নিজস্ব প্রতিবেদক: মানিকগঞ্জের সিংগাইরে চলতি শীতকালীন সবজি মৌসুমে দাম না থাকায় কৃষকের ক্ষেতেই পচে নষ্ট হচ্ছে মুলা। বিক্রি তো দূরের কথা, উল্টো আগাছা হিসেবে মূলা পরিষ্কার করতে গিয়ে চাষীদের অতিরিক্ত শ্রমিকের মজুরি দিতে হচ্ছে। উৎপাদন খরচ এবং বর্তমানে জমির পরিস্কারেও খরচ করে চাষীরা এখন নিঃস্ব। এছাড়াও উৎপাদিত ফুলকপি ও ওলকপি গরু-ছাগলের খাদ্যে পরিণত হয়েছে। এ যেনো মরার ওপর খরার ঘাঁ।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে সিংগাইরে ১৫০ হেক্টর জমিতে মূলা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। মৌসুমের শুরুতে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে আগাম শীতকালীন সবজিতে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও মূলা চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়। প্রচুর পরিমাণ সবজি সরবরাহ থাকায় বাজারে দামে ধস নামে। এর মধ্যে মূলার চাহিদা শূন্যের কোঠায় দাঁড়ায়। আবাদ হওয়া মুলা এখন কৃষকের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিক্রি তো দূরের কথা অতিরিক্ত মূল্যের শ্রমিক দিয়ে ক্ষেত পরিষ্কার করতে বাধ্য হচ্ছেন চাষীরা।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চাষীরা জমিতেই ফেলে রেখেছে তাদের উৎপাদিত মুলা। মোট কথা জমি থেকে মূলা পরিষ্কার করতেও কৃষকের অতিরিক্ত শ্রমিকের পিছনে অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। এছাড়াও মুলা, ফুলকপি ও ওলকপি বাজারে যে দরে বিক্রি হচ্ছে তাতে উৎপাদন খরচ তো দূরের কথা এ সবজি তুলতে শ্রমিকের মজুরি ও পরিবহন ভাড়ার খরচ না ওঠায় গরু-ছাগল দিয়ে খাওয়াচ্ছে অনেক চাষী।
ধল্লা ইউনিয়নে জায়গীর গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম তার জমিতে আবাদ করা মূলা পরিষ্কার করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। অন্য ফসলও সময় মতো করতে পারছেন না। এদিকে জয়মন্টপ ইউনিয়নের হাটখোলা এলাকার জয়নাল মোল্লা ও ফকির পাড়ার বোরহান উদ্দিন ফকির ওলকপি এবং পাল পাড়ার তনু পাল ও নাজমুল পালসহ অনেকেই ফুলকপি মানুষকে জমি থেকে ফ্রি দিয়ে এবং গরু দিয়ে খাইয়েছেন জমি পরিস্কার করেছেন।
স্থানীয় বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী মোঃ মিজানুর রহমান এবং মহর আলী বলেন, মুলার পাশাপাশি ফুলকপি চাষ করেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক কৃষক।
এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা কৃষি অফিসার মো: হাবিবুল বাশার চৌধুরী বলেন, এক ধরনের সবজি চাষ করা এবং একসাথে বাজারে ওঠায় কৃষকরা দাম পাচ্ছেন না। আগামীতে যাতে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করেন, সেজন্য কৃষকদের সচেতন করা হবে। সবজি চাষে এমন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সরকারিভাবে ভর্তুকিও দেয়ার কোনো সুযোগ নেই বলেও জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।