নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম নগরীর টাইগারপাস এলাকার নেভি কনভেনশন হল থেকে আওয়ামী লীগের নেতা ফখরুল আনোয়ারকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তিনি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক এবং ফটিকছড়ির প্রয়াত সংসদ সদস্য রফিকুল আনোয়ারের ছোট ভাই।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টার দিকে তার ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠান চলাকালে শতাধিক যুবক ছাত্র পরিচয়ে বিয়ের খাবার খেয়ে স্লোগান দিতে শুরু করে এবং আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়। পরে তারা ফখরুল আনোয়ারকে মারধর করে জনসম্মুখে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যায় বলে পরিবারের অভিযোগ।
তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক মেয়র এম মনজুর আলমের পরিবারের সঙ্গে ফখরুল আনোয়ারের ছেলের বিয়ের আয়োজন ছিল নেভি কনভেনশন হলে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ৯টার দিকে শতাধিক যুবক বিনা বাধায় বিয়ের খাবার খেয়ে কমিউনিটি সেন্টারের বাইরে জড়ো হয়। এরপর তারা ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’ স্লোগান দিতে থাকে এবং ফখরুল আনোয়ারকে অবরুদ্ধ করে।
খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। অন্যদিকে, একটি সূত্র জানিয়েছে, কনভেনশন হলের বাইরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী ভেতরে অবস্থান নেন। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ফখরুল আনোয়ারকে থানায় নিয়ে যায়। একই সময় ডিবি পুলিশ সাবেক এমপি খাদিজাতুল আনোয়ার সনিকে আটক করে নিয়ে যায় বলে জানা গেছে। তবে ডিবি পুলিশ এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো তথ্য দেয়নি।
এ ঘটনার পর নেভি কনভেনশন হলের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। নৌবাহিনীর সদস্যরা গেটে অবস্থান নেয়, ভেতরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে থাকেন। হলের বাইরে জড়ো হওয়া কিছু যুবক দাবি করেন, তারা জামায়াত-শিবির বা ছাত্র জনতার সদস্য। তারা ফেসবুক পোস্ট দেখে সেখানে গিয়েছিলেন, তবে নৌবাহিনীর বাধার কারণে ভেতরে ঢুকতে পারেননি।
অন্যদিকে, একটি অসমর্থিত সূত্রের দাবি, এক সাবেক শিবির নেতার ইন্ধনে পরিকল্পিতভাবে এই নাটক সাজানো হয়েছে। মূল উদ্দেশ্য ছিল আওয়ামী লীগের নেতাকে আটক করিয়ে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উপ-কমিশনার (উত্তর) মুহাম্মদ ফয়সাল আহম্মেদ বলেন, “বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল আনোয়ারকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা যাচাই-বাছাই চলছে।”
এছাড়া, তিনি আরও জানান, সাবেক সংসদ সদস্য খাদিজাতুল আনোয়ার সনি বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন উপস্থিত ছিলেন বলে শোনা গেছে।