মির্জাগঞ্জে মিরাজ বাহিনীর আতঙ্কে এলাকাবাসী

Posted on April 5, 2025

মোঃ সোহাগ হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার: পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার মজিদবাড়িয়া ইউনিয়ন এখন মিরাজ বাহিনীর আতঙ্কে কাপছে। ফিল্মের খলনায়ক স্টাইলে তার চলাফেরা। ২০-২৫টি মোটরসাইকেলের বিশাল বহর নিয়ে ইউনিয়নের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত চষে বেড়ায় সে। সাথে থাকে রড, হকিসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র। কেউ তার অবাধ্য হলে তার ওপর চালায় নির্যাতন। এমনই অভিযোগ মজিবাড়িয়া ইউনিয়নবাসীর। নাম তার মোঃ মিরাজ মিয়া (৩০)। সে উপজেলার মজিবাড়িয়া ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া গ্রামের মৃত বারেক মিয়ার ছেলে ও উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক।

স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, ঈদের ছুটিতে মজিদবাড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক ছাত্রদলের সভাপতি মোঃ নাজমুল আহসান সজল ও সাইদুল ঢাকা থেকে বাড়িতে আসে। এসময় মিরাজের মাদকারবারসহ বিভিন্ন অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করলে, তাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। পরে ২ এপ্রিল সকালে বিশাল মোটরসাইকেল বহর নিয়ে এলাকায় দেশীয় অস্ত্রসহ সজল ও সাইদুলকে খুঁজে বেড়ায় মিরাজ বাহিনী। এক পর্যায়ে খলিশাখালী বাজারে দেখতে পেয়ে তাদের ধাওয়া ও হামলা করে মিরাজ বাহিনী। পরবর্তীতে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও জনতার তোপের মুখে পালিয়ে যায় ওই বাহিনী। এঘটনা সিসি ফুটেজে ধারনকৃত আছে। পালিয়ে এসে সজলকে ফোনে গুলি করে হত্যার হুমকি প্রদান করে মিরাজের সহযোগী আবুল কালাম।

এবিষয়ে ঘটনার দিন রাতে নাজমুল আহসান সজল মির্জাগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন, যার নং- ৬৩। কিছু দিন পূর্বে দক্ষিণ চালিতাবুনিয়া গ্রামের ইমাম হোসেন নামে এক ছাত্রদল কর্মীকে জেয়াফতের অনুষ্ঠান থেকে তুলে নিয়ে মারধর করেছে বলে, সে জানায়। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে দখলবাজি ও মাদককারবারীর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মিন্টু মিয়া, সগির খানসহ একাধিক স্থানীয়রা বলেন, মিরাজ বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। সবসময় ২০-৩০ টা মোটরসাইকেলে লাঠি, রড নিয়ে এলাকায় ঘুরে বেড়ায়। ঈদের দুই দিন পর লোকজন নিয়ে মিরাজ সাইদুল ও সজলকে মারধর করার জন্য খুঁজে বেড়ায় ও বিভিন্ন গালমন্দ করে।

খলিশাখালী বাজারের ব্যবসায়ী ইদ্রিস মাহমুদ, সাইদুল মোল্লা বলেন, ঈদের ২য় দিন দুপুরে মিরাজ বিশাল মোটরসাইকেল শোডাউন দিয়ে খলিশাখালী বাজারের এসে সাইদুল ও সজলকে ধাওয়া এবং হামলা করে। এসময় তাদের হাতে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র ছিলো। পরে আমরা সকল ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা পাল্টা ধাওয়া দিলে ওরা পালিয়ে যায়।

নাজমুল আহসান সজল ও সাইদুল বলেন, এলাকায় মিরাজ একটি বাহিনী গঠন করে তুলেছে। ওরা এলাকায় মাদককারবারসহ বিভিন্ন অনৈতিক কাজ করে বেড়ায় এলাকায়। এসব কাজে প্রতিবাদ করাতে আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে একাধিক বার হামলা করে। এমনকি গুলি করে প্রাণনাশের ও হুমকি দেয়। এবিষয়ে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

অভিযুক্ত মোঃ মিরাজ মিয়া বলেন, আমি মাদকের সাথে জড়িত না। আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ মিথ্যা।

মিরাজের সহযোগী আবুল কালাম বলেন, আমি কোন হুমকি দেইনি। সজল ভাই আমার আত্মীয়তার ও তার সাথে আমার ভালো সম্পর্ক।

জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শামিম চৌধুরী বলেন, এই ব্যাপারে আমি আপনার কাছ থেকে প্রথম শুনলাম। ঘটনা সত্য হলে তদন্ত পূর্বক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মির্জাগঞ্জ থানার ওসি মোঃ শামীম হাওলাদার বলেন, এবিষয়ে একটি জিডি হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এলাকায় তার অভিযোগের বিষয়ে লোক মুখে কিছু সত্যতা পাওয়া গেছে।