ইরান থেকে পাকিস্তান হয়ে দেশে ফিরবে ৭০ বাংলাদেশি

Posted on June 19, 2025

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে তেহরানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং প্রয়োজনে দেশে ফেরাতে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ সরকার। এরই মধ্যে বাংলাদেশ দূতাবাসের কূটনীতিক ও সাধারণ বাংলাদেশি নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে প্রায় ৭০ জন বাংলাদেশিকে পাকিস্তান হয়ে দেশে ফেরানোর প্রস্তুতি চলছে।

তেহরানের কেন্দ্রস্থলে, যেখানে কূটনীতিকদের আবাসিক এলাকা অবস্থিত, সেখানে একাধিক ভবন ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব ওয়ালিদ ইসলামের বাসভবনও রয়েছে। তবে সৌভাগ্যক্রমে হামলার সময় তিনি তেহরান থেকে দূরে সরকারি কাজে অবস্থান করছিলেন।

ওয়ালিদ ইসলাম এক ফেসবুক পোস্টে জানান, তার বাসাটি ইরান নৌবাহিনীর বেজক্যাম্পের কাছাকাছি হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, তার বাসা লক্ষ্য করে সরাসরি কোনো হামলা হয়নি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ টি এম আবদুর রউফ মণ্ডল জানিয়েছেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় দূতাবাস তৎপর রয়েছে এবং ঢাকা থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

কূটনৈতিক সূত্র জানায়, বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মীদের পরিবারসহ প্রায় ৪০ জনকে ইতোমধ্যে তেহরান থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরের একটি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তারা দিনে দূতাবাসে এসে কাজ করছেন এবং রাতে নিরাপদ স্থানে ফিরে যাচ্ছেন। কারণ, রাতেই বেশি হামলার ঝুঁকি থাকছে।

এছাড়া ইরানে থাকা যে ৭০ জন বাংলাদেশি নিজ দেশে ফিরতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, তাদেরকে পাকিস্তান হয়ে ফেরত আনার চেষ্টা চলছে। পাকিস্তান সরকার নীতিগতভাবে সম্মতি দিয়েছে, তবে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আনুষ্ঠানিক অনুমতি পেতে কয়েকদিন সময় লাগবে বলে জানা গেছে। ইসলামাবাদে বাংলাদেশের হাইকমিশন বিষয়টি নিয়ে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক পর্যায়ের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ইরানে প্রায় ২ হাজার ৫০০ বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে প্রাথমিকভাবে প্রায় ৩০০ জনকে দূতাবাসের ব্যবস্থাপনায় নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হতে পারে।

সাম্প্রতিক হামলার ঘটনায় আতঙ্কিত প্রবাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও স্বেচ্ছায় দেশে ফেরানোর বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ সরকার ও কূটনৈতিক মিশন গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।