আলমডাঙ্গার জামজামিতে কর্মী সভায় দিলীপ কুমার আগরওয়ালা

Posted on October 21, 2023

আহসান আলম, চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন শীর্ষক আলোচনা, লিফলেট বিতরণ ও আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বিশাল কর্মী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (২১ অক্টোবর) বেলা ৪ টায় চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার জামজামি বাজারে এ কর্মী সভা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মী সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক উপকমিটির সদস্য ও ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা।

কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, অনেক কষ্ট করে এসেছেন দূর দুরান্ত থেকে। আপনাদের সবাইকে সালাম ও নমস্কার। জামজামি ইউনিয়নের কর্মীসভা আজ জনভায় রুপান্তরিত হয়েছে। এর আগে আমি আলমডাঙ্গায় জনসভা করেছি। সেখানেও একই অবস্থা। জনতার ঢল নেমেছে। সরোজগঞ্জ, আসমানখালি তেও একই অবস্থা। আমি কম বেশি ৩০/৩৫ টি পথসভা করেছি , সব যায়গায় মানুষের ঢল নামে। এই কৃতিত্ব আসলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর। তার উন্নয়নের সুফলভোগীরা আজ তাকে হারাতে চায় না। আমি নৌকা প্রতীকের জন্য যখনই ডাক দেই, অভুতপূর্ব সাড়া পাই। জামজামি ইউনিয়নের আজকেই এই কর্মী সমাবেশে আমি প্রথমেই শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। স্মরণ করছি জাতীয় চার নেতা এবং মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ এবং ২ লাখ নির্যাতিত মা-বোনকে।

তিনি বলেন, ঢাকা-মাওয়া-জাজিরা এক্সপ্রেসওয়ে দেশের প্রথম এ ধরনের মহাসড়ক। এলেঙ্গা-রংপুর মহাসড়ক, আরিচা মহাসড়ক এবং ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। বিমানবন্দর থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে আগামী বছর যানবাহনের জন্য খুলে দেওয়া হবে। ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে খুলনা পর্যন্ত এবং চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেল যোগাযোগ স্থাপনের কাজ চলছে। যমুনা নদীর ওপর রেলসেতু নির্মাণ কাজও এগিয়ে যাচ্ছে। গত বছর নভেম্বরে একদিন ১০০ সেতু এবং ডিসেম্বরে ১০০ সড়ক উদ্বোধন করা হয়। দেশের উন্নয়নের ইতিহাসে এ এক অনন্য অর্জন। এই অর্জনের কথা আপনাদের তুলে ধরতে হবে দ্বারে দ্বারে গিয়ে।

কি করবেন তো? এই অক্টোবারেই অনেকগুলো প্রকল্পের উদ্বোধন হয়েছে, গত ৫ অক্টোবর ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ৭ অক্টোবর করেছেন হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্মাণাধীন ‘৩য় টার্মিনাল এর উদ্বোধন । গত ১০ অক্টোবর ‘ঢাকা-যশোর ১৭২ কিলোমিটার রেল লিংক’ প্রকল্পের ‘ঢাকা-ভাঙ্গা’অংশের উদ্বোধন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী । একই সাথে তিনি বহুল কাঙ্ক্ষিত পদ্মা রেল সেতু উদ্বোধন করেছেন।

আগামী ২৮ অক্টোবর কর্ণফুলী নদীর তলেদেশে নির্মিত ‘বঙ্গবন্ধু টার্মিনাল উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। মেট্রোরেল লাইন এমআরটি-৬ এর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত অংশের উদ্বোধন হবে আগামী ৪ নভেম্বর এবং দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন উদ্বোধন হবে ১২ নভেম্বর। এতো এতো উন্নয়ন। এতো এতো মেগা প্রকল্প। উন্নয়ন দেখে বি এনপির মাথা খারাপ হয়ে গেছে। কি বলেন? মাথা খারাপ হয়েছে না? এ সব মেগা প্রকল্পের কথা আপনাদের তুলে ধরতে হবে। তারপর আসেন সরকারের সাফল্য এবং অন্যান্য উন্নয়ন ও ভাতা নিয়ে। বলতে হবে সমুদ্র সীমানা বিজয় এর কথা, শ্রমিকদের মজুরী বৃদ্ধি, জেলেদের খাদ্য সহায়তা প্রদান, দারিদ্র্যতার হার নিম্ন পর্যায়, যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকারদের বিচার, বয়স্ক ভাতা প্রদান, বিনামূল্যে এক কোটি শিক্ষার্থীদের হাতে বই প্রদান, মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদান, কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান, বিধবা ভাতা প্রদান, দেশের রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, দেশের রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, গরীব শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি প্রদান, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ, প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদান,মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা প্রদান, প্রতিটি ইউনিয়নে ডিজিটাল তথ্য সেবা কেন্দ্র স্থাপন, বিভিন্ন স্থানে বিনোদন কেন্দ্র নির্মান, দেশের বিভিন্ন জেলায় শিল্প পার্ক নির্মাণ, দেশের বিভিন্ন স্থানে ইকোনমিক জোন নির্মাণ, মোবাইল ও ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনে সফলতা।

কর্মী সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কাওসার আহম্মেদ বাবলু, কুমারি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগ যুগ্ম আহ্বায়ক ও চিৎলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জিল্লার রহমান, সদর উপজেলার পদ্মবিলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু তাহের বিশ্বাস, আলমডাঙ্গা উপজেলার কালিদাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মঈনউদ্দিন পারভেজ, কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাখাওয়াত হোসেন টাইগার, চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষক লীগের সভাপতি ও মোমিনপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক জোয়ার্দ্দার, গাংনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রকিবুল হাসান, ডাউকি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম দিপু মাস্টার, খাসকররা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেন মাস্টার, চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের সদস্য তপন কুমার বিশ্বাস প্রমুখ।

আলমডাঙ্গা উপজেলার খাদিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম মন্ডলের সঞ্চালনায় এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, জামজমি ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসাহাক আলী, ২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি কাসেম আলী, সাধারণ সম্পাদক রইচ মোল্লা, ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ইজাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান, ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হুদা, ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান, ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তার আলী, ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি কোরবান আলী, ৮নং সভাপতি হায়দার আলী, ৯নং লাল্টু রহমানসহ আরও অনেকে।

কর্মীসভায় দিলীপ কুমার আগরওয়ালা আরও বলেন, সরকারের সকল সফলতা ও উন্নয়নের কথা আপনাদের গণ মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে আপনাদের একটি দাওয়াত দিচ্ছি। আগামী ৯ নভেম্বর খুলনা সার্কিট হাউস মাঠে জনসভায় ভাষণ দেবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চলো যাই খুলনায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জনসভায়। খুলনায় আগামী ৯ নভেম্বর জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করার মাধ্যমে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবো। আমি ১০ বছর আগে আমার মায়ের নামে একটা ফাউন্ডেশন করেছি। শুধু এই অঞ্চলের মানুষের সেবা করার জন্য। চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গাসহ এ জেলার মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। আপনারা ভালো করেই জানেন তারা দেবী ফাউন্ডেশন কি কি কাজ করছে। মানুষের জন্য এতোকিছু করেও মনে হলো, আমি মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পারছিনা। এলাকার গণ মানুষের উন্নয়নে আমি ভুমিকা রাখতে পারছি না। গণ মানুষের উন্নয়নে ভুমিকা রাখতে হলে আমাকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে হবে। আমার জন্মভূমির জন্য এতটুকু আমাকে করতেই হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বপ্ন দেখছে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার। আমি স্বপ্ন দেখছি স্মার্ট চুয়াডাঙ্গা গড়ার।

দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, আমার বক্তব্য স্পষ্ট। আমি চাই এই জনপদে নৌকা বিজয়ী হোক। আমি নৌকার জন্য ভোট চাইছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের কথা তুলে ধরছি। আমি যদি নৌকা নাও পাই। যিনি নৌকা পাবেন , আপনাদের নিয়ে তার জন্য কাজ করবো। এবং তাকে বিজয়ী করে স্মার্ট চুয়াডাঙ্গা গড়ে তুলবো। নৌকার বিজয়। আমাদের বিজয়।

নৌকার বিজয়। সকলের বিজয়। আমি যদি আপনাদের দোয়ায় ও আশীর্বাদে নৌকা পাই তবে সবাইকে নিয়ে স্মার্ট চুয়াডাঙ্গা গড়ে তুলবো। এ আমার অঙ্গীকার। আমার প্রবল ইচ্ছা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যদি আমাকে সুযোগ দেন, তাহলে আপনাদের সমর্থন নিয়ে, আপনাদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে, আপনাদেরকে স্মার্ট চুয়াডাঙ্গা উপহার দেবো। সৃষ্টি কর্তা যদি চায়, শিক্ষা ব্যবস্থা, চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং কর্মসংস্থান এই তিনটি আমার প্রধান লক্ষ্য। এই তিনটি বিষয় আমি ঠিক করে দিতে পারলে আপনাদের কষ্ট লাগোব হবো। কথা দিলাম, পাল্টে দেব এই জনপদের চিত্র।