রূপালী ব্যাংকের এমডি নিয়োগে ষড়যন্ত্রের শিকার সিংগাইরের আঃ রহিম

Posted on October 24, 2024

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর কবিতা ও ব্যাংকিং বিষয়ক প্রবন্ধ লিখে প্রসংসিত ও সমাদৃত হয়েছেন রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আঃ রহিম। এরই মধ্যে প্রজ্ঞাপন প্রকাশের পর ইতিপূর্বে প্রকাশিত কবিতা ও প্রবন্ধে অপ্রাসঙ্গিক প্রচ্ছদের কারণে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংক পিএলসি'র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও পদে নিয়োগ ঝুলে আছে। মোঃ আঃ রহিম মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার ধল্লা ইউনিয়নের জায়গীর গ্রামের মোঃ ইয়াছিন শেখের বড় ছেলে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোঃ আঃ রহিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ে বিএসসি (সম্মান) এমএসসি (১ম শ্রেণি) সম্পন্ন করেন। তিনি ১৯৯৮ সালে রূপালী ব্যাংকে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হিসাবে যোগদান করেন। পরে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন শেষে ২০২১ সালে ব্যাংকটির উপব্যবস্থাপপনা পরিচালক (ডিএমডি) হিসাবে পদোন্নতি পান। পরে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে জিএম হিসেবে এবং বেসিক ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকে সুনামের সঙ্গে ডিএমডি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সহ তার পরিবারের কেউই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। তবে সততা এবং নৈতিকতায়তায় তিনি আপোষহীন। তিনি ব্যাংকিং ক্যারিয়ারের পাশাপাশি ব্যাংকিং গবেষণাকর্ম এবং কাব্য চর্চা করেন।

এদিকে গত সোমবার (২১ অক্টোবর) একযোগে ১০টি সরকারী ও বিশেষায়িত ব্যাংকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও নিয়োগে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। সেই নির্দেশনার আলোকে রাষ্ট্রয়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণীসহ ৯ ব্যাংকের এমডিরা ইতোমধ্যে যোগদান করেছেন। কিন্তু এডিটের মাধ্যমে বিকৃত এবং ভিত্তিহীন কবিতার প্রচ্ছদকে ইস্যু করে রূপালী ব্যাংকের এমডি ও সিইও পদে মোঃ আঃ রহিমের নিয়োগ ঝুলে গেছে। এদিকে উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনায় রূপালী ব্যাংকের এমডি ও সিইও নিয়োগে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের প্রস্তুত করা চিঠিও আর পাঠানো হয়নি। যদিও ‘মাসিক জনপ্রশাসনে’ প্রকাশিত তাঁর সেই ‘নিঃশেষে সৃষ্টি’, 'সময় কর্মবীর' এবং ‘বৃক্ষের শিক্ষা’ কবিতার প্রচ্ছদ বিকৃতির বিষয়ে ভুল স্বীকার করেছেন সাময়িকীটির সম্পাদক এবং প্রকাশক নঈম মাশরেকী।

এ বিষয়ে মোঃ আঃ রহিম বলেন, সময় ‘বৃক্ষের শিক্ষা, নিঃশেষে সৃষ্টি’সহ আমার লেখা বেশকিছু কবিতা প্রকাশিত রয়েছে। তবে সেগুলো কোনো ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে নয়। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা তথ্য ছাড়ানো হচ্ছে। শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনাকে নিয়ে কবিতা ও প্রবন্ধ লিখে বই প্রকাশ করার যে তথ্য ছাড়ানো হয়েছে সেগুলো সঠিক নয়। শেখ মুজিব এবং শেখ হাসিনাকে নিয়ে দুটি কবিতা লেখার বিষয়ে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে সে দুটি কবিতা আমার মূল বইয়েও রয়েছে। প্রকাশিত মূল বইয়ে কোথাও ওই দুটি কবিতাতে শেখ মুজিব এবং শেখ হাসিনার ছবি নেই এবং তাদেরকে নিয়ে একটি বাক্যও ব্যবহৃত নেই। এমনকি তাদেরকে ইঙ্গিত করেও কোন শব্দ নেই। তাঁর লেখা কবিতা ও বইয়ে এডিট করে শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ছবি বসানো হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। এটা নিয়ে আমি প্রতিবাদ করেছিলাম।

তিনি আরো বলেন, তাঁর দীর্ঘ ২৬ বছরের ক্যারিয়ারে আওয়ামী পন্থীদের দ্বারা সুবিধাতো দূরের কথা বরং বিভিন্ন সময়ে বঞ্চনার শিকার হয়েছি। আমার যোগ্যতা, কর্মদক্ষতা এবং শক্তিশালী নৈতিকতা সহ্য করতে না পেরে একটি স্বার্থান্বেষী মহল এসব রটনা ছড়াচ্ছেন। একটা ঠুনকো বিষয়ে এমডি পদে নিয়োগ ঝুলিয়ে রাখা মেধাবী এবং যোগ্যদের জন্য অসম্মানের। এ নিয়োগ বিলম্বে আমি বিব্রত। এ বিষয়ে আমি সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করছি।

উল্লেখ্য, শেখ হাসিনা সরকারের সময় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের এমডিদের চুক্তির বাকি মেয়াদ বাতিল করতে গত ১৯ সেপ্টেম্বর ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যানদের নির্দেশ দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। তারপর ব্যাংকগুলোর এমডি ও সিইও পদ শূন্য হয়। এরপর রাষ্ট্র মালিকানাধীন ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংক ও চারটি বিশেষায়িত ব্যাংক মিলিয়ে ১০টি ব্যাংকে নতুন এমডি ও সিইও নিয়োগের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করে সুপারিশ পাঠায় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। এই সুপারিশ গত ১৬ অক্টোবর অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং ২০ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস অনুমোদন করেন। চূড়ান্ত তালিকায় মোঃ আঃ রহিমের নামও ছিল।