পিএসএলের চ্যাম্পিয়ন সাকিব-মিরাজ-রিশাদদের লাহোর

Posted on May 26, 2025

স্পোর্টস ডেস্ক : পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) ফাইনালে কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সকে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো শিরোপা জিতেছে লাহোর কালান্দার্স।

রোববার (২৫ মে) রাতে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত রোমাঞ্চকর ফাইনালে ৬ উইকেটের দাপুটে জয় পায় শাহিন শাহ আফ্রিদির নেতৃত্বাধীন দলটি। কোয়েটার দেয়া ২০২ রানের লক্ষ্যে ১ বল বাকি থাকতেই জয়লাভ করে শাহিন শাহ আফ্রিদির নেতৃত্বে সাকিব আল হাসান, রিশাদ হোসেনদের দল।

এদিন লাহোরের হয়ে ৪২ রান দিয়ে ১ উইকেট তুলে নেন বাংলাদেশের লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। শাহীন শাহ আফ্রিদি নেন ৩ উইকেট এবং সালমান মির্জা ও হারিজ রউফ ২ উইকেট করে নেন। সিকান্দার রাজা নেন ১ উইকেট।

এদিকে ওপেনিং জুটিতে ৩৯ রান সংগ্রহ করে লাহোর। ১০ বলে ১১ রান তোলেন ফখর জামান। তারপর জুটি বাঁধেন মোহাম্মদ নাঈম ও আব্দুল্লাহ শফিক। নাঈম ২৭ বলে ৪৬ রানের ইনিংস খেলেন ও শফিক ২৮ বলে ৪১ রান সংগ্রহ করেন।

শেষ দিকে অবশ্য কিছুটা হতাশা সৃষ্টি হয়েছিল। ম্যাচ যেন প্রায় ফসকে যাওয়ার মতো হয়েছিল লাহোরের। তবে ১৭তম ওভারের শেষ দুই বলে দুই বাউন্ডারিতে ১০ রান সংগ্রহ করে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেন সিকান্দার রাজা। আর আরেক প্রান্তে ঝড় তোলেন কুশল পেরেরা। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে হাফ-সেঞ্চুরি করেন। শেষের আগের ওভারে সংগ্রহ করেন ১৮ রান।

শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। স্ট্রাইকে ছিলেন রাজা। প্রথম বলেই ওয়াইড। দ্বিতীয় বলে ১ রান সংগ্রহ করেন। স্ট্রাইকে ফেরেন পেরেরা। তারপর ২ বলে ৩ রান আসে। আবারও স্ট্রাইকে রাজা। এবার ৩ বলে ৮ রান দরকার। দুর্দান্ত এক ছক্কা হাঁকান। এর পরের বলে চার মেরে ১ বল বাকি থাকতেই জয় নিশ্চিত করেন সিকান্দার।

এ জয় দিয়েই পিএসএলের ৪ বছরের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো জয় পেল লাহোর কালান্দার্স। এর আগে ২০২২ ও ২০২৩ সালের আসরেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল লাহোরের দলটি।

ভারত ও পাকিস্তানের সংঘাতের জেরে স্থগিত হওয়া আসর পুনরায় শুরুর পর সাকিবকে দলে নেয় লাহোর। এই আসর দিয়ে প্রায় ছয় মাস পর ক্রিকেটে ফেরেন ৩৮ বছর বয়সি অলরাউন্ডার। যদিও তিন ম্যাচের দুটিতে শেষ দিকে ব্যাটিং পেয়ে রানের দেখা পাননি একটিতেও, বল হাতে প্রাপ্তি কেবল একটি উইকেট।

প্লে-অফের আগে মিরাজকে দলে নেয় লাহোর। প্রথমবারের মতো দেশের বাইরে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলতে গিয়ে কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ না পেয়েই চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেলেন এই অলরাউন্ডার।

এদিকে ট্রফি উঁচিয়ে ধরার পাশাপাশি অর্থ পুরস্কারও পেয়েছে লাহোর। এ ছাড়া রানার্স-আপ ও অন্যান্য ক্যাটাগরিতেও থাকছে প্রাইজমানি। চ্যাম্পিয়ন হিসেবে পেয়েছে ৫ লাখ মার্কিন ডলার তথা ১৪ কোটি পাকিস্তানি রুপি জিতেছে লাহোর। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬ কোটি ৫ লাখ টাকার কাছাকাছি। রানার্স-আপ হওয়া কোয়েটা গ্লাডিয়েটর্স পেয়েছে ২ লাখ মার্কিন ডলার বা ৫ কোটি ৬০ লাখ পাকিস্তানি রুপি। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ২ কোটি ৪১ লাখ টাকার বেশি।

এবারের আসরে প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট হয়েছেন কোয়েটার হয়ে খেলা হাসান নেওয়াজ। ব্যাট হাতে ৩৯৯ রান করে টুর্নামেন্টসেরা হিসেবে পেয়েছেন ৩০ লাখ পাকিস্তানি রুপি। এর পাশাপাশি আরেকটি পুরস্কারও পেয়েছেন নেওয়াজ—একটি বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি বিওয়াইডি সিল।

এ ছাড়া সেরা ব্যাটসম্যানের পুরস্কার হিসেবে আরও ৩৫ লাখ পাকিস্তানি রুপিও জিতেছেন নেওয়াজ। এ ছাড়া সেরা বোলারের পুরস্কার জিতেছেন লাহোর কাপ্তান শাহিন আফ্রিদি। তিনি পেয়েছেন ৩৫ লাখ রুপি। এ ছাড়া আবদুস সামাদ (সেরা ফিল্ডার), সিকান্দার রাজা (সেরা অলরাউন্ডার), মোহাম্মদ হারিস (সেরা উইকেটকিপার) এবং মোহাম্মদ নাঈমও (সেরা উদীয়মান) ৩৫ লাখ রুপি পেয়েছেন।