিকভাবে এই সুবিধা শুধুমাত্র সিটি ব্যাংকের মাস্টারকার্ড ও ভিসা কার্ডধারীরা উপভোগ করতে পারবেন। গ্রাহকদের একটি অ্যান্ড্রয়েড ফোনে গুগল পে অ্যাপ ডাউনলোড করে সেখানে নিজেদের কার্ডের তথ্য সংযুক্ত করতে হবে। একবার কার্ড যুক্ত হয়ে গেলে, গ্রাহকরা যেকোনো দোকান, রেস্তোরাঁ বা শপিং মলে ফোন ট্যাপ করেই পেমেন্ট করতে পারবেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গুগল পে’র এই পদক্ষেপ শুধু আর্থিক লেনদেনকেই সহজ করবে না, বরং বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির ভবিষ্যৎকে আরও গতিশীল করে তুলবে। ভবিষ্যতে অন্যান্য ব্যাংকগুলোকেও এই সেবার আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানা গেছে। বাংলাদেশে প্রযুক্তিনির্ভর নিরাপদ লেনদেনের নতুন এই যাত্রা সাধারণ গ্রাহকদের দৈনন্দিন জীবনে আরও আরাম ও নিরাপত্তা আনবে বলেই আশা সংশ্লিষ্ট মহলের।