শুধু বড় বড় কথায় ডেঙ্গুর সংক্রমণ কমবে না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

Posted on October 17, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধের দায়িত্ব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের। তারা সঠিক দায়িত্ব পালন করলে ডেঙ্গুর এ ভয়াবহ বিস্তার হতো না। তিনি বলেন, সারা দেশে যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে শুধু বড় বড় কথায় ডেঙ্গুর সংক্রমণ কমবে না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব হচ্ছে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। আমরা সেটা করছি। ডেঙ্গু নিধনে বছরজুড়ে কার্যক্রম হাতে নিতে হবে।

মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে হলে মশা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আর মশা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের মেয়রদের একটা লম্বা অর্থাৎ সারা বছরের পরিকল্পনা থাকতে হবে। খালি আমরা বড় বড় কথা বললে তো আর ডেঙ্গু কমবে না। ডেঙ্গুর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। যে পদক্ষেপগুলো আমরা দেখছি এখন তা পর্যাপ্ত নয়। এটা সত্যি কথা এটা পর্যাপ্ত নয়। যদি পর্যাপ্তই থাকতো তাহলে… এখন পর্যন্ত আমাদের আড়াই লাখ লোক আক্রান্ত হয়েছে, এ পর্যন্ত প্রায় এক হাজার একশো লোক মৃত্যুবরণ করেছে। এটা তো একটা অনেক বড় সংখ্যা। আমরা খুবই দুঃখিত।

ডেঙ্গুর চিকিৎসার বিষয়ে ডাক্তার ও নার্সদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের যথেষ্ট পরিমাণে বেড আছে। শুধু ঢাকায় নয় সব জেলায় আমরা আলাদাভাবে বেড তৈরি করেছি। উপজেলায়ও আমরা আলাদাভাবে বেড তৈরি করেছি।

মন্ত্রী বলেন, সব জায়গায় যাতে যথেষ্ট পরিমাণে ফ্লুইড বা স্যালাইন থাকে সেই ব্যবস্থা করেছি। নিজেরাও স্যালাইন আমদানি করেছি, প্রাইভেট সেক্টরকেও আমদানি করার অনুমোদন আমরা দিয়েছি। যাতে স্যালাইনের ঘাটতি না হয়। প্রাইভেটরাও এখন প্রায় ৫০ লাখ স্যালাইন তৈরি করে। এখন আর স্যালাইনের কোন ঘাটতি নেই।

ডেঙ্গু আক্রান্তদের সময় মতো পরীক্ষা করার অনুরোধ জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্তরা তাড়াতাড়ি হাসপাতালে আসলে, চিকিৎসা নিলে ভালো হয়ে যাবে। দেরি করে আসলে তখন অনেক সময় করার কিছু থাকে না।

মানিকগঞ্জ জেলার উদাহরণ দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এক জেলার হাসপাতালেই ৫০০ রোগী। দেশে এক হাজার ১০০ মানুষ এ পর্যন্ত মারা গেছে, আড়াই লাখ মানুষ আক্রান্ত।’ যারা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদেরকে দ্রুত হাসপাতালে আসার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘দেরিতে আসলে কিছু করার থাকে না।’

জাহিদ মালেক বলেন, ‘লন্ডন ভিত্তিক এমআরসিপি পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা কোর্সের ফাইনাল পার্ট এখন থেকে বাংলাদেশেই দেওয়া যাবে। প্রথম ও দ্বিতীয় পার্ট দেশেই চলমান। শুধু তৃতীয় পার্ট দেওয়ার জন্য প্রতিবেশী দেশসহ অন্যান্য দেশে যেতে হতো। এতে যাতায়াত ভোগান্তিসহ অনেক অর্থ ব্যয় হতো, সেই ভোগান্তি কমে আসবে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবছর শতাধিক শিক্ষার্থী এমআরসিপি দিতে বিদেশে যান। প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী এমআরসিপি ডিগ্রি নেওয়ার অপেক্ষায় আছেন।’

তিনি আরও বলেন, যেখানে গিয়ে বলা দরকার পদক্ষেপ নেওয়া দরকার আমাদের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সেখানে গিয়ে বলবেন। তারা (স্থানীয় সরকার বিভাগ) বাৎসরিক কী পরিকল্পনা করেছে, এখন সারা বছরের পরিকল্পনা দরকার। শুধু ঢাকায় নয় সারাদেশে পরিকল্পনা দরকার। তবেই ডেঙ্গু কমবে, তাছাড়া ডেঙ্গু কমবে না।