স্পেনে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা, বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯৫

Posted on October 31, 2024

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : স্পেনের পূর্বাঞ্চলীয় ভ্যালেন্সিয়া প্রদেশ এবং আশপাশের অঞ্চলে ভারী বৃষ্টির ফলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এখনো বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। ভয়াবহ এ বন্যায় বহু রাস্তাঘাট, সেতু, ভবন এবং গাড়ি ভেসে গেছে। দুর্ঘটনা এড়াতে অনেক মানুষকে আশ্রয় নিতে হয়েছে গাছ ও ছাদের ওপরে।

বন্যায় হতাহতদের স্মরণে স্প্যানিশ প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন তিনি। ভুক্তভোগীদের উদ্দেশে এক ভাষণে সানচেজ বলেন, গোটা স্পেন আপনাদের সঙ্গে আছে। আমরা আপনাদের ছেড়ে যাবো না।

তবে বন্যায় দুর্যোগ সতর্কতা জারিতে দেরি হওয়ায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে সরকার। স্থানীয় নাগরিকরা অভিযোগ করেছেন, বহু এলাকা প্লাবিত হয়ে যাওয়ার পরও কর্তৃপক্ষ সঠিক সময়ে সতর্কতা জারি করতে পারেনি। এর ফলে অনেক মানুষের জীবন হুমকির মধ্যে পড়ে।

দেশটির জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা অ্যামেট জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) মাত্র আট ঘণ্টায় এক বছরের সমান বৃষ্টিপাত হয়েছিল ভ্যালেন্সিয়ার কাছাকাছি চিভা শহরে। এটি সেখানকার মানুষদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলে দেয়। আকস্মিক পানির প্রবাহ রাস্তা ও হাইওয়েগুলোকে নদীতে রূপান্তরিত করে, যার ফলে বিপদে পড়েন বহু মানুষ।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো থেকে বন্যার্তদের উদ্ধার করতে প্রায় এক হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, অনেকে এখনো দুর্গম এলাকায় আটকা পড়ে আছেন। কারণ বন্যার পানিতে সড়কগুলো ডুবে যাওয়ায় এবং বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

স্পেনের উদ্ধার অভিযানে সমন্বয় করতে কপার্নিকাস স্যাটেলাইট ব্যবস্থা চালু করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। অন্যান্য প্রতিবেশী দেশও সহায়তার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

জানা গেছে, বন্যায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে ভ্যালেন্সিয়া। সেখানে অন্তত ৯২ জন মারা গেছেন। এছাড়া, কাস্তিয়া-লা মানচাতে দুইজন এবং মালাগায় একজনের মৃত্যু হয়েছে।

এই বন্যাকে স্পেনের ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগে ১৯৭৩ সালে এ ধরনের ভয়াবহ বন্যায় দেশটিতে প্রায় ১৫০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। সূত্র: বিবিসি