ওয়ালটন প্রথম জাতীয় নারী ও পুরুষ ল্যাক্রোস প্রতিযোগিতা শুক্রবার শুরু

Posted on January 16, 2025

স্পোর্টস ডেস্ক: ক্রীড়াবান্ধব প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ, পিএলসি’র পৃষ্ঠপোষকতায়, বাংলাদেশ ল্যাক্রোস অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে এবং এশিয়া ল্যাক্রোস ইউনিয়নের সহযোগিতায় আগামীকাল শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি, ২০২৫) থেকে শুরু হতে যাচ্ছে ‘ওয়ালটন প্রথম জাতীয় পুরুষ ও নারী ল্যাক্রোস চ্যাম্পিয়নশিপ-২০২৫।’ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের আর্টিফিসিয়াল টার্ফে তিনদিন ব্যাপী এই প্রতিযোগিতা চলবে রোববার পর্যন্ত। যেখানে নারী ও পুরুষ বিভাগে মোট আটটি দল অংশ নিবে।

প্রতিযোগিতার বিষয়ে বিস্তারিত জানানোর জন্য আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের অ্যাডভাইজর (স্পোর্টস) এফ.এম. ইকবাল বিন আনোয়ার (ডন), জাপান হতে আমন্ত্রিত প্রধান প্রশিক্ষক মাসুমি জিন্ন (সিইও, এশিয়া প্যাসিফিক ল্যাক্রোস ইউনিয়ন) ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পরিদর্শক ও বাংলাদেশ ল্যাক্রোস অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি হেলাল উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেনসহ অ্যাসোসিয়েশনের অন্যান্য সদস্যগন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় পুরুষ বিভাগে চারটি ও নারী বিভাগে চারটি দল অংশ নিবে। পুরুষ বিভাগের দলগুলো হলো— বাংলাদেশ পুলিশ, ঢাকা জেলা ক্রীড়া সংস্থা, স্যান্ড অ্যাঞ্জেল ক্লাব ও জিসান স্পোর্টিং ক্লাব। নারী বিভাগে রয়েছে— নারায়ণগঞ্জ জেলা, স্যান্ড অ্যাঞ্জেল ক্লাব, ঢাকা জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও শরীয়তপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থা। উভয় বিভাগের খেলা রাউন্ডন রবিন লিগ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে। শীর্ষে থাকা দুটি দল ফাইনালে মুখোমুখি হবে। সিক্স-এ-সাইড এই প্রতিযোগিতার উভয় বিভাগের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স-আপ হওয়া দলকে ট্রফি ও মেডেল দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, ল্যাক্রোস একটি আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির স্বীকৃত জনপ্রিয় ও প্রাচীন খেলা যা বিশ্বের শতাধিক দেশে খেলা হয়। নর্থ আমেরিকায় সৃষ্ট ল্যাক্রোস খেলাটির বহু শতাব্দীর আকর্ষণীয় ইতিহাস ও ঐতিহ্য রয়েছে। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি আগামী ২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিকেও অন্তর্ভূক্ত করেছে ল্যাক্রোস খেলাটিকে। এর ফলে পুনরায় বিশ্ব অলিম্পিক মঞ্চে ফিরেছে ল্যাক্রোস।

ল্যাক্রোস একটি দ্রুতগতির শক্তি প্রদর্শনী ও শৃঙ্খলার খেলা। যেটাকে ফুটবল ও হকি সমন্বিত খেলার সাথে তুলনা করা যায়। ল্যাক্রোস সাধারণ তিনটি বিভাগে খেলা হয়ে থাকে। ১০-এ সাইড বা ফিল্ড ল্যাক্রোস, ৬-এ সাইড বা সিক্সেস বক্স ল্যাক্রোস এবং নারী ল্যাক্রোস। আধুনিক অলিম্পিকে ৬-এ সাইড ল্যাক্রোস প্রচলিত রয়েছে।

দুটি বিভাগের নিয়ম কানুন, মাঠের আকৃতিতে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। ১০-এ সাইড ল্যাক্রোসে উভয় দলে ১০ জন করে খেলোয়াড় থাকে। তার মধ্যে ৩ জন ডিফেন্স, ৩ জন মিডফিল্ড, ৩ জন অফেন্সিভ ও ১ জন গোলরক্ষক। মাঠের আকৃতি একটি আয়তক্ষেত্রকার, যেটি ১১০ মিটার লম্বা এবং ৬০ মিটার প্রস্থ। মাঠের সাইডলাইন চারদিকে সাদা রং দিয়ে চিহ্নিত করা থাকে এবং মাঠের দুই প্রান্তে ক্রসবার দ্বারা সংযুক্ত দুটি উলম্ব গোল পোস্ট থাকে। অন্যদিকে ৬-এ সাইড ল্যাক্রোসে দুই দলে ৬ জন করে খেলোয়াড় থাকে এবং অল্প সময় ধরে তুলনামূলক ছোট আকৃতির মাঠে খেলা হয়।

১০-এ সাইড ম্যাচটি ১৫ মিনিট করে ৪টি কোয়ার্টারে বিভক্ত হয়ে ৬০ মিনিটে খেলা হয়। অন্যদিকে ৬ সাইড ম্যাচটি একটি ছোট মাঠে ৮ মিনিট করে চার কোয়ার্টারে ৩২ মিনিটে খেলা হয়। ১০-এ সাইডে প্রথম এবং দ্বিতীয় কোয়ার্টার, তৃতীয় এবং চতুর্থের কোয়ার্টারে মধ্যকার ২ মিনিটের ব্যবধানে খেলা শুরু করতে হবে। দ্বিতীয় কোয়ার্টারের পরে ১০ মিনিট হাফ-টাইম বিরতির অতিরিক্ত সময় ধরা হয়।

উভয় দলের খেলোয়াড়দের সাথে সাধারণত প্লাস্টিক বা ফাইবারের তৈরি স্টিক থাকে যা দ্বারা খেলোয়াড়রা বল নিক্ষেপ, একে অপরের মধ্যে পাস বিনিময় এবং বল রিসিভ করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করে থাকে। বলটি মূলত রাবার দিয়ে তৈরি, এর পরিধি ৭.৭৫ ইঞ্চি ও ৮ ইঞ্চি এবং ওজনে ৫ আউন্স এর মত, যা সাদা বা কমলা রংয়ের হয়ে থাকে।

দুই দলেরই প্রতিপক্ষের গোলবারের মধ্যে স্কোর বা গোল করার লক্ষ্য থাকে। আবার একে অপরকে (ডিফেন্স) বাধা দিয়ে নিজেদের গোলপোস্ট সুরক্ষিত করার চেষ্টাও করে। গোলরক্ষক ছাড়া অন্য খেলোয়াড়রা হাত দিয়ে বল স্পর্শ বা যেকোন দিকে লাখি মারা, অবৈধ আচরণ বিধিনিষেধ সাপেক্ষে পেনাল্টি হিসেবে গণ্য হয়।

প্রতিটি দলের জন্য ৩০ সেকেন্ড সুযোগ থাকে গোল করার। এর মধ্যে গোল না দিতে পারলে বলটি প্রতিপক্ষ দলের কাছে চলে যাবে এবং তারা ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে গোল করার সুযোগ পাবে। চতুর্থ কোয়ার্টার শেষে যে দল সর্বোচ্চ সংখ্যক গোল করবে তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। গোলের সমতা হলে ২-মিনিট বিরতির পরে, ওভারটাইমে ৮ মিনিট করে সময় যোগ করে খেলায় বিজয়ী নির্ধারণ করা হয়।