শেরপুরে ভুট্টা চাষে কৃষকদের স্বপ্নপূরণ: লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দ্বিগুণ উৎপাদন

Posted on May 10, 2025

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় ভুট্টা চাষে কৃষকদের স্বপ্নপূরণ হয়েছে। ভালো ফলন ও দামও ভালো থাকায় কৃষকের মুখে হাঁসি ফুটেছে। অন্যদিকে ধান চাষের তুলনায় কম খরচে দ্বিগুণ লাভ হওয়ার কথা জানিয়েছেন কৃষকরা। আবাদী জমির পাশাপাশি করতোয়া ও বাঙ্গালী নদীর বুকে ব্যাপক হারে ভুট্টা চাষ করা হয়েছে।

কৃষি অফিস বলছেন, ভুট্টা চাষে কৃষকদের এই সাফল্য কৃষি খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। কৃষকরা এখন ভুট্টা চাষকে তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু বাস্তবে চাষ হয়েছে ২ হাজার ৬২৫ হেক্টর। বাস্তবে আরো বেশি হবে। কারণ করতোয়া নদী ও বাঙ্গালি নদী শুকিয়ে যাওয়ায় সেখানেও চাষ হয়েছে। এতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি জমিতে এবার ভুট্টা চাষ হয়েছে। বর্তমানে কর্তন হয়েছে ১ হাজার ৩২০ হেক্টর। প্রতি বিঘাতে গড়ে ৪০ মন হারে শুকনা ভুট্টা উৎপাদন হয়েছে।

জানা যায়, শেরপুর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে খানপুর, গাড়িদহ, সুঘাট ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ভুট্টা চাষ হয়েছে। পুরো দমে ভুট্টা তুলতে শুরু করেছেন কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় প্রতি বছরের চেয়ে এবার ভুট্টা চাষে ভালো ফলন ও দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে।

গাড়িদহ ইউনিয়নের পারভবানিপুর গ্রামের মাহবুবুর রহমান জানান, ৫ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। এর মধ্যে ১ বিঘা জমির ভুট্টা তুলেছেন। সেখানে ১ বিঘা জমি থেকে ৬৫ মন ভুট্টা হয়েছে। প্রতি মন শুকনো ভুট্টা ১ হাজার ১শ টাকা এবং ভেজা ৯শ টাকা। এক বিঘা জমিতে ১২ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। সেখানে ৫০ হাজার টাকা বিক্রয় করা হবে। এখানে ধান চাষ করলে ২০ হাজার টাকা বিক্রয় করা যেত। সেই তুলনায় অল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় ভুট্টা চাষে কৃষকরা খুশি।

গোপালপুর এলাকার কৃষক বাদশা ও কুদ্দস বলেন, ৪ বিঘা করে ভুট্টা চাষ করেছি। মাত্র ১০ থেকে ১১ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সেখানে প্রতি বিঘার ভুট্টা ৪৫ হাজার টাকা করে বিক্রয় করা হয়েছে।

শালফা এলাকার কৃষক আকবর আলী জানান, আমি ১০ বিঘা জমিতে চাষ করেছি সেখানে ৫ বিঘা তুলেছি গড়ে প্রতি বিঘা জমিতে ৬৩ মন করে হয়েছে। বর্তমানে জমি থেকে তুলেই সর্বনিম্ন ৯শ টাকা মন দরে ৪ বিঘা জমির ভুট্টা বিক্রয় করেছি।

উপজেলা কৃষি অফিসার ফারজানা খাতুন বলেন, ভুট্টা চাষে কৃষকদের আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ভুট্টা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাওয়ায় আগামী মৌসুমে আরও বেশি জমিতে ভুট্টা চাষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।