নরসিংদীতে হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

Posted on October 30, 2024

সাইফুল ইসলাম রুদ্র, নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি: নরসিংদীর রায়পুরায় পূর্ব বিরোধের জের ধরে রাবেয়া খাতুন (৫৩) নামে এক নারীকে হত্যা ও হত্যা পরবর্তী ধর্ষণের ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নরসিংদী।

বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে নরসিংদী পিবিআই কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই তথ্য জানান, পিবিআই নরসিংদীর পুলিশ সুপার মো. এনায়েত হোসেন মান্নান।

এর আগে, ২৫ থেকে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে পিবিআই।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, রায়পুরার আদিয়াবাদ পিপিনগরের নাসির উদ্দিনের ছেলে মো. সুমন(২০), একই উপজেলার বাহেরচর পশ্চিম পাড়ার বকুল মিয়ার ছেলে জীবন (১৯) ও আব্দুর রহিমের ছেলে স্বপন (৫৫)।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর সকালে নিজ ঘরের মেঝে থেকে গলায় কাপড় পেঁচানো ও উলঙ্গ অবস্থায় রাবেয়া খাতুনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় ওই ঘরের পশ্চিম পাশে দুইটি সিঁধ কাটা ছিল। ঘটনার পরদিন নিহতের ছোট ভাই আমির হামজা বাদী হয়ে রায়পুরা থানায় মামলা করেন। এরপর ক্লুলেস এই মামলাটির দীর্ঘ তদন্তে কোন অগ্রগতি না হওয়ায় চলতি বছর ৩১ মার্চ মামলাটি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের আদেশক্রমে পিবিআইকে তদন্তভার দেয়া হয়। মামলাটি পিবিআইতে আসার পর তদন্তের এক পর্যায়ে চলতি মাসের ২৫ তারিখে নরসিংদী রেলস্টেশন থেকে সুমন (২০)কে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্য মতে এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট জীবন (১৯) নামে আরো একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তারা ২৬ অক্টোবর নরসিংদী আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। তাদের দেয়া তথ্যে ওই ঘটনায় সম্পৃক্ত স্বপন (৫৫) নামে আরো একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্য মতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ও সিঁধ কাটার শাবল এবং ছেনি উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সুপার (এসপি) আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীতে স্বীকার করে যে, পূর্ব বিরোধের জের ধরে পরিকল্পিতভাবে গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত সুমন, স্বপন, জীবন ও কামাল শাবল এবং ছেনি দিয়ে সিঁধ কেটে কামাল ও সুমন ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে। পরে তারা দুইজন ঘরে ঢুকে দরজা খুলে দিলে স্বপন ও জীবন ঘরে ঢুকে। এরপর, তারা ৪ জন মিলে ওই নারীকে হত্যা করে এবং হত্যার পর সুমন তাকে ধর্ষণ করে।

এই ঘটনায় ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য নিহতের ভ্যাজাইনাল সোয়াব সংগ্রহ করে ডিএনএ পরীক্ষা করা হলে নিহতের শরীরে একজন পুরষের বীর্যের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এই ঘটনায় কামাল নামে একজন আসামী পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে বলে জানান এসপি।