দেশের রিজার্ভ এখন ২০ বিলিয়নের নিচে

Posted on October 20, 2023

অর্থ-বাণিজ্য: প্রবাসী আয় কম, আশানুরূপ রপ্তানি আয় না আসা এবং বিদেশি ঋণ কমে যাওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার সংকটে পড়েছে দেশ। ফলে রিজার্ভ থেকে আমদানি ব্যয়সহ অন্যান্য দায় মেটাচ্ছে সরকার। এতে ধারাবাহিকভাবে কমে ২০ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত অনুযায়ী চলতি বছরের ১৩ জুলাই থেকে বিপিএম-৬ নিয়মে রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন বিপিএম-৬ অনুযায়ী, দেশে রিজার্ভ ছিল ২৩ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন (২ হাজার ৩৫৬ কোটি) ডলার। আজ বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে রিজার্ভের যে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে তাতে দেখা যায়, বুধবার (১৮ অক্টোবর) পর্যন্ত রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন (২ হাজার ৯৫ কোটি ৭৮ লাখ) ডলার। তার মানে, তিন মাসের ব্যবধানে রিজার্ভ কমেছে ২৬০ কোটি ৭০ লাখ ডলার।

২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ ছিল ৪ হাজার ৮০০ কোটি বা ৪৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি। সেই রিজার্ভ ১৮ অক্টোবর নেমে এসেছে ২ হাজার ৬৬৮ কোটি (২৬ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন) ডলারে। আইএমএফ হিসাব পদ্ধতি ‘ব্যালেন্স অব পেমেন্টস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল (বিপিএম ৬)’ অনুযায়ী রিজার্ভ বর্তমানে ২ হাজার ৯৫ কোটি ডলার ।

প্রকৃত রিজার্ভ কত আছে এটা জানা নেই। তবে আমরা যেটা প্রকাশ করি সেই তথ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী বিপিএম-৬ হিসাবে এখন ২০ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ আছে-বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক

এর বাইরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, যা শুধু আইএমএফকে দেওয়া হয়। প্রকাশ করা হয় না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সেই হিসাবে দেশের প্রকৃত রিজার্ভ এখন ১৭ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে এখন যে পরিমাণ প্রকৃত রিজার্ভ আছে, তা দিয়ে শুধু তিন মাসের আমদানি খরচ মেটানো যাবে। সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম ৩ মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। সেই মানদণ্ডে বাংলাদেশ এখন শেষ প্রান্তে রয়েছে। একটি দেশের অর্থনীতির অন্যতম সূচক হলো বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ।

CS

নিট বা প্রকৃত রিজার্ভ কত জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক জানান, প্রকৃত রিজার্ভ কত আছে এটা জানা নেই। তবে আমরা যেটা প্রকাশ করি সেই তথ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী বিপিএম-৬ হিসাবে এখন ২০ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ আছে।

রিজার্ভ কমতে থাকায় ঘাটতি পূরণ করতে ইতোমধ্যে আইএমএফ থেকে ঋণ নেওয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ। চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে আইএমএফ। এই ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার গত ফেব্রুয়ারিতে পায় বাংলাদেশ।

আইএমএফ-এর ঋণের অন্যতম শর্ত ছিল চলতি বছরের জুনে প্রকৃত রিজার্ভ ২ হাজার ৪৪৬ কোটি ডলার, সেপ্টেম্বরে ২ হাজার ৫৩০ ডলার এবং ডিসেম্বরে ২ হাজার ৬৮০ ডলারে রাখতে হবে। কিন্তু গত দুই প্রান্তিকে তা অর্জন করতে পারেনি বাংলাদেশ, ডিসেম্বর প্রান্তিকেও পারবে কি না তা নিয়ে সংশয় আছে।

কর্পোরেট সংবাদ/এএইচ