অবৈধ যানবাহন বন্ধ না হলে গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা চুয়াডাঙ্গা বাস মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের

Posted on December 21, 2024

আহসান আলম, চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধ: চুয়াডাঙ্গার আঞ্চলিক মহাসড়কে ইজিবাইকসহ সকল অবৈধ যানবাহন বন্ধ না হলে আগামী ২৩ ডিসেম্বর থেকে অভ্যন্তরীণ রুটের সকল গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে চুয়াডাঙ্গা বাস মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। একই সাথে ২৬ ডিসেম্বর থেকে দূরপাল্লার সকল গণপরিবহনও বন্ধ করে দেয়া হবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়।

শনিবার দুপুরে সংগঠনের জেলা কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন নেতৃবৃন্দরা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে চুয়াডাঙ্গা বাস মিনিবাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম জানান, গত ৩ দিন মাইকিং করার পরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। দাবি নিয়ে জানাচ্ছি গত ৫ আগস্ট এর আগে যেভাবে ইজিবাইক, পাখিভ্যান চলাচল করতো পুনরায় সেইভাবে চলাচল করার জন্য এই সংবাদ সম্মেলন।

চুয়াডাঙ্গা জেলায় যে হারে ইজিবাইক, থ্রি-হুইলার, মোটরচালিত রিক্সা ও পাখিভ্যান আঞ্চলিক মহাসড়কে যেভাবে দাপটের সহিত চলাচল করছে, তাতে লোকাল গাড়ীর ব্যবসায় আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বাস মালিকরা। বর্তমানে লোকাল গাড়ীর মালিকগন অত্যান্ত নাজুক অবস্থার মধ্যে দিনাতিপাত করছে। প্রতিদিন গাড়ীর মালিকগনের লোকসান গুনতে হচ্ছে। গাড়ীর সরঞ্জাম টায়ার, টিউব, মবিল, যন্ত্রাংশ এর মূল্য বৃদ্ধি বেশি।

এমন অবস্থায় লোকাল গাড়ী গুলি বন্ধ করে দেয়া ছাড়া মালিকদের কোন উপায় থাকছে না। মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ কয়েকবার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে মৌখিক ও লিখিতভাবে আমাদের অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করি।

লিখিত বক্তব্যে আরও জানানো হয়, পূর্বের অনুযায়ী চার উপজেলায় স্ব স্ব ইজিবাইকগুলি চলতে হবে এবং পৌরসভার ইজিবাইকগুলো পৌরসভার ভিতরে চলতে হবে। ২০১৮ সালের আইন বাস্তবায়ন করা না হলে লোকাল গাড়ীগুলি সম্পূর্ণভাবে আগামী ২৯ তারিখ থেকে বন্ধ রাখা হবে।

এসময় সংগঠনটি ৫ দফা দাবি পেশ করেন। দাবিগুলো হলো-

১. অবৈধ যানের রেজিষ্ট্রেশন দেয়া হয় না, এরা মহাসড়ক এবং আঞ্চলিক মহাসড়ক ব্যবহার করছে। ঐ একই সড়কে বৈধ যান ও কম গতি এবং বেশি গতির যান মিশ্রিত ভাবে চলাচল করার কারণে সড়কে দুর্ঘটনা গুলো ঘটছে।

২. ইঞ্জিন নাই বলে ওই সকল অবৈধ যানের রেজিষ্ট্রেশন দেয়া হয় না। ওই সকল অবৈধ যান সড়ক ও মহাসড়ক ব্যাবহার করে কিন্তু তারা সরকারের কোন ভ্যাট ট্যাক্স দেয় না। সড়ক ব্যবহার করতে হলে তাদের ড্রইভিং লাইসেন্স থাকতে হবে।

৩. যে সকল কল কারখানা প্রতি বছর যে পরিমান অবৈধ যান বাহন তৈরি করে এবং মেরামত করে ওই সকল কল কারখানা গুলো সিলগালা করে বন্ধ করে দিতে হবে।

৪. অবৈধ যানবাহন গুলি রাস্তার যত্রতত্র দড়িয়ে যাত্রি ওঠা নামা করায় এবং ভাড়া আদায় করে, ফলে রাস্তায় কঠিন যানযট সৃস্টি হয়। ট্রাফিক আইন কানুন সম্পর্কে এদের কোন ধারনা নেই। মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়ক ব্যাবহার করতে হলে তাদের বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকতে হবে।

৫. দেশে যে পরিমান বিদ্যুৎ ঘাটতি হয় তার একটা বড় কারন এই অবৈধ যানবাহন ও ইজিবাইক, পাখি ভ্যান এর চার্জিং পয়েন্ট ও গ্যারেজ। ওই চার্জিং পয়েন্ট ও গ্যারেজ গুলো বন্ধ করা না গেলে দেশের বিদ্যুৎ ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব নয়।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি হাসান ইমাম বকুল, সহ-সভাপতি আবু বক্কর আলী, সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মঈনউদ্দিন, যুগ্ন সম্পাদক সোহেল রঞ্জু, কোষাধ্যক্ষ উসমান আলী, চুয়াডাঙ্গা বাস মিনিবাস ও শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এম জেনারেল ইসলাম, সড়ক সম্পাদক আমির খসরু প্রমুখ।