সিংগাইরে ঝাড়ুদারের পারিশ্রমিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের পকেটে!

Posted on January 16, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক: মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের ঝাড়ুদারের পারিশ্রমিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. ফারুক চৌধুরীর পকেটে। কাগজ-কলমে সরকারিভাবে খোদেজা নামের ঝাড়ুদারের পারিশ্রমিক নিয়মিতভাবে উত্তোলন করা হলেও তিনি কিছুই জানেন না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে প্রকাশ, আজিমপুর মহল্লার খোদেজা বেগম দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে ঝাড়ুদারের কাজ করে আসছিলো। সরকারি ছুটি ছাড়া মাসে ২২ কর্মদিবসে প্রতিদিন ৫৫০ টাকা হিসেবে পারিশ্রমিক বরাদ্দ। সেই হিসেবে ভ্যাট-ট্যাক্স বাদে ওই ঝাড়ুদার ১১ হাজার টাকা পাওয়ার কথা। ইতিপূর্বে কর্মকর্তারা ঝাড়ুদার খোদেজাকে প্রতিমাসে মাত্র ৩ হাজার করে টাকা দিতেন। বাকি টাকা সংশ্লিষ্টরা আত্মসাৎ করেছেন।

এদিকে, উপজেলা পরিষদের নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হলে খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিস চলে যায় খাদ্য গুদাম চত্ত্বরে। কাজ থেকে বাদ দেয়া হয় ঝাড়ুদার খোদেজাকে। এদিকে ২০২৩ সালের ২৮ নভেম্বর খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে ফারুক চৌধুরী সিংগাইরে যোগদান করেন। এরপর থেকে প্রতি ৩ মাস অন্তর ফারুক চৌধুরী উত্তোলন করেন ঝাড়ুদারের পারিশ্রমিক ৩৩ হাজার টাকা করে।

উপজেলা হিসাবরক্ষন অফিস সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০২৪ সালের জুনে ঝাড়ুদার খোদেজা বেগমের নামে তিন মাসের পারিশ্রমিক ৩৩ হাজার টাকার বিল খাদ্য নিয়ন্ত্রক ফারুক চৌধুরীর স্বাক্ষরে উত্তোলন করা হয়েছে। তার আগেরও ৩ মাসের ৩৩ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

ঝাড়ুদার খোদেজা বেগম বলেন, আমি অনেক আগে থেকেই উপজেলায় অফিস থাকাকালীন কাজ করেছি। মাসে ৩ হাজার টাকা করে বেতন দিত। অফিসের পুরাতন বিল্ডিং ভেঙে ফেলার পর আর আমাকে দিয়ে কাজ করায় না। আমি বলে রেখেছি নতুন ভবনে এলে আমাকে দিয়ে কাজ করানোর জন্য।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. ফারুক চৌধুরী প্রথমে খন্ডকালীন একজন ঝাড়ুদারের কথা স্বীকার করলেও তাৎক্ষনিক তা অস্বীকার করেন। বর্তমানে গুদাম ঘরের ঝাড়ুদার দিয়ে কাজ করানো হয়। ঝাড়ুদারের বেতন আত্মসাৎ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জুন মাস পর্যন্ত বেতন আমার স্টাফ হোসনে আরা উত্তোলন করেছে, সে বলতে পারবে।

এদিকে,খাদ্য নিয়ন্ত্রকের এ বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সহকারী উপ-খাদ্য নিয়ন্ত্রক হোসনে আরা বলেন, যা কিছু হয়েছে স্যারের নির্দেশে হয়েছে। অধিনস্থদের কর্মকর্তার কথার বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।

সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান সোহাগ বলেন, এটা আর্থিক অনিয়ম, অনাকাঙ্খিত ঘটনা। আপনি ডিসি ফুডকে জানাতে পারেন। উপজেলার পক্ষ থেকে বিষয়টি আমি দেখবো।

এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাজী সাইফুদ্দিন বলেন, উপজেলার বিষয়গুলো আমি ভাল করে জানি না। সবকিছুর খবর নিয়ে আমি আপনাকে জানাব।