নিজস্ব প্রতিবেদক : এবারও চলতি মৌসুমে থেমে নেই মানিকগঞ্জের সিংগাইরে তিন ফসলি জমি থেকে মাটিকাটা। গত কয়েক বছর ধরে প্রশাসনের কঠোর নজরদারিতে তিন ফসলি জমি থেকে দিনে না কেটে রাতের আঁধারে মাটি বিক্রি করলেও এবার প্রকাশ্যে দিনরাত চলছে এ কর্মযজ্ঞ। দেখার যেন কেউ নেই।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার পূর্ব চারিগ্রাম চকে বিস্তীর্ন এলাকায় তিন ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রির এমন দৃশ্য প্রকাশ্যে।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ কাজের নেতৃত্ব দিচ্ছেন-চারিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের দুই সদস্য মো: বশির উদ্দিন ও মো. সালাউদ্দিন। মধ্য চারিগ্রাম সমবায় সমিতির ব্যানারে এ সিন্ডিকেটের সদস্য হিসেবে ওঠে এসেছে আরো ১০-১৫ জনের নাম। তাদের মধ্যে-বাবুল, দেলোয়ার, কায়কোবাদ ও মেহেরের নাম ওঠে এসেছে। চক্রের সদস্যদের মাটিকাটাস্থলের আশপাশে পৃথকভাবে দলবদ্ধ হয়ে অবস্থান করতে দেখা গেছে। সংবাদকর্মীদের উপস্থিতি কিংবা সন্দেহভাজন কেউ এগিয়ে গেলে তাদের প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয়। মাটি কাটার ছবি ও তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় এ প্রতিবেদক ও আরেকজন জাতীয় দৈনিকের সাংবাদিককে।
অবৈধভাবে তিন ফসলি জমি থেকে মাটিকাটা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে সংশ্লিষ্টরা জানান, চারিগ্রামের খান পরিবার থেকে ৫৫ হাজার টাকা শতাংশ ধরে জমি ক্রয় করে পুলিশ ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে তারা মাস খানেক ধরে মাটির ব্যবসা করছেন । অন্যদিকে, সুরুজ মিয়াসহ ট্রাক ও ভেকুর হিসেব নিকাশের দায়িত্বে থাকা অন্যরাও জানান, আপনাদের কোনো কথা থাকলে বশির উদ্দিন মেম্বারের সাথে বলতে পারেন। তবে আপনাদের (সাংবাদিক) ম্যানেজ করার জন্য জনৈক সাংবাদিকের নাম প্রকাশ করে বলেন, আপনারা ইচ্ছা করলে তার সাথে কথা বলতে পারেন।
এ প্রসঙ্গে চারিগ্রাম ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. বশির উদ্দিন মোবাইল ফোনে বলেন, আগের একটু মাটি কাটা ছিল। এবার ওই খানে সবাই মিলে কিছু কিছু টাকা দিয়ে ব্যবসা করছি।
অপরদিকে, ওই চকের পূর্ব পাশে হলু মিয়া ও মুজিবুর রহমানের ৩৫ হাজার টাকা শতাংশ ক্রয় করা ৮০ শতাংশ জমি থেকে ৪-৫ দিন ধরে দেদারসে মাটি কেটে বিক্রি করেছেন পার্শ্ববর্তী সায়েস্তা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল আলীমের ইটভাটায় এবং বিভিন্ন লোকের বসতবাড়িতে। মুজিবুর রহমান ও অন্যরা জানিয়েছেন, প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে তারা এবার মাটি ব্যবসা শুরু করেছেন যেনকারণে এ পর্যন্ত কোন অভিযান পরিচালনা হয়নি। তবে মুজিবুর রহমান তাদের মাটি বিক্রির বিষয় পত্রিকার রিপোর্ট না করতে বিশেষভাবে অনুরোধ করেন।
এদিকে, নাম প্রকাশ করার না শর্তে আশপাশের একাধিক জমির মালিক অভিযোগ করে বলেন, প্রতিবছর রাতের অন্ধকারে ফসলি জমির মাটি বিক্রি হয়। এবছর প্রকাশ্যে চলছে মাটি বিক্রির জমজমাট ব্যবসা। মাসব্যাপী এ মাটি কাটার ব্যবসা এখনো পর্যন্ত হয়নি কোন মোবাইল কোর্টের অভিযান। এভাবে মাটি কেটে বিক্রি করতে থাকলে তাদের পাশের জমিগুলো ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছেন তারা। ফসলি জমি থেকে দ্রুত মাটিকাটা বন্ধে প্রশাসনের কাছে দাবী জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।
চারিগ্রাম ইউনিয়ন (ভূমি) সহকারী কর্মকর্তা খায়রুল বাশার বলেন,ওই জায়গায় মাটি কাটা দুই বার বন্ধ করা হয়েছে। তারপরও কাটছে, বিষয়টি আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান সোহাগ বলেন,এর আগে লোক পাঠিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। আমি বিষয়টি দেখছি।
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | কর্পোরেট সংবাদ সম্পাদক - মোঃ মিজানুর রহমান । উপদেষ্টা সম্পাদক- জেসমিন আক্তার, এফসিএস ই-মেইলঃ corporatesangbad@gmail.com । ফোনঃ ০২২২-৩৩৫৪১২৫ । মোবাইলঃ ০১৭১১০৭৬৮১৫ অফিসঃ ৫৫/বি, নোয়াখালী টাওয়ার, ১১ তলা, সুইট ১১-এফ, পুরানা পল্টন, ঢাকা ১০০০ |
সিংগাইরে ফসলি জমি থেকে চলছে মাটি বিক্রির প্রতিযোগিতা, দেখার কেউ নেই! https://corporatesangbad.com/501249/ |