আলু আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার

Posted on October 30, 2023

অর্ধ-বাণিজ্য ডেস্ক: বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় বাজারে আলু সরবরাহ বৃদ্ধি ও বাজারদর স্থিতিশীল রাখতে আলু আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

সোমবার (৩০ অক্টোবর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগ্রহী আমদানিকারকদের মন্ত্রণালয়ে আবেদন করার অনুরোধ জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

এর আগেও অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে আলু আমদানির পরিকল্পনা করেছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। পরে গত ৭ অক্টোবর এর বিরোধিতা করে মতামত দিয়েছিল কৃষি মন্ত্রণালয়। ফলে তখন ব্যবসায়ীদের আলু আমদানির অনুমতি দিতে পারেনি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে ৭ অক্টোবর গণমাধ্যমকে জানান, আগামী দুই মাস বা তার বেশি সময়ের জন্য দেশীয় ভোক্তাদের চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশে পর্যাপ্ত আলু মজুদ রয়েছে। তাই আলু আমদানির প্রয়োজন নেই। নভেম্বরের শেষের দিকে নতুন জাতের আলু বাজারে আসতে শুরু করবে।

পরে ২০ অক্টোবর অব্যাহত দাম বৃদ্ধি রোধে খুচরা বাজারে বিক্রির জন্য প্রতি কেজি আলুর দাম ৩৫ টাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর আলু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ দাম নির্ধারণ করে দেয়। পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি ৩০ টাকা এবং হিমাগারে ২৭ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।

কিন্তু সরকারের নির্ধারিত দামের থেকে অনেক বেশি মূল্যে বাজারে আলু বিক্রয় হচ্ছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। অভ্যন্তরীণ বাজারে আলুর এই দাম নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে আজ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আলু আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এদিকে গত ১৪ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ, আলু ও ডিম- এই তিন পণ্যের দাম নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

এতে বলা হয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষি পণ্যের উৎপাদন, চাহিদা ও মূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা বিষয়ক এক সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়সহ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, কৃষি বিপণন অধিদফতর, প্রাণিসম্পদ অধিদফতর, এফবিসিসিআই এবং বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

সভায় কৃষিপণ্য বিপণন আইন, ২০১৮ অনুযায়ী কৃষি পণ্যের সর্বোচ্চ যৌক্তিক মূল্য এবং মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়য়ের ডিমের সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রতি কেজি আলুর কোল্ড স্টোরেজ পর্যায়ে দাম হবে ২৬ থেকে ২৭ টাকা এবং খুচরা মূল্য হবে ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা। কেজিপ্রতি দেশি পেঁয়াজের পাইকারি দাম হবে ৫৩ থেকে ৫৪ টাকা এবং খুচরা দাম হবে ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা। এ ছাড়া প্রতি পিস ডিমের উৎপাদন পর্যায়ে দাম হবে সাড়ে ১০ টাকা এবং খুচরা দাম হবে ১২ টাকা। সেই হিসাবে প্রতি ডজনের মূল্য দাঁড়ায় ১৪৪ টাকা। কিন্তু বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায়। কোথাও কোথাও হালিতে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা বিক্রিরও অভিযোগ রয়েছে।

দেশের বাজারে ডিমের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় তা সামাল দিতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ডিম আমদানির অনুমোদন দেয় সরকার। তিন দফায় মোট ১৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেয়া হলেও ৪০ দিন পরও সেই ডিম দেশে এসে পৌঁছাইনি। এর মধ্যেই আলু আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হলো। এখন বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকায়।