‘আলেপের বিরুদ্ধে গুম করা ব্যক্তির স্ত্রীকে রোজা ভাঙিয়ে ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে’

Posted on February 20, 2025

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : পুলিশের সাবেক এডিশনাল এসপি এবং র‍্যাবের সাবেক কোম্পানি কমান্ডার আলেপ উদ্দিনের বিরুদ্ধে গুম করা ব্যক্তির স্ত্রীকে রোজা ভাঙিয়ে ধর্ষণের তথ‍্য প্রমাণ পেয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। আলেপ উদ্দিন অসংখ্য গুম, খুন, নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলেও জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটার।

তাজুল ইসলাম বলেন, এক আসামিকে গুম করে রাখার সময়ে তার স্ত্রীকে রমজান মাসে রোজা ভাঙিয়ে ধর্ষণ করেন আলেপ উদ্দিন, এর তথ্য প্রমাণ আমাদের হাতে এসেছে।

গুম বা বন্দিদের ওপর আলেপের নির্যাতনের বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটার বলেন, আলেপ উদ্দিন অনেক ব্যক্তিকে অপহরণ করে বছরের পর আটকে রেখেছিল। নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন করেছিল। চোখ বেধে রেখে, ইলেকট্রিক শক দিয়ে এবং উল্টো করে ঝুলিয়ে রেখে অনেককে নির্যাতন করেছিল।

তিনি আদালতকে জানান, ‘২০১৮ সালে জনৈক বন্দিকে গুম করে তার স্ত্রীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন আলেপ। ভয়াবহভাবে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ভুক্তভোগী এর কিছুদিন পরই মৃত্যুবরণ করেন।

চিফ প্রসিকিউটার বলেন, গুম ও নির্যাতনসহ অমানবিক অপরাধের সবচেয়ে বেশি অভিযোগ আসা ব্যক্তিদের মধ্যে তিনি অন্যতম। জঘন্য কায়দায় বন্দীদের নির্যাতন, নারীবন্দীসহ গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের নারী সদস্যদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে আছে।

তিনি আরো বলেন, আমরা বিষয়গুলো ট্রাইব্যুনালকে জানিয়েছি। এমন নিষ্ঠুরতম অপরাধীর অপরাধের তদন্ত করতে সময় লাগবে, কারণ প্রতিদিনই ভিকটিমরা আমাদের কাছে নতুন নতুন অনেক অভিযোগ নিয়ে আসছেন। এসব তদন্ত শেষ হলে তাদের ব্যাপারে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া যেন শুরু করা যায় সে জন্য আমাদের তদন্ত সংস্থা দিন-রাত কাজ করছে।

গত ১৬ বছরে বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত গুম ও গুম-পরবর্তী নির্যাতনের মামলায় র‌্যাবের সাবেক কর্মকর্তা বরিশাল রেঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিনকে জিজ্ঞাসবাদের জন্য ২৬ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম আলেপকে নিয়ে একটি পোস্ট শেয়ার করেন। আলজাজিরার সাংবাদিক মউদুদ সুজনের ওই ফেসবুক পোস্টে লেখা, গুম হওয়া এক স্বামী বলছেন, ‘পবিত্র শবেকদরের দিন রোজা ভাঙিয়ে ধর্ষণ করা হয় তার স্ত্রীকে। এর আগেও প্রায় তিনবার ধর্ষণ করা হয়েছে স্বামীকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে। শেষবার ধর্ষণের পর স্ত্রীর মানসিক অবস্থার অবনতি হয় এবং কিছুদিন পরে মৃত্যুবরণ করেন।’

গত বছরের ১৩ নভেম্বর রাতে বরিশাল মহানগর এলাকা থেকে আলেপ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে বরিশাল গোয়েন্দা পুলিশ।