নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি বছরে পবিত্র হজের প্রথম ফ্লাইট আগামী ২৯ এপ্রিল থেকে শুরু হবে বলে জানিয়েছেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, এ বছর পবিত্র হজের খরচ ১ লাখ টাকার চেয়ে বেশি কমেছে। তবে ডকুমেন্ট সংক্রান্ত জটিলতায় ১০ হাজার ৪৮৭ জন হজযাত্রী যেতে না পারার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। হজ্জের প্রথম ফ্লাইট ২৯ এপ্রিল সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবে।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, হজ ব্যবস্থাপনায় গাফেলতি পেলে অভিযুক্ত এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল ও ফৌজদারি মামলা করা হবে। হজ যাত্রীর সার্বক্ষণিক অবস্থান শনাক্তসহ সব তথ্য নিয়ে অ্যাপস চালু করা হচ্ছে।
উপদেষ্টা বলেন, চলতি বছরে সরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধিত পাঁচ হাজার ২০০ জন হজযাত্রীর জন্য আমরা সব আনুষ্ঠানিকতা তথা-মিনায় ও আরাফায় তাঁবু বরাদ্দ ও ক্যাটারিং সার্ভিস কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি, বাড়ি/হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি, পরিবহন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি অনেক আগেই শেষ করেছি। এখন তাদের ভিসার কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং আমরা আশা করছি অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ভিসা প্রক্রিয়াকরণ শেষ হবে।
উপদেষ্টা বলেন, এ বছর আমাদের হজযাত্রীদের একটি বিরাট অংশ অর্থাৎ ৮১ হাজার ৯০০ জন হজযাত্রী বেসরকারিভাবে এজেন্সির মাধ্যমে হজ পালনের জন্য নিবন্ধন করেছেন। সৌদি সরকারের এজেন্সি প্রতি ন্যূনতম হজযাত্রীর বাধ্যবাধকতার কারণে মোট ৭৫৩টি এজেন্সির অধীনে নিবন্ধিত এসব হজযাত্রী ৭০টি লিড এজেন্সির মাধ্যমে হজ পালন করবেন।
উপদেষ্টা আরও বলেন, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধান, কঠোর মনিটরিং ও ফলো-আপ তৎপরতার কারণে সৌদি সরকারের বেঁধে দেওয়া সময় ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই বেসরকারিভাবে এজেন্সির মাধ্যমে নিবন্ধিত হজযাত্রীদের জন্য কেবল মিনা ও আরাফায় তাঁবু বরাদ্দ গ্রহণ এবং ক্যাটারিং সার্ভিস কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি-এই দুটি অ্যাক্টিভিটি শেষ করা হয়।
সরকারি হজ প্যাকেজ ২০২৫
চলতি বছর হজের খরচ গত বছরের তুলনায় ১ লাখ টাকার বেশি কমানো হয়েছে। সরকার দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে: প্যাকেজ-১: মসজিদুল হারাম থেকে ৩ কিমি দূরত্বে আবাসন খরচ: ৪,৭৮,২৪২ টাকা। প্যাকেজ-২: মসজিদুল হারাম থেকে ১.৫ কিমি দূরত্বে আবাসন। খরচ: ৫,৭৫,৬৮০ টাকা। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় সাধারণ প্যাকেজের খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে ৪,৮৩,১৫৬ টাকা।
এবারের হজ প্যাকেজ নির্ধারণে সৌদি রিয়ালের মান ধরা হয়েছে ৩২.৫০ টাকা, যেখানে গত বছর ছিল ২৯.৭৪ টাকা। ফলে সৌদি অংশের কিছু খরচ বাড়লেও, সামগ্রিকভাবে হজের খরচ কমানো সম্ভব হয়েছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এবার হজ ফ্লাইট ও যাত্রী ব্যবস্থাপনায় উন্নত প্রযুক্তি ও সেবা নিশ্চিত করা হয়েছে। জেদ্দা ও মদিনায় এবং ঢাকায় হজ অফিসে পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ করা হয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ও অন্যান্য ফ্লাইট অপারেটররা নির্ধারিত সময় অনুযায়ী প্রাক-হজ ও পোস্ট-হজ ফ্লাইট পরিচালনা করবে। এ বছর মোট ১,২৭,১৯৮ জন মুসল্লি হজে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন, যার মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫,০০০ এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১,১২,১৯৮ জন যাবেন।
উল্লেখ্য, হিজরি ১৪৪৬ সনের ৯ জিলহজ, অর্থাৎ চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৪ বা ৫ জুন ২০২৫ তারিখে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।