চুয়াডাঙ্গায় নানাকে হত্যা মামলায় নাতনির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

Posted on October 26, 2023

আহসান আলম, চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি : চুয়াডাঙ্গায় নানাকে বিষাক্ত ইনজেকশন পুশ করে হত্যা মামলায় এক নারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। একই মামলায় খালাস দেওয়া হয়েছে এক ব্যক্তিকে।

বুধবার (২৫ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জিয়া হায়দার আসামীর উপস্থিতিতে ওই রায় দেন।

কারাদণ্ডপ্রাপ্ত কামনা খাতুন (২০) চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেলগাছি গ্রামের কামাল হোসেনের মেয়ে। খালাসপ্রাপ্ত রাশেদ আলী চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গাইদঘাট গ্রামের আবু সাঈদের ছেলে ।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২১ সালের ২৯ নভেম্বর মধ্যরাতে চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের বেলগাছি গ্রামে নিজ বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন শামসুল শেখ। এসময় তার ঘাড়ে বিষাক্ত ইনজেকশন পুশ করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ১ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পরে শামসুল শেখের ছেলে রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় নাতনি কামনা খাতুনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার স্বীকারোক্তীতে উন্মোচন হয় হত্যাকাণ্ডের আসল রহস্য। সাবেক স্বামী জাহিদ হাসানের সঙ্গে তালাকের আগেই কামনা খাতুন রাশেদ নামে এক ব্যক্তির সাথে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। সেই সম্পর্কের কথা জেনে যান নানা। বকাঝকাও করেন। পরে রাশেদের বুদ্ধিতেই ঘুমন্ত নানার ঘাড়ে কীটনাশক পুশ করেন কামনা। পরকীয়া প্রেমকে বাঁচাতে নিজ হাতেই নানাকে খুন করেন কামনা। দোষ চাপান সাবেক স্বামী হাসানের ওপর। মামলাটি তদন্ত শেষে ২০২২ সালের ২০ জুলাই কামনা খাতুন ও রাশেদ আলীকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদুর রহমান।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) অ্যাডভোকেট বেলাল হোসেন জানান, কামনা খাতুন তার প্রেমিক রাশেদ আলীকে জড়িত করে ১৬৪ ধারায় চুয়াডাঙ্গা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নানা শামসুল শেখকে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। ১৮ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ বিকেলে ওই রায় ঘোষনা করেন বিচারক।