বিডিআর হত্যাকাণ্ড তদন্তে পূর্ণাঙ্গ কমিশন ঘোষণা

Posted on December 25, 2024

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক: ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তর পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের নামে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে জড়িত দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র ও প্রকৃত ঘটনার স্বরূপ উদঘাটন এবং অপরাধীদের চিহ্নিতকরণে জাতীয় স্বাধীন পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কমিশন গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।

মেজর জেনারেল আ ল ম ফজলুর রহমানকে (অব:) এই কমিশনের সভাপতি করা হয়েছে। সদস্যরা হচ্ছেন মেজর জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার (অব.), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুর রহমান বীর প্রতীক (অব.), মুন্সী আলাউদ্দিন আল আজাদ যুগ্মসচিব (অব.), ড. এম. আকবর আলী ডিআইজি (অব.), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. শরীফুল ইসলাম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক মো. শাহনেওয়াজ খান চন্দন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, যেহেতু ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তর পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের নামে সংঘটিত বর্বরতম হত্যাযজ্ঞের বিষয়ে সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ রিট পিটিশন নম্বর-১২১৬১/২০২৪-এ একটি জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে পুনঃতদন্তের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেছে।

সেহেতু সরকার Commissions of Inquiry Act, 1956 (Act No. VI of 1956) এর Section ৩ এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তর পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের নামে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞের সহিত জড়িত দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র ও প্রকৃত ঘটনার স্বরূপ উদ্ঘাটন, ঘটনায় রুজুকৃত দুটি মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিবর্গ ব্যতীত, ঘটনার ষড়যন্ত্রকারী, ঘটনার সহযোগী, ঘটনার আলামত ধ্বংসকারী, ঘটনা সংঘটনকারী এবং ঘটনা সংশ্লিষ্ট অপরাপর বিষয় ও অপরাধীদের চিহ্নিতকরণের লক্ষ্যে একটি জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করা হলো।

জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের কার্যপরিধি হইবে নিম্নরূপ:
(ক) ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তর, পিলখানায় সংঘটিত ঘটনার প্রকৃতি ও স্বরূপ উদ্ঘাটন করা;
(খ) ঘটনাকালে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য অপরাধ সংঘটনকারী, সহায়তাকারী, ষড়যন্ত্রকারী, ঘটনার আলামত ধ্বংসকারী, ইন্ধনদাতা এবং ঘটনা সংশ্লিষ্ট অপরাপর বিষয়সহ দেশি-বিদেশী সংশ্লিষ্ট অপরাধী ব্যক্তি/ গোষ্ঠী/ সংস্থা/প্রতিষ্ঠান/ বিভাগ/সংগঠন ইত্যাদি চিহ্নিতকরণ;
(গ) উক্ত ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের সময় ও হত্যাকান্ডের আগে/পরে সংঘটিত অপরাপর অপরাধের স্বরূপ উদ্ঘাটন, দায়ী ব্যক্তি/গোষ্ঠী/সংস্থা/প্রতিষ্ঠান/বিভাগ/সংগঠন চিহ্নিত করা এবং ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা বা ঘটনা ঘটাইতে সহায়তাকারী অন্যান্য দেশি-বিদেশী ব্যক্তি/ গোষ্ঠী/ সংস্থা/ প্রতিষ্ঠান/বিভাগ/ সংগঠনের সম্পৃক্ততা নিরূপণ এবং দোষীদের চিহ্নিতকরণ;
(ঘ) হত্যাকাণ্ডসহ সংঘটিত অপরাপর অপরাধ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থতার জন্য দায়ী ব্যক্তি/গোষ্ঠী/সংস্থা/প্রতিষ্ঠান/বিভাগ/সংগঠন চিহ্নিতকরণ; এবং
(ঙ) হত্যাকাণ্ডসহ সংঘটিত অপরাপর অপরাধে ইতোমধ্যে দায়েরকৃত মামলা এবং সংশ্লিষ্ট মামলায় অভিযুক্তগণের দায়/অপরাধ অক্ষুন্ন রেখে সংশ্লিষ্ট মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি এমন প্রকৃত অপরাধীদেরকে তদন্ত প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্তকরণ।

৩. তদন্ত কমিশন বাংলাদেশের যে কোনো স্থান পরিদর্শন এবং সন্দেহভাজন যে কোনো ব্যক্তিকে কমিশনে তলব ও জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবে।

৪.কমিশন, প্রয়োজনে, উপযুক্ত যে কোনো ব্যক্তিকে কমিশনের সদস্য হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করিতে পারিবে।

৫। কমিশন, Commissions of Inquiry Act, ১৯৫৬ অনুসারে তদন্তকার্য সম্পন্ন করিয়া এই প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ হতে ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে সরকারের নিকট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করিবে।

৬। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ তদন্ত কমিশনকে সাচিবিক সহায়তাসহ সকল প্রকার সহায়তা প্রদান করিবে ও কমিশনের প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করিবে এবং কমিশনকে সহায়তার উদ্দেশ্যে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত যে কোনো ব্যক্তিকে দায়িত্ব প্রদান করিতে পারিবে।

৭.কমিশনের প্রধান ও সদস্যগণ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সরকারি পদমর্যাদা, বেতন/ সম্মানি ও সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্ত হইবেন; তবে শর্ত থাকে যে, কমিশন প্রধান বা কোনো সদস্য অবৈতনিক হিসাবে দায়িত্ব পালন করিতে চাহিলে বা সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করিতে না চাহিলে উহা অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন গ্রহণ করিতে পারিবে।

৮. এই প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হইবে।