বেনাপোলে চিরনিদ্রায় শায়িত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত আবদুল্লাহ

Posted on November 15, 2024

মনির হোসেন, বেনাপোল প্রতিনিধি : নানা-নানীর কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত আবদুল্লাহ (২৩)। মাথায় গুলিবিদ্ধ গুলিবিদ্ধ আবদুল্লাহ তিন মাস পর বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকালে ঢাকা সিএমএইচে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। নিহত আব্দুল্লাহ এর দাফন শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকাল ১১ টার দিকে সম্পন্ন হয়।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০ টায় যশোরের শার্শা উপজেলার বেনাপোল বলফিল্ড মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় দলমত নির্বিশেষে বিভিন্ন শ্রেনি পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এ সময় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ গার্ড অফ অনার প্রদান করা হয়। পরে যশোরের বেনাপোলে তার নানা বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে নানা-নানীর কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হন আব্দুল্লাহ। জানাজায় ইমামতি করেন মুফতি মাওলানা সায়েদুল বাসার।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী নাজিব হাসান, শার্শা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আলহাজ্ব খায়রুজ্জামান মধু, বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামির কেন্দ্রীয় কমিটির কর্ম পরিষদের সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান, জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান, থানা আমির রেজাউল ইসলাম, থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাসান জহির, বেনাপোল পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের ভারত, বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামসুর রহমান ও সাবেক সভাপতি মফিজুর রহমান সজন প্রমুখ উপস্থিত ছিলন।

শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে আব্দুল্লাহ এর মরদেহ ঢাকা থেকে নৌ বাহিনীর একটি এ্যাম্বুলেন্সে করে গ্রামে পৌঁছালে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। আত্মীয় স্বজনদের আহাজারি আর শোকে এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে।

নিহত আবদুলাহর বাবা আব্দুল জব্বার পেশায় একজন শ্রমিক। অর্থাভাবে কোনো ছেলে-মেয়েকে লেখাপড়া করাতে পারেননি তিনি। আব্দুল্লাহ ছোট থেকেই ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। চার ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন আব্দুল্লাহ। তাকে ঘিরে আকাশসম স্বপ্ন ছিল দরিদ্র বাবা-মা ও ভাই-বোনদের। তাকে হারিয়ে মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে পরিবারটির।

বাবার সহযোগিতায় আর নিজ চেষ্টায় লেখাপড়া করে এতদুর পর্যন্ত গিয়েছিলেন তিনি। মেধা ও আচরণের কারণে গ্রামে সবার প্রিয় ছিলেন আব্দুল্লাহ। তিনি ঢাকায় বোনের বাসায় থেকে লেখাপড়া করতেন। তিনি রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। আন্দোলনের শুরু থেকেই আবদুল্লাহ সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন।