লিবিয়ার বন্দিশালা থেকে দেশে ফিরলেন ১৫৮ বাংলাদেশি

Posted on June 18, 2025

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির একটি বন্দিশালায় আটক থাকা ১৫৮ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। মঙ্গলবার (১৭ জুন) সকালে লিবিয়ার ত্রিপোলির তাজুরা ডিটেনশন সেন্টার থেকে বুরাক এয়ারের একটি ফ্লাইটে তারা ঢাকায় পৌঁছান।

প্রত্যাবাসনকৃত এসব বাংলাদেশি নাগরিককে অবতরণের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আর্ন্তজাতিক অভিবাসন সংস্থার কর্মকর্তারা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান।

লিবিয়ার ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা বিষয়টি ইনফোমাইগ্রেন্টসকে নিশ্চিত করে জানিয়েছে, ত্রিপোলির তাজুরা ডিটেনশন সেন্টারে আটক ছিলেন এই ১৫৮ জন বাংলাদেশি নাগরিক৷ জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর সহযোগিতায় তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, বাংলাদেশিদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনে আইওএম বুরাক এয়ারের একটি বিশেষ ফ্লাইট ভাড়া করে, এটির নম্বর ইউজেড ২২২৷ ১৬ জুন (সোমবার) লিবিয়ার ত্রিপোলির মেতিগা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ১০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে উড্ডয়ন করে বিমানটি৷ ১৭ জুন (মঙ্গলবার) সকাল পৌনে ৬টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে বাংলাদেশিদের নিয়ে আসা বিমানটি।

অবতরণের পর ১৫৮ জন বাংলাদেশি নাগরিককে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার কর্মকর্তারা।

সূত্র জানিয়েছে, লিবিয়া থেকে ফেরত পাঠানো বাংলাদেশিদের একটি বড় অংশ ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ইউরোপে পোঁছানোর আশায় লিবিয়া গেছেন৷ তাদের অনেকেই মানবপাচারকারীদের ফাঁদে পড়েছিলেন। কিন্তু লিবিয়া পৌঁছানোর পর তাদের বেশিরভাগই বিভিন্ন সময়ে অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন৷ শেষপর্যন্ত তারা আটক ছিলেন তাজুরা ডিটেনশন সেন্টারে।

বিমানবন্দরে লিবিয়া থেকে ফিরে আসা বাংলাদেশিরা যেন আর কখনও এই ভয়ঙ্কর পথে পা না বাড়ান, সেজন্য তাদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, আগের দিন লিবিয়ার অভিবাসন অধিদপ্তরের অভ্যর্থনা হলে দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ও মিনিস্টার (রাজনৈতিক) কাজী আসিফ আহমেদের নেতৃত্বে দূতাবাসের একটি প্রতিনিধি দল প্রত্যাবাসিত অভিবাসীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাদের বিদায় জানান।

দেশে ফেরত পাঠানোর আগে চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স তাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে দূতাবাসের নেওয়া পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন। একইসঙ্গে আগামীতে নিজেদের দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে নিয়মিত পথে বিদেশে আসার পরামর্শ দেন তিনি।

তারও আগে তাজুরা ডিটেনশন সেন্টার পরিদর্শন করে আটক বাংলাদেশিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন দূতাবাসের কর্মকর্তারা। তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে তাদের প্রত্যেকের জন্য ট্রাভেল পারমিট ইস্যু করে দূতাবাস। পরবর্তীতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে এবং আইওএম-এর সার্বিক সহযোগিতায় বাংলাদেশিদের বিনা খরচে দেশে ফেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে।