কর্ণফুলীতে লাল-সবুজ রঙে নৌকার আদলে তৈরি হচ্ছে ৩০০ জনের সর্ববৃহৎ মঞ্চ

Posted on October 23, 2023

জে. জাহেদ, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: কর্ণফুলী নদীর ১৫০ ফুট গভীরে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের উদ্বোধন ও আওয়ামী লীগের মহাসমাবেশ ঘিরে চট্টগ্রাম তথা আনোয়ারা কর্ণফুলীতে সাজসাজ রব বিরাজ করছে। এই মহাসমাবেশে ১০ লাখ নেতাকর্মীর সমাগম ঘটানোর লক্ষ্য আওয়ামী লীগের।

আগামী ২৮ অক্টোবর দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম সুড়ঙ্গপথ উদ্বোধন করা হবে। এরপর দক্ষিণ চট্টগ্রামে দ্বাদশ নির্বাচনের আগে সর্বশেষ মহাসমাবেশে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মহাসমাবেশের জন্য নৌকার আদলে তৈরি হচ্ছে মঞ্চ। আর এই মঞ্চকে বলা হচ্ছে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ। লাল-সবুজ রঙে নৌকার আদলে ৮ ফুট উচ্চতার মঞ্চটির দৈর্ঘ্য হবে ১৩০ ফুট, আর প্রস্থ ৪৮ ফুট। প্রস্তুতি আর নিরাপত্তার অংশ হিসেবে মঞ্চের সামনে তৈরি হচ্ছে চার স্তরের ব্যারিকেড।

সাহাব উদ্দিন ডেকোরেশনের সিনিয়র কর্মকর্তা প্রদীপ দাশ আরো জানিয়েছেন, এক সাথে বসার জায়গা হবে ৩০০ জন নেতাকর্মীর। ১৪ অক্টোবর মঞ্চ তৈরির শুরু হয়। যা শেষ হবে ২৬ অক্টোবর। মঞ্চ তৈরিতে দৈনিক কাজ করছে ৭০ জন অভিজ্ঞ শ্রমিক। আর জনসভায় সাউন্ড সিস্টেমের কাজ করবেন দেশের বিখ্যাত সাউন্ডমেকার কলরেডি। তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তাদের ২০০ এর বেশি মাইক স্থাপন করা হবে।

মঞ্চ বানানোর দায়িত্বে থাকা চিটাগাং ইভেন্টসের চেয়ারম্যান সাহাবুদ্দিন বললেন, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এরচেয়ে বড় মঞ্চ তৈরি হয়নি।

জনসভা ও টানেলের উদ্বোধন ঘিরে দক্ষিণ চট্টগ্রামের পুরো এলাকা ছেয়ে গেছে বিলবোর্ড, ব্যানার ও পোস্টারে। স্থানীয়রাও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন টানেল নির্মাণ করায়। আর সমাবেশ ঘিরে তারাও উচ্ছ্বসিত।

উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভা সফল করতে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। জনসভাস্থল আনোয়ারার কেইপিজেড এর সাড়ে নয় লাখ ঘনফুট আয়তনের মাঠ প্রস্তুত করা হয়েছে। মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু হবে। জনসভায় নেতা-কর্মীদের বহন করা বাস রাখার জন্য কেইপিজেড এর অব্যবহৃত চারটি মাঠ সংস্কার করে পার্কিং জোন করা হয়েছে।

দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভা উপলক্ষে টানেল সংযোগ সড়ক ও জনসভার আশপাশের সড়কগুলো সাজানো হচ্ছে। কেইপিজেড মাঠে নৌকার আদলে দেশের সবচেয়ে বড় মঞ্চ নির্মাণ করা হবে।

নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভা উপলক্ষে নগর, ওয়ার্ড ও ইউনিট আওয়ামী লীগের নেতাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করে সহায়তা করা হচ্ছে। এই জনসভায় নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক-নির্দেশনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইসতিয়াক ইমন জানান, বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাফকো সেন্টারের কেইপিজেড মাঠে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন। জনসভা উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় আনোয়ারা উপজেলা প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে। বিশেষ করে সড়ক উন্নয়ন, যানজট নিরসন, আইনশৃঙ্খলাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, ৩ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ টানেল, সংযোগ সড়কসহ প্রকল্পের প্রায় সব কাজই শেষ। এখন চলছে স্ক্যানার স্থাপন এবং উদ্বোধনের তোড়জোড়। বাংলাদেশ ও চীন সরকারের যৌথ অর্থায়নে এই টানেল নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি।