মাসুদ রানা, (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে সিরাজগঞ্জের ফুলজোড় নদীতে গোসলে নেমে নিখোঁজ হওয়া আরও ২ শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। এ নিয়ে মোট তিনজন শিক্ষার্থী মারা গেলো।
নিখোঁজের একদিন পর রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তাদের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস।
নিহত শিক্ষার্থীরা হলেন-মো. রাফিল (১৫), শ্রীঃ কৃষ্ণ চন্দ্র (১৫) ও মো. সারজিল ইসলাম (১৬)। তারা সবাই সিরাজগঞ্জ কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
এর আগে শনিবার (১ জানুয়ারী) সকালে সিরাজগঞ্জ কালেক্টর স্কুল এন্ড কলেজের নবম শ্রেণির পাঁচ শিক্ষার্থী উপজেলার ভদ্রঘাট ইউনিয়নের ঝাটিবেলাই গ্রামে বন্ধুর বাড়ী বেড়াতে আসে। দুপুরে ফুলজোড় নদীতে পাঁচ বন্ধু গোসল করতে নেমে মো. রাফিল (১৫), মো. সারজিল ইসলাম (১৬) ও শ্রীঃ কৃষ্ণ চন্দ্র (১৫) নামের তিন শিক্ষার্থী নিখোঁজ হয়। খবর পেয়ে কামারখন্দ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের উদ্ধার কর্মীরা দীর্ঘ সময় উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে নিখোঁজ তিন শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়ে রাজশাহীর ডুবুরি দলকে খবর দেন। পরে ডুবুরি দল দেড় ঘন্টা উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে সন্ধা সাড়ে ৬ টার দিকে রাফিল নামের ১ জনের মরদেহ উদ্ধার করেন। রাত ভারী হওয়ায় ওই উদ্ধার অভিযান বন্ধ রাখে।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারী) উপজেলার ঝাটিবেলাই গ্রামের মোড় সংলগ্ন নদীর ঘাট এলাকায় ফুলজোড় নদীতে এই মর্মান্তিক নিখোঁজের ঘটনা ঘটেছে। নিখোঁজ শিক্ষার্থীরা সিরাজগঞ্জ কালেক্টর স্কুল এন্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র।
জানা যায়, উল্লেখিত স্কুলের পাঁচ বন্ধু ঝাটিবেলাই গ্রামের ভদ্রঘাট ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. এনামুল হক (রঞ্জু)’র নাতি মো. জারিফের বাড়িতে বেড়াতে আসে। বাড়ির পাশেই ফুলজোড় নদী। মনের আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে ছয় বন্ধু নদীর পানিতে গোসল করতে নামে। মৃদুল স্রোতে সাঁতরাতে সাঁতরাতে তিন বন্ধু মাঝ নদীতে চলে যায় কিছুক্ষণ পর তারা পানিতে ডুবে নিখোঁজ হয়। ডুবে যাওয়ার পর বাকী তিন বন্ধুর চিৎকারে বিষয়টি জানতে পারে। পরে পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা নদীর আশেপাশে খোঁজাখুজির পর তাদের না পেয়ে কামারখন্দ ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন।
এ তথ্য নিশ্চিত করেন কামারখন্দ ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স ওয়ার হাউজ ইন্সপেক্টর অপু কুমার মণ্ডল। এ সময় তিনি জানান, নিখোঁজের সংবাদ পাওয়া মাত্র ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করে। নদীর গভীরতা বেশি হওয়ায় উদ্ধার কাজ ব্যবহৃত হলেও দেড় ঘন্টা রাজশাহীর ডুবুরি দল উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে সন্ধা সাড়ে ৬ টার সময় রাফিল নামের শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে। রাত ভারী হওয়ার কারনে উদ্ধার অভিযানের কাজ বন্ধ রাখার পর রবিবার (২ ফেব্রুয়ারী) সকাল ১০ টার দিকে উদ্ধার অভিযানের কাজ শুরু করে দুপুর পৌনে ১২ টার দিকে সারজিল ও কৃষ্ণ নামের আরো ২ শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.মুখলেছুর রহমান জানান, রাজশাহীর ডুবুরি দলের অভিযানে নিখোঁজ তিন শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারের লোকজনকে সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা নাই। মরদেহ গুলো স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।