শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় অধ্যক্ষ নিয়োগ পরীক্ষা কলেজ গেট ভিতর থেকে বন্ধ স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দেওয়ায় স্বচ্ছতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
শনিবার (৩ মে) বিকেল ৪টায় শেরপুর টাউন ক্লাব পাবলিক লাইব্রেরি মহিলা অনার্স কলেজে নিয়োগ পরীক্ষা এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, শনিবার দুপুর ২টা থেকে শেরপুর টাউন ক্লাব পাবলিক লাইব্রেরি মহিলা অনার্স কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগ পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। সেখানে দুপুর ১টার আগেই কয়েকজন ও সাড়ে ৩টার দিকে কয়েকজন স্থানীয় সাংবাদিকরা সংবাদ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে কলেজ ক্যাম্পাসে পৌঁছান। কিন্তু কলেজ গেট ভিতর থেকে বন্ধ দেখতে পান তারা।
সাংবাদিকরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও জানানো হয়—কোনো সাংবাদিক ভেতরে প্রবেশ করতে পারবেন না। এভাবে পরীক্ষা নেওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। পরে পরীক্ষা তদারকির দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (শিক্ষানবিশ) ফয়সাল মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, পরীক্ষা চলাকালে বাইরের কেউ কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না। এমনকি পাবলিক পরীক্ষাতেও এটি প্রযোজ্য। পরীক্ষা শেষে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা যাবে।
তবে প্রায় দেড় ঘণ্টা গেটের বাইরে অপেক্ষার পর সাংবাদিকরা বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ভেতরে প্রবেশের অনুমতি পান। এরপর তারা জানতে চান, পরীক্ষাকেন্দ্রে সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দেওয়ার বিষয়ে কোনো সরকারি নির্দেশনা বা ১৪৪ ধারা জারি ছিল কি না। উত্তরে ম্যাজিস্ট্রেট জানান, এটি নিরাপত্তার স্বার্থে করা হয়েছে, তবে কোনো নির্দিষ্ট নির্দেশনা ছিল না। এরপর তিনি মৌখিকভাবে জানান, অধ্যক্ষ পরীক্ষায় ১৩ জন আবেদন করেছে, সেখানে ১০জন উপস্থিত হয়েছে এবং ৩জন অনুউপস্থিত রয়েছে। তবে তাদেন কোন নাম ঠিকানা কোন কিছুই দেননি।
এ বিষয়ে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক খান বলেন, সাধারণত তথ্য সংগ্রহের জন্য সাংবাদিকদের কেন্দ্রে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে এখানে কেন ব্যতিক্রম হলো, সেটি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাই ভালো বলতে পারবেন।
ঘটনাটি নিয়ে সাংবাদিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দিয়ে কর্তৃপক্ষ অগণতান্ত্রিক ও স্বচ্ছতা-বিরোধী আচরণ করেছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই।
সাংবাদিকদের মতে, নিয়োগ পরীক্ষার মতো একটি সংবেদনশীল বিষয়ে গণমাধ্যমের উপস্থিতি স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে। অথচ সেখানে প্রবেশে বাধা দেওয়া হলে জনমনে সন্দেহ তৈরি হওয়াটা স্বাভাবিক। তারা বলেন, এটি কোনো সামরিক বা জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত পরীক্ষা ছিল না, যে কারণে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা থাকা উচিত।
এদিকে কলেজের সভাপতি বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহি সদস্য একেএম মাহবুবার রহমান হারেজকে বাহির থেকে কল দিলেও তিনি মোবাইল রিসিভ করেনি।
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাবিবুল্লাহ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন পরীক্ষার্থী জানান, পরীক্ষা ঘিরে আগে থেকেই কিছু গুঞ্জন ছিল, আর সাংবাদিকদের বাধা দেওয়ার ঘটনায় সেই সন্দেহ আরও বেড়েছে।
প্রকাশ্যে পরীক্ষার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলে, সেখান থেকে যোগ্য প্রার্থী বাছাই নিয়েও জনমনে আস্থা নষ্ট হয়—এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ ব্যাপারে বগুড়া জেলা প্রসাশক হোসনা আফরোজা বলেন, সাংবাদিকদের অবশ্যই তথ্য দেবে। আমি কথা বলছি। আপনাদের তথ্য দেবে। এর দেড় ঘন্টা পার হলেও কোন তথ্য দেওয়া হয়নি।