আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরান-ইসরাইল যুদ্ধবিরতি এখন থেকে কার্যকর। মঙ্গলবার (২৪ জুন) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানায় সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ট্রুথ সোশ্যালে একটি পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘যুদ্ধবিরতি এখন কার্যকর। দয়া করে এটি লঙ্ঘন করবেন না।’
এর আগে ট্রাম্প ইরান-ইসরাইলের যুদ্ধবিরতির দাবি করেন। ইরাক ও কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের হামলার পর যুদ্ধবিরতির দাবি করেন তিনি। ট্রাম্প আরও বলেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে ধাপে ধাপে ২৪ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি প্রক্রিয়া শুরু হবে। যেখানে ইরান একতরফাভাবে সমস্ত কার্যক্রম বন্ধ করে দেবে। ১২ ঘণ্টা পরে ইসরাইল একই পদক্ষেপ নেবে।
কিন্তু ইসরাইল আনুষ্ঠানিকভাবে তখন যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। অন্যদিকে ইরান বলেছিল, যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো ধরনের সমঝোতা হয়নি।
ইরান জানায়, ইসরাইল হামলা বন্ধ করলে তারাও জবাব দেয়া থামাবে। কিন্তু হামলা বন্ধ না হলে শেষ মিনিট পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবে ইরান। এরপর সকালে ইসরাইলে ছয় দফা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। হামলায় চার ইসরাইলি নিহতের দাবি করা হয়।
এরপরই যুদ্ধবিরতি শুরুর ঘোষণা দেয় ইরান। অন্যদিকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মতির কথা জানিয়েছে ইসরাইলও। গত ১৩ জুন ইরানে প্রথম হামলা চালায় ইসরাইল। এরপর প্রতিশোধমূলক হামলা শুরু করে ইরানও।
উল্লেখ্য, কোনো প্রকার উসকানি ছাড়াই গত ১৩ জুন দিনগত রাত হঠাৎ ইরানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের এই অভিযানে রাজধানী তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা, পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র ও আবাসিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইহুদিবাদী সেনারা।
হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, দেশটির ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) প্রধান কমান্ডার হোসেইন সালামি, খাতাম আল-আনবিয়া সদরদপ্তরের কমান্ডার ও বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মেজর জেনারেল গোলাম আলি রশিদ ও দশজন পরমাণু বিজ্ঞানীসহ ৫০০ এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
ইসরায়েলের হামলার পর পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩ নামে’ অভিযান শুরু করে ইরান। তেহরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ভেদ করে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানছে। এতে হতাহত কম হলেও ইসরায়েলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।
দুই দেশের মধ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যে গত ২১ জুন দিনগত রাতে ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। জবাবে সোমবার রাতে কাতার ও ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালায় তেহরান।