স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রী ও পরকীয়া প্রেমিকের মৃত্যুদণ্ড

Posted on November 17, 2024

ময়মনসিংহ ব্যুরো: ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে স্বামী হজরত আলীকে হত্যার দায়ে স্ত্রী সাবিনা খাতুন ও তার প্রেমিক লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেইসাথে তাদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।

রোববার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৫ম আদালতের বিচারক জজ আলী মনসুর এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- জেলার হালুয়াঘাট উপজেলার গোরকপুর গ্রামের আমান উল্লাহর ছেলে মো. লিয়াকত আলী (৩৬) ও তার পরকীয়া প্রেমিকা একই গ্রামের কাজিম উদ্দিনের মেয়ে মোছা. সাবিনা খাতুন (৩৩)।

আদালত পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) পিএসএম মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবিনা খাতুন একই এলাকার লিয়াকত আলীর ঢাকার বাসায় থেকে গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন। সেই থেকে লিয়াকত তার স্ত্রীর অগোচরে সাবিনা খাতুনের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরে করোনার সময় ২০২১ সালে লিয়াকত সপরিবারে ঢাকা থেকে নিজ বাড়ি হালুয়াঘাটের গোরকপুরে ফিরে আসেন। সাবিনা খাতুনও ঢাকা থেকে ফিরে তার বাবার বাড়িতে বসবাস করতে থাকেন।

এদিকে একই গ্রামের হযরত আলীর প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের পর একাই ছিলেন। পরে সামাজিক আলোচনার মাধ্যমে হযরত আলীর সঙ্গে বিয়ে হয় সাবিনা খাতুনের। সংসার করার সময় প্রায়ই লিয়াকত আলী হযরত আলীর বাড়িতে যাতায়াত করে সাবিনা খাতুনের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক চালিয়ে যেতে থাকেন। ঘটনার মাসখানেক আগে হযরত আলী তার ঘরে সাবিনা খাতুন ও লিয়াকত আলীকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পেয়ে উভয়কে গালমন্দ করেন। এ অবস্থায় অনৈতিক সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ার পথে আসামি লিয়াকত ও সাবিনা খাতুন হযরত আলীকে বাধা মনে করে তারা হযরত আলীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

২০২১ সালের ২৯ আগস্ট হজরত আলী হালুয়াঘাট থেকে শেরপুরের নালিতাবাড়ি যাওয়ার পথে সাবিনা খাতুন মোবাইলে হজরত আলীর অবস্থান জেনে নিয়ে পরকীয়া প্রেমিক জানালে লিয়াকত আলী কৌশলে হজরত আলীকে হালুয়াঘাট পশ্চিম কুতিকুড়া আঁতলা বিলের সামনে নিয়ে যায়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে লিয়াকত আলী হজরত আলীর গলায় থাকা গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। লিয়াকত আলী হত্যার বিষয়টি মোবাইলে সাবিনা খাতুনকে জানায়। পরে দুজনে মিলে লিয়াকত আলীর আবাদি জমিতে হজরত আলীর মরদেহ পুঁতে রাখে।

আদালতের পরিদর্শক পিএসএম মোস্তাছিনুর রহমান আরও বলেন, পরে নিহতের ভাই আবু নাসের বাদী হয়ে হালুয়াঘাট থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ দীর্ঘ তদন্ত শেষে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালত সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ, যুক্তি-তর্ক শেষে অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।