আদালতে একজনের পরিবর্তে অন্যজনের সাক্ষ্য: ১ জনকে কারাগারে প্রেরণ

Posted on November 5, 2024

মনির হোসেন, বেনাপোল প্রতিনিধি: মারামারির মামলায় একজনের পরিবর্তে অন্যজন সাক্ষী দেয়ায় মনিরুজ্জামান নামে এক যুবক আটক হয়েছেন। সোমবার (৪ নভেম্বর) অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট লস্কার সোহেল রানা বিষয়টি বুঝতে পেরে তাকে আটকের আদেশ দেন। মনিরুজ্জামান বেনাপোল পোট থানার পুটখালী গ্রামের কাদের আলী সরদারের ছেলে।

পরর্তীতে আটক মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে অতিরিক্তি চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার মোজাফ্ফর হোসেন বাদী হয়ে সদর আমলী আদালতে মামলা করেছেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া অভিযোগটি আমলে নিয়ে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

সূত্রে জানা গেছে, পুটখালী গ্রামের শরিফুল ইসলামের স্ত্রীর সেলিনা বেগম একটি মারামারি মামলার বাদী। সোমবার ছিল এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন। এদিন সেলিনা বাড়ি থেকে যশোর আদালতে আসার সময় তার জামাতা মনিরুজ্জামানকে সাথে নিয়ে আসেন। মামলার বাদী সেলিনা বেগম অতিরিক্তি দায়রা জজ আদালতের এপিপি মাহাবুবুর রহমানের কাছে হাজিরা দেন। হাজিরা মতে মামলার বাদী সেলিনা বেগমকে সাক্ষী দেয়ার জন্য ডাকা হয়। বাদী সেলিনা বেগম সাক্ষী দেয়ার আগে আসামিদের সাথে মিমাংসা হয়ে গেছে বলে আর মামলা চালাতে ইচ্ছুক নন জানিয়ে বিচারকের কাছে মৌখিকভাবে আবেদন করেন। বিচারক মামলার বাদী সেলিনা বেগমের সাক্ষ্য গ্রহণ করে আরও একজন সাক্ষীর সাক্ষ্য নিবেন বলে জানান।

সেলিনা বেগম এপিপি মাহাবুবুর রহমানকে সাক্ষী উপস্থিত আছে বলে জানান। এপিপি মাহাবুবুর রহমান তখন চার্জশিটের তালিকাভুক্ত সাক্ষী জাকিরের হাজিরা জমা দেন আদালতে। ডাকমতে এজলাসে আসেন বাদীর জামাতা মনিরুজ্জামান। শপথ নিয়ে জাকিরের নামে মনিরুজ্জামান সাক্ষ্য দিতে শুরু করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার রেকর্ড করা সাক্ষীর বক্তব্যে অমিল পাওয়ায় বিচারকের সন্দেহ হয়। একপর্যায়ে বিচারক সাক্ষী ফিরোজের মোবাইল নম্বর জিজ্ঞাসা করেন। এ সময় মনিরুজ্জামানের দেয়া মোবাইল নম্বর তদন্তকারী কর্মকর্তার জবনবন্দির মোবাইল নম্বরের সাথে মিল না পেয়ে সন্দেহ আরও বেড়ে যায় বিচারকের। একপর্যায়ে মনিরুজ্জামান শিকার করেন তিনি ফিরোজের বদলী সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিচ্ছেন। এ সময় বিচারক এজলাসে উপস্থিত পুলিশকে নির্দেশ দেন মনিরুজ্জামানকে আটকের। এ ঘটনায় সদর আমলী আদালতে মামলা করেন পেশকার মোজাফ্ফর হোসেন। বিচারক অভিযোগ আমলে নিয়ে আটক আসামি মনিরুজ্জামানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের এপিপি মাহাবুবুর রহমান জানিয়েছেন, ‘মামলার বাদী সেলিনা বেগম একাই সাক্ষী দিবেন বলে হাজিরা দিয়েছিলেন। বাদীর মৌখিক আবেদনে মামলাটি মিমাংসা হয়ে গেছে বলে বিচারক আর একজন সাক্ষীর বক্তব্য নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ সময় বাদী সেলিনা জানান সাক্ষী উপস্থিত আছে। তখন আমি চার্জশিটে উল্লেখিত সাক্ষী ফিরোজের হাজিরা জমা দি। সাক্ষ্য দেয়ার সময় বিচারক ভুয়া সাক্ষী বুঝতে পেরে তাকে আটকের নির্দেশ দিয়েছিলেন’