ইজতেমা মাঠে সংঘর্ষ, ৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন

Posted on December 18, 2024

নিজস্ব প্রতিবেদক : টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমার মাঠ দখল নিয়ে জুবায়ের ও সাদপন্থীদের মধ্যে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনায় টঙ্গীতে ৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে বিজিবি জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

এর আগে, টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দান দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ৩ জন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হন অন্তত অর্ধশতাধিক মানুষ।

গাজীপুর মহানগরের টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিব ইস্কান্দার নিশ্চিত বলেছেন, ইজতেমায় মাঠ দখলকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হয়েছে। এতে ঘটনাস্থলেই একজন ও অপরজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। এ ঘটনায় অন্তত অর্ধশত আহত হয়েছেন। তাদের টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ কাজ করছে।

সংঘর্ষে নিহতরা হলেন- কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া থানার এগারসিন্দু এলাকার বাচ্চু মিয়া (৭০) ও ঢাকার দক্ষিণখানের বেড়াইদ এলাকার বেলাল (৬০)। এদিকে নিহত আরেকজনের নাম পরিচয় এখনো জানা যায়নি।

আহতরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাসিন্দা আব্দুর রউফ (৫৫), ময়মনসিংহের মজিবুর রহমান (৫৮), আব্দুল হান্নান (৬০), টঙ্গীর জহুরুল ইসলাম (৩৮), গোপালগঞ্জের আরিফ (৩৪), সাভারের ফয়সাল (২৮), নরসিংদীর তরিকুল (৪২), চট্টগ্রামের সাহেদ (৪৪), নরসিংদীর উকিল মিয়া (৫৮), টঙ্গীর পান্ত (৫৫), খোরশেদ আলম (৫০), কেরানীগঞ্জের বেলাল (৩৪), নারায়ণগঞ্জের আনোয়ার (৫০), আবু বক্কর (৫৯), আরিফুল ইসলাম (৫০), সাভারের আনোয়ার (২৬), নোয়াখালীর আনোয়ার (৭৬), সাতক্ষীরার ফোরকান আহমেদ (৩৫)। তাৎক্ষণিকভাবে আহত বাকিদের নাম জানা যায়নি।

স্থানীয়রা জানান, রাত ৩টার দিকে সাদপন্থীরা তুরাগ নদীর পশ্চিম তীর থেকে কামার পাড়া ব্রিজসহ বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ করতে থাকে। এ সময় ময়দানের ভেতর থেকে জুবায়েরপন্থীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। জবাবের সাদপন্থীরাও পাল্টা হামলা চালায়। একপর্যায়ে সাদপন্থীরা ময়দানে প্রবেশ করলে উভয়পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে বহু হতাহত হয়।

সাদপন্থীদের প্রভাবশালী মুরুব্বি মুয়াজ বিন নূর এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, আমরা এখন ইজতেমা মাঠের নিয়ন্ত্রণে আছি। জুবায়েরপন্থীদের আক্রমণে আমাদের তিন ভাই শহীদ হয়েছেন। ময়দানে অনেক জুবায়েরপন্থী চাকু ও ছোড়াসহ আটক হয়েছে বলে নূরের দাবি।

এ দিকে ইজতেমা ময়দানে সংঘর্ষের ফলে হতাহতদের টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।

টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সিনিয়র ব্রাদার হাফিজুল ইসলাম নিহত ও আহতদের খবর নিশ্চিত করে বলেন, ‘এ পর্যন্ত তিনজন নিহত ও অসংখ্য লোক আহত হয়েছেন। আহতরা হাসপাতালে আসছে।’

টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সিনিয়র ব্রাদার হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘নিহত ও আহতদের সংবাদ নিশ্চিত করে বলেন, টঙ্গীতে দুপক্ষের সংঘর্ষে হতাহতদের হাসপাতালে আনা হচ্ছে।’