নিজস্ব প্রতিবেদক : মানিকগঞ্জের সিংগাইরে সরিষা ক্ষেতে ছত্রাকনাশক ‘গন্ডার’ স্প্রে করায় প্রায় ৫০ বিঘা জমির সরিষা সম্পূর্ন বিনষ্ট হয়েছে। উপজেলার সায়েস্তা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ফসলি মাঠে এ ঘটনা ঘটেছে। এতে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে বিরাজ করছে চরম হতাশা ও ক্ষোভ। ফসলের ক্ষতিপূরণসহ ছত্রাকনাশক ‘গন্ডার’ বন্ধের দাবি জানান ক্ষতিগ্রস্ত চাষীরা।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অসীম কুমার উপজেলার টান গোপালনগর চকে বিনষ্ট হওয়া সরিষা ক্ষেত পরিদর্শন শেষে সরিষা বিনষ্টের ব্যাপারে নিশ্চিত করে জানান – ছত্রাকনাশক গন্ডার স্প্রের কারনেই ক্ষেতের সরিষা নষ্ট হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একমি কোম্পানির ছত্রাকনাশক ‘গন্ডার’ সাহরাইল বাজারের সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী মনির হোসেন ফলন বেশি হওয়ার কথা বলে কৃষকদের কাছে অবাধে বিক্রি করছেন। মধ্য জানুয়ারি থেকে যেসব কৃষক এ কীটনাশক স্প্রে করেছেন তাদের সরিষাগুলোই পুড়ে গেছে।
অনুসন্ধ্যানে জানা গেছে, এ পর্যন্ত ২৫-৩০ জন কৃষকের প্রায় ৫০ বিঘা জমির ফসল সম্পূর্ন বিনষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে বালিয়াডাঙ্গী গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মোক্তার হোসেন জানান, তার ১৪০ শতাংশ জমির সরিষা গন্ডার স্প্রে’র ফলে পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি এর সুষ্ঠ বিচার ও ক্ষতিপূরন দাবি করেন। দক্ষিন সাহরাইল গ্রামের কৃষক বাবর আলী আক্ষেপ করে বলেন, এই বিষ দেয়ার পর আমার সরিষা পুইড়া ছাই হইয়া গেছে। ক্ষেতে গেলে চোখে পানি আসে। এছাড়াও ফসল হারিয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছেন, গোপালনগর গ্রামের আব্দুল জলিল, লক্ষীপুর গ্রামের মাজাহার, বালিয়াডাঙ্গী গ্রামের হালিমা খাতুন ও ইউনুছ, আঠারো পাইখা গ্রামের শেখ গোলাম মোস্তফা, মহিষদিয়া গ্রামের আব্দুল আলিমসহ আরো অনেকে।
কীটনাশক বিক্রেতা মনির হোসেন জানান, এ বছরই প্রথম এই বিষ আমি প্রায় ২৮ জন কৃষকের কাছে বিক্রি করেছি। যারাই এটি জমিতে স্প্রে করেছে তাদের ফসলগুলো এক সপ্তাহের ব্যবধানে সম্পূর্ন পুড়ে গেছে।
এ উপজেলায় দায়িত্বরত একমি কোম্পানির টেরিটরি অফিসার নিতাই চন্দ্র ফসল নষ্ট হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আমরা কৃষকের পাশে আছি, থাকবো।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ হাবিবুল বাশার চৌধুরী বলেন, ছত্রাকনাশক স্প্রেতে ফসলের ক্ষতির খবর পেয়ে ওই কোম্পানির লোকজনকে ডাকা হয়েছিল। তারা কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দিবে বলে জানিয়েছেন। সেই সাথে এই কীটনাশকটি টেস্টে পাঠানো হবে। মান ভাল না হলে বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।